Coal Scam: কয়লাকাণ্ডে তলব জ্ঞানবন্ত-সহ ৮ আইপিএসকে, কেন তাঁরা ইডির স্ক্যানারে? রইল বিস্তারিত…
ED: ২০০৭ সালের আইপিএস ব্যাচের শ্যাম সিং বর্তমানে সিভিল ডিফেন্সে রয়েছেন। তবে একসময় তিনি বাঁকুড়ার পুলিশসুপার, ডিআইজি মেদিনীপুর রেঞ্জে ছিলেন।
কলকাতা: একদিকে যখন গরু পাচার মামলায় রাজ্যজুড়ে হইচই ফেলে দিয়েছে সিবিআই, একইদিনে আরেক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা জানান দিল, কয়লাকাণ্ডের তদন্তেও গতি কিন্তু বাড়ছে। বৃহস্পতিবার গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। এদিনই আবার কয়লা পাচার মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আট আইপিএস আধিকারিককে তলব করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি। আগামী সপ্তাহ বাদ দিয়ে তার পরের সপ্তাহেই ডাকা হয়েছে তাঁদের।
২১ অগস্ট থেকে ৩১ অগস্টের মধ্যে ডাকা হয়েছে এডিজি এসটিএফ জ্ঞানবন্ত সিং, এডিজি আইবি রাজীব মিশ্র, ডিআইজি ট্র্যাফিক ডিভিশন (রাজ্য পুলিশ) সুকেশকুমার জৈন, ডিআইজি স্টেট সিভিল ডিফেন্স শ্যাম সিংকে। সঙ্গে রয়েছেন চার সুপারিনটেনডেন্ট পদের আধিকারিক। পুলিশসুপার (পুরুলিয়া) এস সেলভামুরুগন, রাজ্যের দুর্নীতি দমন শাখার এসপি কোটেশ্বর রাও, ওয়েস্ট বেঙ্গল পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের এসপি তথাগত বসু, সুন্দরবন পুলিশ জেলার এসপি ভাস্কর মুখোপাধ্যায়।
জ্ঞানবন্ত সিং এর আগেও দিল্লিতে ইডির দফতরে হাজিরা দিয়েছেন। ইডি সূত্রের খবর, এ রাজ্যে যে সময় কয়লা পাচার চক্র ফুলে ফেঁপে উঠেছিল বলে অভিযোগ, সে সময় রাজ্যের এডিজি আইনশৃঙ্খলা পদে ছিলেন এই জ্ঞানবন্ত। তার আগে পশ্চিমাঞ্চলের আইজিও ছিলেন তিনি। যে পশ্চিমাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে এই কয়লার চোরা কারবার চলেছে বলেও জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। সূত্রের খবর, কয়লাকাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত অনুপ মাজি ওরফে লালাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই জ্ঞানবন্তের নাম জানতে পারে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
২০০৭ সালের আইপিএস ব্যাচের শ্যাম সিং বর্তমানে সিভিল ডিফেন্সে রয়েছেন। তবে একসময় তিনি বাঁকুড়ার পুলিশসুপার, ডিআইজি মেদিনীপুর রেঞ্জে ছিলেন। রাজীব মিশ্র ১৯৯৬ সালের আইপিএস ব্যাচ। একসময় তিনি আইজি দক্ষিণবঙ্গ ছিলেন। জয়প্রকাশ নাড্ডার কনভয়ে হামলার সময় তাঁর ভূমিকা প্রশ্নের মুখে পড়েছিল। তথাগত বসু ২০১৯ সালের আইপিএস ব্যাচ। হুগলি জেলায় প্রথমে পোস্টিং ছিলেন। পরে এসএস সিআইডি। ২০০৫ সালের আইপিএস ব্যাচ সুকেশ জৈন। আসানসোল দুর্গাপুর কমিশনারেটের পুলিশ কমিশনার ছিলেন তিনি। পরে ডিআইজি সাইবার ছিলেন। ভাস্কর মুখোপাধ্যায় ২০০৯ সালের আইপিএস ব্যাচ। উত্তর ২৪ পরগনার অ্যাডিশনাল এসপি ছিলেন। পরে পুলিশসুপার হন এই জেলারই। পুলিশসুপার ছিলেন পূর্ব বর্ধমানেরও। এস সেলভামুরুগন ২০১০ সালের আইপিএস ব্যাচ। পরের বছরই পাশ করেন কোটেশ্বর রাও।
রাজ্যের এই আট শীর্ষ আইপিএসকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ইডি আধিকারিকরা মূলত জানতে চান এই অফিসাররা কয়লা পাচার মামলা সংক্রান্ত কোনও তথ্য জানেন কি না। কারণ, কয়লা-বেল্টের বিভিন্ন জায়গায় উচ্চ পদে ছিলেন তাঁরা। ইডির দাবি, কয়লা পাচারের সঙ্গে জড়িত ছিল বিভিন্ন স্থানীয় থানা। কয়লার গাড়ি নির্বিঘ্নে পৌঁছে দিতে লালা প্রোটেকশন মানি দিতেন বলেও তদন্তে জানতে পেরেছে তদন্তকারীরা। সেই টাকার অংশ উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিকদের কাছেও পৌঁছত বলে জানা গিয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি, পুলিশের মাথায় যাঁরা ছিলেন, তাঁরা চাইলে এই পাচার রুখতে পারতেন। কেন তা হয়নি, তা জানতেই রাজ্যের আট শীর্ষ আইপিএসকে এবার দিল্লিতে ডাক ইডির।