Dengue in Kolkata: নির্দেশ এলেও কথা শুনছে না নিচুতলার কর্মীরা, ডেঙ্গি দমনে পুর কর্মীদের অনীহায় চিন্তায় ডেপুটি মেয়র
Dengue in Kolkata: তিনি যে দ্রুত কলকাতার বিভিন্ন ডেঙ্গি কবলিত এলাকা পরিদর্শন করবেন তা আগেই জানিয়েছিলেন অতীনবাবু। এদিন কলকাতা পুরসভার ৫৬ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত কামারডাঙ্গা এলাকার রেলের পরিত্যক্ত এলাকা পরিদর্শন করে এসে ৭ নম্বর বরোতে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন অতীনবাবু।
কলকাতা: ডেঙ্গির প্রকোপ রুখতে একের পর এক নির্দেশ আসছে। কিন্তু অভিযোগ, তা মান্যতা দিচ্ছেন না পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের নিচুতলা। সে কারণেই এবার অতীন ঘোষের তিরস্কারের মুখে স্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিক থেকে কর্মীরা। বিগত কয়েক সপ্তাহে কলকাতায় ডেঙ্গি উদ্বেগ এক ধাক্কায় অনেকটাই বেড়েছে। এসেছে একের পর এক মৃত্যুর খবর। এরইমধ্যে দায়সারা কাজ এবং নির্দেশ পালনে চরম গাফিলতি, এই দু’য়ের এর কারণে কলকাতার অন্যতম সবচেয়ে বড় ঘিঞ্জিতম বরো ৭ এর বিভিন্ন ওয়ার্ডে বাড়ছে ডেঙ্গির প্রকোপ। উঠেছে এমনটাই অভিযোগ। কোনওভাবেই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না ডেঙ্গির দাপাদাপি। সূত্রের খবর, সে কারণেই স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদ তথা ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষের তিরস্কারের মুখে পড়লেন সংশ্লিষ্ট বরোর দায়িত্বপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য আধিকারিকরা। রীতিমতো তুলোধনা করলেন ডেপুটি মেয়র।
যে নির্দেশ স্বাস্থ্য বিভাগের তরফে দেওয়া হচ্ছে তা নিচু তলায় সঠিকভাবে মান্যতা দেওয়া হচ্ছে না বলেই অতীনবাবু বুধবার বৈঠক থেকে বুঝতে পারেন। আর তারপরই রীতিমতো তিরস্কার করা হয় ওই আধিকারিকদের। বৈঠকের পর অতীনবাবু একটা বিষয়ে পরিষ্কার করে দিয়েছেন, কেন্দ্র এবং রাজ্য উভয়কেই এগিয়ে আসতে হবে তাদের পরিত্যক্ত জায়গা এবং আবাসন বা অন্যান্য সম্পত্তির পরিষ্কারের বিষয়ে। সরকারি সম্পত্তির প্রতিটি জায়গায় পুরসভার স্বাস্থ্য কর্মীরা পৌঁছতে পারছেন না। তাই কেন্দ্র এবং রাজ্যের বিভিন্ন দপ্তরগুলি যদি সাহায্য না করে তাহলে ডেঙ্গিমুক্ত সম্ভব নয়। এমনই মত তাঁর। বিভিন্ন সরকারি দফতর অত্যন্ত পুরনো হওয়ায় সেগুলির মাথার উপরে গম্বুজ আকৃতির একেকটি স্তম্ভ রয়েছে। যেগুলির ভিতরে বৃষ্টির জল জমে থাকছে। প্রাণের ঝুঁকি নিয়েও পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা সেখানে পৌঁছতে পারছেন না। সেগুলি নিয়ে ভাবতে হবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্তাদের। ছাদগুলি খুলে দিতে হবে যাতে পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা পৌঁছতে পারেন এবং সেই জায়গাগুলো পরিষ্কার করতে পারেন। এদিনের বৈঠকে এই বার্তাও দিয়েছেন তিনি।
এদিন বৈঠকে অতীনবাবু বলেন, মেয়র বা ডেপুটি মেয়র বা মেয়র পারিষদ অথবা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের শীর্ষ কর্তারা রাস্তায় নেমে ডেঙ্গিমুক্ত করতে পারবেন না। যদি না বিভিন্ন সরকারি দফতরের আধিকারিক এবং সাধারণ মানুষ পুরসভাকে সাহায্য করেন। তারা সতর্ক হলেই তবেই কলকাতা ভয়ঙ্কর মহামারির হাত থেকে রক্ষা পাবে।
তবে তিনি যে দ্রুত কলকাতার বিভিন্ন ডেঙ্গি কবলিত এলাকা পরিদর্শন করবেন তা আগেই জানিয়েছিলেন অতীনবাবু। এদিন কলকাতা পুরসভার ৫৬ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত কামারডাঙ্গা এলাকার রেলের পরিত্যক্ত এলাকা পরিদর্শন করে এসে ৭ নম্বর বরোতে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন অতীনবাবু। সেই বরোর অধীনে রয়েছে ৯ টি ওয়ার্ড। যার কলকাতার সবচেয়ে বেশি যে ভোটার সংখ্যা রয়েছে যে ওয়ার্ড, সেই ৬৬ নম্বর ওয়ার্ডও রয়েছে। এদিনের বৈঠক থেকে উঠে আসে ৬৬ এবং ৬৭ নম্বর ওয়ার্ড সব থেকে খারাপ অবস্থায় রয়েছে। বিশেষ করে কসবা এলাকার ৬৭ নম্বর ওয়ার্ডে ইতিমধ্যেই ১০০’ র বেশি মানুষ ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে রয়েছেন। যা সবথেকে বেশি চিন্তায় রেখেছে কলকাতা পুরসভাকে। সূত্রের খবর, এদিন বৈঠকের মাধ্যমে ডেপুটি মেয়র বুঝতে পারেন, স্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিক বা কর্মীরা যেখানে ডেঙ্গির লার্ভা মিলছে, সেখানে শুধু ৪৯৬ এ ধারায় নোটিশ দিয়েই ক্ষান্ত থাকছেন। সে কারণে খানিক ক্ষোভও প্রকাশ করেন। মশার লার্ভা পরিষ্কার করা হচ্ছে কিনা বা আদৌ পরবর্তীকালে সেখানে জল জমছে কি না, সেগুলি কোনও নজরদারি করা হচ্ছে না বলেও মনে করা হচ্ছে। এমনকি, এলাকায় এলাকায় জ্বরে আক্রান্ত কতজন, রক্ত পরীক্ষা আদৌ তাঁরা করছেন কিনা, পরিত্যক্ত জায়গায় জল জমিয়ে না রাখার ব্যাপারে মানুষ সচেতন হচ্ছেন কিনা, এই ধরনের বিভিন্ন বিষয়ে নজর রাখতে বা খবর নিতে স্বাস্থ্য আধিকারিক বা কর্মীরা নিচু তলায় পৌঁছাচ্ছেন না। যে কারণেই সংশ্লিষ্ট বরো সংকট বাড়ছে বলে মনে করছেন অতীনবাবু-সহ কলকাতা পুরসভার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক থেকে স্বাস্থ্য বিভাগের শীর্ষ আধিকারিকরা। সে কারণেই বৈঠক থেকে একগুচ্ছ নির্দেশ আধিকারিকদের দিয়েছেন অতীনবাবু।