Dilip Ghosh: ‘ওঁর মুখে যা আসে তাই বলেন’, কটাক্ষ দিলীপের, টিকাকরণে ‘জুমলাবাজি’-র অভিযোগ মমতার

COVID Vaccination:২০২১ সালের ১৬ জানুয়ারি এক নতুন ইতিহাস গড়ার লক্ষ্যে পা দেয় ভারত। শুরু হয় গণটিকাকরণ কর্মসূচি (COVID Vaccination Drive)। মাত্র ৩৪ দিনেই অর্থাৎ ১৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দেশে ১ কোটি টিকা দেওয়া হয়।

Dilip Ghosh: 'ওঁর মুখে যা আসে তাই বলেন', কটাক্ষ দিলীপের, টিকাকরণে 'জুমলাবাজি'-র অভিযোগ মমতার
মমতাকে বাক্যবাণে বিঁধলেন দিলীপ, ফাইল চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 25, 2021 | 8:24 AM

কলকাতা: বিভিন্ন সময়ে শানিত বাক্যবন্ধে শান দিয়েছেন তিনি। জোরদার কটাক্ষে তোপ দেগেছেন রাজ্যের শাসক শিবিরকে। তিনি বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এ বার টিকাকরণকে কেন্দ্র করে মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা।

প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে কার্যত টিকাকরণে কারচুপির অভিযোগ নস্যাত্‍ করে দিয়ে বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী হলে কী হবে! ওঁর কাছে কোনও হিসেব নেই। কিছুই জানেন না ওঁ। যা মুখে আসে তাই বলে দেন। ওঁ কি জানেন টিকাকরণ নিয়ে! তাছাড়া কত লোক টিকা পেয়েছেন তা তো দেখা যাবে কেন্দ্রীয় সরকারের ওয়েবসাইটে গেলেও। না জেনেই কথা বলেন মুখ্য়মন্ত্রী। হিসেবের কিছুই জানেন না।”

রবিবারই উত্তরবঙ্গে সভামঞ্চ থেকে কেন্দ্রীয় সরকারকে তোপ দেগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “টিকা নিয়ে জুমলা চলছে। বলছে ১০০ কোটি নাকি টিকা দেওয়া হয়েছে। কোনও একটা হিসেব নেই। আমার রাজ্যে ৮ কোটি টিকাকরণ হয়েছে। সে হিসেব আমি দেব! যা ইচ্ছে তাই বোঝাচ্ছে। আমার রাজ্যে লোক বেশি। টিকার দরকার বেশি। তাও টিকা মিলছে না।”

এখানেই থামেননি তৃণমূল নেত্রী। তিনি আরও বলেন, “বাংলা তো ছাগলের তিন নম্বর ছানা। তাই যত কমতি এখানেই। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে আমরা অনেক টিকা কিনে টিকাকরণ করিয়েছি। কেন আমি টিকা পাব না! কেন মহারাষ্ট্র বেশি টিকা পাবে! আমার রাজ্যে তো লোক বেশি। আমি বলছি না যে অন্য রাজ্যকে টিকা দেবে না। কিন্তু যেখানে দরকার সেখানে তো দেবে!” পাশাপাশি, রবিবারের সভা থেকে করোনা টিকা কোভ্যাক্সিন ও কোভিশিল্ডের বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মুখ্য়মন্ত্রী। এরই পাল্টা, সোমবার সকালে মন্তব্য করেন দিলীপ।

প্রসঙ্গত, প্রথম বিশ্বের দেশগুলি পারেনি এখনও, তৃতীয় বিশ্বের দেশ হয়েও টিকাকরণে ১০০ কোটির (100 crore Vaccination) লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করে নজির গড়ে দেখিয়েছে ভারত।

২০২১ সালের ১৬ জানুয়ারি এক নতুন ইতিহাস গড়ার লক্ষ্যে পা দেয় ভারত। শুরু হয় গণটিকাকরণ কর্মসূচি (COVID Vaccination Drive)। মাত্র ৩৪ দিনেই অর্থাৎ ১৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দেশে ১ কোটি টিকা দেওয়া হয়। এরপর ৮৫ দিনের মাথায় ১০ কোটি টিকাকরণের গণ্ডিতে প্রবেশ করে দেশ। ১৪৮ দিন পার করে ১২ জুন ২৫ কোটির মাইলফলক স্পর্শ করে কেন্দ্র।

১০০ কোটি টিকাকরণের লক্ষ্যে এই পথচলা অতটা সহজ ছিল না। টিকাকরণের প্রথম ধাপেই কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছিল, টিকাকরণের ক্ষেত্রে অগ্রগণ্যতা পাবেন চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী ও প্রথম সারির করোনা যোদ্ধারা। তবে করোনা টিকা নিয়ে সকলের মনেই নানা প্রশ্ন ও ধন্দ্ব থাকায় টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে বেশ কিছু ভ্রান্ত ধারণা তৈরি হয়। অনেকেই করোনা টিকা নিতে অস্বীকার করেন। তবে কেন্দ্রের লাগাতার প্রচার ও প্রচেষ্টায় ধীরে ধীরে সেই প্রতিবন্ধকতা অনেকটাই কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়েছে।

দেশে ৫০ কোটি টিকাকরণের লক্ষ্যমাত্রা পার হয়  টিকাকরণ কর্মসূচি শুরু  হওয়ার ২০৩ দিনের মাথায়। ৬ অগস্ট এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করে দেশ। এরপর ১৩ সেপ্টেম্বর ৭৫ কোটি টিকাকরণের গণ্ডিতে প্রবেশ করে দেশ। ১৭ সেপ্টেম্বর, প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে আড়াই কোটি টিকা দিয়ে বিশ্বরেকর্ড গড়ে ভারত। সেই সময়ই প্রধানমন্ত্রী দেশের সমস্ত চিকিৎসক, স্বাস্থ্য়কর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছিলেন,”টিকাকরণের এই গতি ধরে রেখেই ১০০ কোটির মাইলফলক স্পর্শ করতে হবে আমাদের”।

২৬০ দিনের মাথায়, ২ অক্টোবরই ৯০ কোটি টিকাকরণের গণ্ডিতে প্রবেশ করে দেশ। এরপরই শুরু হয় কাউন্টডাউন। চলতি সপ্তাহের মঙ্গলবার ৯৯ কোটির গণ্ডিতে প্রবেশ করে দেশ। দৈনিক টিকাকরণের সংখ্যা দেখেই দেশবাসী অপেক্ষা করতে থাকে সেই মাহেন্দ্রক্ষণের, যখন ১০০ কোটির গণ্ডি পার করবে দেশের টিকাকরণ। গত ২১ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ৪৭ মিনিটেই সেই সময় আসে। পূরণ হয় প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন, দেশে ১০০ কোটি টিকা প্রদান।

আরও পড়ুুন: Mamata Banerjee: ‘আমরা কেন ঝগড়া করব? সবটাই পলিটিক্যাল ষড়যন্ত্র’, BSF-এর ক্ষমতায়নে তোপ মমতার