Video: ‘বুড়ো-বুড়িকে ৬০০ টাকা ফিরিয়ে দিও…’, শহরে ফের টিকা ‘দুর্নীতির’ পর্দাফাঁস TV9 বাংলায়

এমন কী পরিস্থিতি হয়েছিল যে, বারাসত এক নম্বর ব্লকের স্বাস্থ্য আধিকারিক দফতরের নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এক নম্বর এয়ারপোর্টের বাসিন্দার বাড়ি গিয়ে টিকা দিলেন?

Video: 'বুড়ো-বুড়িকে ৬০০ টাকা ফিরিয়ে দিও...', শহরে ফের টিকা 'দুর্নীতির' পর্দাফাঁস TV9 বাংলায়
ভ্যাকসিনে 'দুর্নীতি', ধরল TV9 বাংলা
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 03, 2021 | 10:32 PM

সৌরভ দত্ত: আবারও টিকা ‘দুর্নীতির’ পর্দাফাঁস করল TV9 বাংলা। ছোট জাগুলিয়ার এক গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে ‘টিকা চুরি’ হয়ে পৌঁছে গিয়েছিল কলকাতা এয়ারপোর্টের কাছে। এমনকী, স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশিকাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে টাকার বিনিময়ে দুয়ারে টিকা দেওয়া হয়েছিল বলেও অভিযোগ। সেই সংক্রান্ত একটি অডিয়ো ভাইরাল হয়ে তা রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তাদের মুঠোফোনেও পৌঁছে যায়। এরপরই ঘটনার শিকড়ে পৌঁছে গোটা চক্র ফাঁস করে TV9 বাংলা।

ভাইরাল হয়ে যাওয়া সেই অডিয়ো ক্লিপ প্রকাশ্যে আসার পরই চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি করেন ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক। তাঁর দাবি, এক সমাজসেবীর অনুরোধে বাড়ি গিয়ে টিকা দিয়েছেন স্বাস্থ্য দফতরের চিকিৎসক। প্রশ্ন উঠছে, এমন কী পরিস্থিতি হয়েছিল যে, বারাসত এক নম্বর ব্লকের স্বাস্থ্য আধিকারিক দফতরের নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এক নম্বর এয়ারপোর্টের বাসিন্দার বাড়ি গিয়ে টিকা দিলেন? সূত্রের খবর, এক প্রৌঢ় বৃদ্ধ-বৃদ্ধাকে তিনি ভ্যাকসিন দিয়েছিলেন। যার বদলে প্রাথমিকভাবে টাকাও নেওয়া হয়। কিন্তু বিষয়টি ভাইরাল হতেই অভিযুক্ত স্বাস্থ্য আধিকারিক সেই সমাজকর্মীকে ফোন করে বলেন, টাকা ফেরত দিয়ে আসতে।

গোটা ঘটনায় অভিযুক্ত ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক হলেন ডা. সব্যসাচী রায়। সমাজকর্মীর নাম দিবাকর দাস। ভাইরাল অডিয়োতে চিকিৎসককে বলতে শোনা যায়, “ওই বুড়ো-বুড়িকে ৬০০ টাকা ফিরিয়ে দিও, আমি তোমাকে রিটার্ন করে দেব। বুড়ো-বুড়িকে ফোন করে বলে দিও, আপনারা কাউকে বলবেন না যে টাকা-পয়সা দিয়েছেন। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব, যত রাতই হোক টাকাটা ফিরিয়ে দিও। আর বলে দিও যে (টিকা) এখান থেকে নেয়নি, বারাসত ছোট জাগুলিয়ে থেকে নিয়েছে, এটুকু বলতে। তাহলে তুমিও বিপদে পড়বে না, আমিও বিপদে পড়ব না। এটা যদি পার পেয়ে যাই আর কোনও অসুবিধা থাকবে না।”

এই অডিয়ো ভাইরাল হওয়ার পরই একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। প্রথমত, বারাসত এক নম্বর ব্লকের হেফাজতে থাকা টিকা কী ভাবে ওই আধিকারিক এক নম্বর এয়ারপোর্টে নিয়ে গেলেন? দ্বিতীয়ত, স্বাস্থ্য দফতরের সমর্থন না থাকা সত্ত্বেও, কী ভাবে বাড়িতে গিয়ে টিকা দিলেন ওই আধিকারিক? তৃতীয়ত, ছোট জাগুলিয়ার গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে কি পানিহাটির মতোই ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল টিকা? এ ছাড়াও আরও অসংখ্য প্রশ্ন রয়েছে, যার উত্তর এখনও ধোঁয়াশায়।

তবে একটা বিষয় মোটামুটি পরিষ্কার, সেটা হল- এ ক্ষেত্রেও টিকাকরণের বিনিময়ে বৃদ্ধ-বৃদ্ধার কাছে থেকে ৬০০ টাকা নেওয়া হয়েছিল। নতুবা সেই টাকা ফেরত দেওয়ার প্রশ্নই আসত না। TV9 বাংলার পক্ষ থেকে অভিযুক্ত স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি স্বীকার করে নেন যে দুয়ারে গিয়ে তিনি টিকা দিয়েছেন। যদিও তাঁর দাবি, ওই সমাজকর্মীর অনুরোধেই তিনি টিকা দিয়েছিলেন। এবং টিকার বদলে টাকা তিনি নিজে নেননি, বরং নিয়েছিলেন দিবাকরবাবু। যা পরবর্তী সময় ফেরত দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি করেন ওই চিকিৎসক।

যদিও স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিক অন্য একটি বিষয় এ দিন দ্ব্যর্থহীন ভাষায় স্বীকার করে নিয়েছেন। রাজ্য স্বাস্থ্য় দফতরের অনুমোদন না থাকলেও বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে যে দুয়ারেও টিকা পৌঁছে যাচ্ছে, সেটা মেনে নেন তিনি। তাঁর কথায়, “আমাকে ডিএম সাহেবের মা-কেও গিয়ে ভ্যাকসিন দিতে হয়েছে। দুয়ারে যেরকম সরকার হয়, সেরকম দুয়ারে ভ্যাকসিনও চলছে। এগুলো স্পেশ্যাল কেস।”

TV9 বাংলায় এই খবর সম্প্রচারিত হওয়ার পরই নড়েচড়ে বসেছে স্বাস্থ্য দফতর। ইতিমধ্যেই ছোট জাগুলিয়া কাণ্ডে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা স্বাস্থ্য দফতর। তিনদিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাপস রায়কে। আরও পড়ুন: ‘আমাদের চাকরিটা একটু দেখুন’, মুখ্যমন্ত্রীর দরবারে ডেপুটেশন উচ্চ প্রাথমিক চাকরি প্রার্থীদের