DA: ‘পুলিশ জখম হলে আদালত চুপ থাকবে না’, ডিএ আন্দোলনকারীদের হুঁশিয়ারি আদালতের
DA: পুলিশ জখম হলে আদালত চুপ থাকবে না, ৪৭ সরকারি কর্মচারির জামিন দিয়েও হুঁশিয়ারি আদালতের।
কলকাতা: ডিএ-র (DA) দাবিতে আন্দোলনে নামতেই গতকাল ধর্মতলা চত্বরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের কার্যত কণ্ডযুদ্ধ বেধে যায়। পুলিশের (Police) সঙ্গে ব্যাপক ধস্তাধস্তিতেও জড়াতে দেখা যায় একাধিক প্রবীণ আন্দোলনকারীকে। গ্রেফতার করা হয় ৪৭ জন আন্দোলনকারীকে। এর মধ্যে ৩৬ জন পুরুষ ও ১১ জন মহিলা ছিলেন। বৃহষ্পতিবার ধৃতদের ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হয়। এই মামলারই রায় শোনাতে গিয়ে বিস্ফোরক পর্যবেক্ষণ দিলেন এই মামলার বিচারক শৌণক মুখোপাধ্যায়। সকলের অন্তবর্তী জামিন দিলেও তাঁর গলায় শোনা গেল ‘সতর্কবার্তা’। প্রসঙ্গত, ডিএ-র দাবি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) কর্মীকে গ্রেফতারের ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক। এসএসসি মামলা (SSC Case) চলাকালীন বৃহস্পতিবার এজলাসেই এ মন্তব্য করতে দেখা যায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে (Justice Abhijit Ganguly)। এরপর ব্যাঙ্কশাল আদালতের বিচারকের এ মন্তব্য ঘিরে ফের নতুন করে চাপানউতর শুরু হয়েছে।
সূত্রের খবর, এদিন এজলাসে বিচারক শৌণক মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের মনে রাখতে হবে ভারতবর্ষ সমাজতান্ত্রিক, ধর্ম নিরপেক্ষ, সার্বভৌম, গণতান্ত্রিক দেশ। আমাদের প্রতিটা মানুষের অধিকার রয়েছে গণতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন করার। কিন্তু সেটা যেন শান্তিপূর্ন হয়। আমি কেস ডায়েরিতে দেখেছি বিধানসভা অভিযানে একাধিক পুলিশকর্মী গুরুতরভাবে জখম হয়েছেন। তাহলে বলা যায় এই অভিযান শান্তিপূর্ণ ছিল না। পুলিশ কর্মীরা রাজভবন, বিধানসভার সামনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন।” এরপরেই তিনি বলেন, “আমি বুঝতে পারছি সরকারি কর্মীদের মৌলিক অধিকার রয়েছে তাঁদের দাবি জানানোর। কিন্তু, মনে রাখতে হবে সরকারি কর্মীদের আইনের প্রতি সম্মান ও আরও ধৈর্য রাখার প্রয়োজন। তাঁরা কখনওই রাস্তায় অশান্তির পরিস্থিতি তৈরি করতে পারেন না।” তাঁর দাবি ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আর ঘটলে আদালত ‘চুপ’ করে বসে থাকবে না।
প্রসঙ্গত, বুধবার ডিএ-র দাবিতে একযোগে বিধানসভা অভিযানে নামে ২৭টি বাম সংগঠন। ধর্মতলা থেকে মিছিল এগোতেই বেধে যায় ধুন্ধুমার কাণ্ডে। আন্দোলনকারীদের দাপটে ভেঙে যায় পুলিশের দাপট। পুলিশকর্মীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন বহু সরকারি কর্মীরা। লাল ঝাণ্ডা হাতে পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতি করতে দেখা যায় বহু প্রবীণ সরকারি কর্মীকে। পুলিশের বিরুদ্ধে নির্বিচারে লাঠি চালানোর অভিযোগ উঠেছে। গ্রেফতার করা হয় ৪৭ জন আন্দোলনকারীকে।
অন্যদিকে এদিন এ মামলার শুনানিতে কার্যত হুঁশিয়ারির সুরে বিচারক বলেন, “সরকারি কর্মীরা ৪৮ ঘণ্টা পুলিশ হেফাজতে থাকলে চাকরি থেকে সাসপেন্ড করার কথা আইনে বলা আছে। আমি পরিষ্কারভাবে জানাতে চাই এই ধরনের ঘটনা আবারও ঘটলে এবং পুলিশ জখম হলে, শহরে অরাজকতা তৈরি হলে আদালত আর নমনীয় থাকবে না।”