Weather News : বসন্তের বালাই নেই, ফেব্রুয়ারিতেই সওয়া শতকের রেকর্ডভাঙা গরম

Weather News : ফেব্রুয়ারিতেই সওয়া শতকের রেকর্ডভাঙা গরম, তাপপ্রবাহের তাওয়ায় সেঁকবে গ্রীষ্ম।

Weather News : বসন্তের বালাই নেই, ফেব্রুয়ারিতেই সওয়া শতকের রেকর্ডভাঙা গরম
ফেব্রুয়ারিতেই গ্রীষ্মের এন্ট্রি, ‘ট্রেলারেই’ ঘাম ঝরছে আম-আদমির
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 28, 2023 | 11:49 PM

শীতে (Winter) জমিয়ে ঠান্ডা পড়েনি। বসন্তেরও বালাই নেই। সরাসরি গ্রীষ্মের (Summer) এন্ট্রি! উষ্ণ অভ্যর্থনা বলা যেত, কিন্তু গ্রীষ্মকে কে-ই বা অভ্যর্থনা জানাতে চায়! তাও আবার যা ‘ট্রেলার’! বিন্দুমাত্র স্বস্তিতে রাখছে না গ্রীষ্মের ‘বিজ্ঞাপন’ও। ট্রেলারে কী দেখেছি আমরা? ফেব্রুয়ারি মাসেই বিরল তাপপ্রবাহ (Heat Wave)। চল্লিশ-পার তাপমাত্রা গুজরাতের ভুজে। পড়শি ওড়িশায় একাধিক জায়গায় ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস পার পারদের। ছাড় পায়নি বাংলাও। ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে বাঁকুড়া (Bankura), ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে উঠে গিয়েছে কলকাতার তাপমাত্রা। মাস শেষে মৌসম ভবন বলছে, ১২৩ বছরে দেশে এত গরম আর কখনও পড়েনি ফেব্রুয়ারিতে। ২০২৩-এর ফেব্রুয়ারিই উষ্ণতম। রেকর্ডে নাম লিখিয়েছে পূর্ব ভারতও। সওয়া শতকের উষ্ণতার অঙ্কে তিন নম্বরে থাকবে এ বারের ফেব্রুয়ারি।   

তাহলে মার্চ, এপ্রিল, মে মাসে কী হবে? 

মঙ্গলবার তারই আভাস দিয়েছে নয়াদিল্লির মৌসম ভবন। সেই আউটলুক অর্থাত্‍ গ্রীষ্মের ‘বিজ্ঞাপন’ দেখলে চোখ কপালে ওঠার জোগাড়! দক্ষিণ ভারত বাদে গোটা দেশেই সর্বোচ্চ তাপমাত্রার গড় স্বাভাবিকের উপরে থাকার আশঙ্কা। স্বাভাবিকের উপরে থাকবে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার গড়ও। মোদ্দা কথা, বেশিরভাগ দিনই, দিনে-রাতে অস্বস্তিকর গরম থাকার সম্ভাবনা। দুশ্চিন্তার পূর্বাভাস, এ বার তাপপ্রবাহের সম্ভাবনা বেশি থাকবে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের পাঁচ ডিগ্রি উপরে উঠলে তাপপ্রবাহ ঘোষণা করা হয়। এমন ঘোষণা এ বার বারবার করতে হতে পারে, আউটলুকে জানিয়েছেন আবহবিদরা। সহজ কথায়, তাপপ্রবাহের তাওয়ায় সেঁকবে গ্রীষ্ম। মূল আশঙ্কা উত্তর-পশ্চিম ও মধ্য ভারতকে নিয়ে। বাংলায় আশঙ্কা পশ্চিমাঞ্চলকে ঘিরে। অর্থাত্‍, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, বীরভূম, পশ্চিম বর্ধমান। কলকাতায় তার আঁচ পৌঁছবে কি না, তা স্পষ্ট হবে সময় গেলেই। 

আপাতত কী পূর্বাভাস? 

মৌসম ভবনের পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান, অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর জেনারেল সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, ‘রোজই একটু একটু করে তাপমাত্রা বাড়বে। ৩ মার্চের পর ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে যাবে কলকাতার তাপমাত্রা। দোলের পর পারদ আরও চড়তে পারে। পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে তাপমাত্রা আরও কিছুটা বেশি থাকবে।’ অর্থাত্‍, সহসা রেহাই পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। কেন নেই? সঞ্জীববাবুর ব্যাখ্যা, ‘এর অন্যতম কারণ বৃষ্টির অভাব। এ বার শীতে দেশের সমতলে বৃষ্টি প্রায় হয়নি। ফলে ফেব্রুয়ারি মাসেই অনেক রাজ্যকে প্রবল গরম সইতে হয়েছে। আপাতত বৃষ্টির কোনও সম্ভাবনা দেখছি না। আকাশ পরিষ্কার থাকলে রোদের তেজ বাড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’

অবশ্য মার্চের স্বাভাবিক চরিত্র, গরম পড়বে। কালবৈশাখী এলে সাময়িক স্বস্তিও মিলবে। কিন্তু আগামী সাত দিনে কালবৈশাখীর কোনও সম্ভাবনা নেই। তাই নেই স্বস্তির আশাও। সঞ্জীববাবুর কথায়, ‘কালবৈশাখীর জন্য জলীয় বাষ্প বায়ুমণ্ডলের উপরিস্তরে ওঠা প্রয়োজন। কিন্তু বায়ুমণ্ডলে যে অস্থিরতা থাকা দরকার, সেটা না থাকায় জলীয় বাষ্প উপরে উঠতে পারছে না। ফলে মেঘ তৈরির সুযোগ নেই। আর এই পরিস্থিতির জন্যই ক’দিন ধরে আমরা সকালে ঘন কুয়াশা দেখতে পেয়েছি। সাধারণত, তাপমাত্রা বেড়ে গেলে কুয়াশা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু জলীয় বাষ্প উপরে উঠতে না পারায় কুয়াশায় পরিণত হয়ে গিয়েছে!’ 

স্পষ্টতই, আবহাওয়ার আচরণে খেয়ালিপনা! যে ঋতুতে যা দরকার, তা নেই। এ বার শীতে একাধিক উষ্ণতার রেকর্ড তৈরি হয়েছে। বসন্তে যে দখিনা বাতাসের সাক্ষী হয় বাংলা, তারও দেখা নেই। উল্টে এখন থেকেই উত্তর-পশ্চিমের শুকনো হাওয়া ঢুকছে। যত দিন যাবে, এই হাওয়া গরম হবে। লু আসবে, সেদ্ধ হবে বাংলা।