AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Governor Jagdeep Dhankhar: রাজ্যের ২৪ বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘অবৈধ’ উপাচার্য নিয়োগ! ফের টুইটযুদ্ধে ধনখড়

Kolkata: ফের রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত চরমে। এ বার উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে বিস্ফোরক ধনখড়।

Governor Jagdeep Dhankhar: রাজ্যের ২৪ বিশ্ববিদ্যালয়ে 'অবৈধ' উপাচার্য নিয়োগ! ফের টুইটযুদ্ধে ধনখড়
কমিশনারকে তলব ধনখড়ের (ফাইল ছবি)
| Edited By: | Updated on: Dec 30, 2021 | 11:46 AM
Share

কলকাতা: ফের তীব্র রাজ্য-রাজ্যপাল (Jagdeep Dhankhar) সংঘাত। টুইটে, রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে নিয়োগ সংক্রান্ত বেনিয়মের অভিযোগ তুলে এ বার সরব হলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। বেনিয়ম নিয়োগের তালিকায় রয়েছে মোট ২৪ টি বিশ্ববিদ্যালয়। তাতে বাদ নেই প্রথম সারির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিও। ওই ২৪ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় রয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্য়ালয়-সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলি।

ঠিক কী অভিযোগ করেছেন রাজ্যপাল? টুইটে রাজ্যপাল লিখেছেন, “নিয়মবহিভূর্তভাবে আচার্যের অনুমতি ছাড়াই  উপাচার্যের নিয়োগ করা হয়েছে। এই নিয়োগ সম্পূর্ণ অবৈধ। এই নিয়োগের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে।”  একইসঙ্গে ২৪ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকাও প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল। সেই তালিকায় রয়েছে, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় সহ-একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

ঠিক কোথায় বিরোধ? 

এক্ষেত্রে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে নজর দেওয়া যেতে পারে। গত ২৩ জুন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাসের মেয়াদ শেষ হচ্ছিল। বিকাশ ভবন জানাচ্ছে ১৭ তারিখ ও ২২ তারিখ আচার্যের কাছে অধ্যাপক দাসের মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাব পাঠানো হয়। কিন্তু আচার্যের কাছ থেকে কোনও উত্তর আসেনি। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজন মাথায় রেখে রাজ্য সরকার সুরঞ্জনবাবুর পদ-মেয়াদ বৃদ্ধি করে। সেই নিয়মেই এখনও তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে বহাল রয়েছেন।

আর এতেই অভিযোগ তুলেছেন রাজ্যপাল। তাঁর অভিযোগ, পদাধিকারবলে রাজ্যপাল আচার্য পদে আসীন। তাঁকে না জানিয়ে কী করে এই মেয়াদ বৃদ্ধি সম্ভব হল তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন ধনখড়। পাল্টা রাজ্য সরকারের অভিযোগ, রাজ্যপালকে নিয়োগ ও উপাচার্যের মেয়াদবৃদ্ধি সংক্রান্ত নথি পাঠানো হলেও তিনি কোনও উত্তর করেননি। দিনের পর দিন ফাইল আটকে রেখেছেন বলে অভিযোগ। এইভাবে কোনও বিশ্ববিদ্যালয় চলতে পারে না। তাই বাধ্য হয়েই পদক্ষেপ করেছে রাজ্য।

উপাচার্য নিয়োগের প্রক্রিয়াটি কী? 

বাম সরকারের আমলে শিক্ষা দফতর থেকে ৩ টি নাম আচার্যের কাছে যেত। এরপর আচার্য সেই তিনটি নামের মধ্যে একজনকে নির্বাচন করতেন।   ক্ষমতায় তৃণমূল সরকার আসার পর ৩ জনের সার্চ কমিটি তৈরি করা হয়। সেই কমিটিতে সরকারের পক্ষে, আদালতের পক্ষে এবং রাজ্যপালের পক্ষ থেকে তিনজন প্রতিনিধি নিয়োজিত হন। এই কমিটিই গুরুত্ব অনুযায়ী ক্রমানুসারে ৩ জনের নাম পাঠায়। শিক্ষাবিদদের একাংশের অভিমত, এই ক্রমানুসারে নাম পাঠানোতে তালিকায় থাকা প্রথম নামটিই উপাচার্য হওয়ার সবচেয়ে যোগ্য। তালিকাভুক্ত প্রথমজনই সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োজিত হন। সেক্ষেত্রে কার্যত রাজ্যপালের অনুমোদিত স্বাক্ষর ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না।

বিরোধের শিকড় গভীরে

প্রসঙ্গত, রাজ্য -রাজ্যপাল সংঘাত নতুন নয়। কিছুদিন আগেই উপাচার্যদের সঙ্গে বৈঠক সংক্রান্ত ইস্যুতে রাজ্যের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়েছিলেন রাজ্যপাল। কিন্তু সেখানেই শেষ নয়। পরে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গেও বিরোধে জড়ান ধনখড়। সম্প্রতি রাজ্যের পরিচালবন ব্যবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন রাজ্যপাল।

রাজ্যপাল অভিযোগ করে লেখেন, ‘মমতা সরকারের আমলে শিক্ষাব্যবস্থায় চিত্রটা ভয়াবহ। রাজ্যের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও আচার্য এবং উপাচার্য রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠকে এলেন না। রাজ্যে শিক্ষাব্যবস্থায় সংগঠন বিস্তারের চেষ্টা চলছে।’

রাজ্যপালের এই মন্তব্যের পাল্টা তোপ দাগেন ব্রাত্য বসু। শিক্ষামন্ত্রীর কথায়, “ওঁ সহযোগিতা করেন না। ফাইল আটকে রাখেন। ওঁ শিশ দেন, ট্যুইট করেন, বিবৃতি দেন।” তাঁর আরও সংযোজন, “চ্যান্সেলর পদে মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে আসা যায় কিনা, সেটা দেখা হবে। এরকম করলে আমরা ভাববো, কিছু দিনের জন্য ওঁর বদলে মুখ্যমন্ত্রীকে চ্যান্সেলর করা যায় কি না!”

সাংবাদিক বৈঠকে ব্রাত্য বলেছিলেন, “তিনি দিনের পর দিন এ ভাবে ফাইল ফেলে রাখেন। তিনি বিন্দুমাত্র সহযোগিতার মনোভাব যদি না দেখান, তা হলে কেরলের রাজ্যপাল যেমন বলেছেন, প্রাদেশিক স্তরে আমরাও তা করতে বাধ্য হব। সংবিধান খতিয়ে দেখব, দরকারে আইনজ্ঞদের পরামর্শ নেব। আমরা আইনজীবীদের কাছে জানতে চাইব, অন্তবর্তীকালীন সময়ের জন্য রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আচার্য পদে আমরা মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে আসতে পারি কি না।”

তাতে পাল্টা রাজ্যপাল মন্তব্য করেন, “শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য করবেন। উনি ওঁকে রাজ্যপালই করে দিন না! অসুবিধা কোথায়! দিদিকেই বরং রাজ্যপাল করে দেওয়া হোক!”

সমস্যার সূত্রপাত একটি বৈঠক নিয়ে। চলতি মাসের ২০ তারিখ রাজ্যপাল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১ জন উপাচার্য ও আচার্যকে ডাকেন একটি বৈঠকে যোগদানের জন্য। শিক্ষার মানোন্নয়ন বিষয়ক আলোচনার জন্য ডেকেছিলেন তিনি। উপাচার্য ও আচার্যরা সম্মিলিতভাবে একটি চিঠি করেন রাজ্যপালকে। তাঁরা জানিয়েছিলেন, ওমিক্রনের কারণে তাঁরা এই মুহূর্তে রাজভবনে যেতে পারছেন না। সেইমতো নির্ধারিত দিনে রাজ্যপালের সঙ্গে কেউই বৈঠকে যোগ দেননি। রাজভবনে ফাঁকা আসনের ছবি তুলে ধরে পাল্টা টুইট করেন রাজ্যপাল। সেই থেকে রাজভবন-নবান্ন সংঘাত নতুন আকার ধারণ করে।

আরও পড়ুন:  Asansol Municipal Election: ‘পার্টি পার্টির মতোই চলবে, কারোর দিকে তাকাবে না’