Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

মুকুলের ‘বাড়ি’ ফেরা: কীভাবে দূরত্ব ঘুচিয়ে ‘ঘর ওয়াপসি’ তৃণমূলের প্রতিষ্ঠাতার

নন্দীগ্রামের জনসভার থেকে মমতা বন্দোপাধ্যায় যে মন্তব্য করেছিলেন, সেটাই কার্যত স্পষ্ট করে দিয়েছিল, বড় কিছু ঘটতে চলেছে মুকুলকে নিয়ে। অবশেষে সেই জল্পনাই কার্যত সত্যি হতে চলেছে।

মুকুলের 'বাড়ি' ফেরা: কীভাবে দূরত্ব ঘুচিয়ে 'ঘর ওয়াপসি' তৃণমূলের প্রতিষ্ঠাতার
ফাইল ছবি
Follow Us:
| Updated on: Jun 11, 2021 | 2:41 PM

কলকাতা: ক্রিজে টিকে থাকলেই রান আসবে। এই তত্ত্বে বিশ্বাস রেখে যাঁরা রাজনীতি করেন, মুকুল রায়ও তাদের মধ্যে অন্যতম। তিনি বিশ্বাস করেন, যদি রাজনীতির ময়দানে টিকে থাকা যায়, তবে ধীর গতিতে হলেও অবশ্যই সুফল মিলবে। কিন্তু যদি প্রথম একাদশেই তিনি না থাকেন, যদি তাঁকে ড্রেসিংরুমে বসেই সময় কাটাতে হয়, তখন দলে থেকেও লাভ কী? সম্ভবত ঠিক এমন পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার জেরেই আজ তৃণমূলে ফিরতে চলেছেন তৃণমূলের প্রতিষ্ঠাতা। যদিও ঘরের ছেলের ঘরে ফেরার রাস্তাটা যেন গত ৩০ মার্চই খুলে দিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। নন্দীগ্রামের জনসভার থেকে মমতা বন্দোপাধ্যায় যে মন্তব্য করেছিলেন, সেটাই কার্যত স্পষ্ট করে দিয়েছিল, বড় কিছু ঘটতে চলেছে মুকুলকে নিয়ে। অবশেষে সেই জল্পনাই কার্যত সত্যি হতে চলেছে। ‘সোনার কেল্লার’ ছোট্ট মুকুল ঠিক যেভাবে বাড়ি ফিরতে চেয়েছিল, যেন ঠিক একই আকুতি নিয়ে ‘বাড়ি’ ফিরতে চলেছেন মুকুল।

কীভাবে ধাপে ধাপে পুরোনো দলের সঙ্গে দূরত্ব ঘোচালেন মুকুল? রইল ফ্ল্যাশব্যাক

২০১৯ সালে লোকসভা ভোট বিজেপির ১৮ আসন পাওয়ার কৃতিত্ব নির্দ্বিধায় মুকুল রায়কে দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহরা। কিন্তু যেই দুঁদে রাজনীতিক নিজের সাংগঠনিক দক্ষতার জন্য পরিচিত, তাঁকে একুশের নির্বাচনে ব্যবহার করেনি তৃণমূল। তাঁকে প্রার্থী করা হয় কৃষ্ণনগর উত্তরের আসন থেকে। জয়ীও হন। কিন্তু তারপর থেকেই লক্ষ্যণীয়ভাবে নিশ্চুপ হয়ে যান মুকুল। শাসকদলকেও কড়া আক্রমণের পথে হাঁটেননি।

এরপরই গত ৩০ মার্চ থেকে সেই ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে বলতে শোনা যায়, “মুকুল শুভেন্দুর মতো অতটা খারাপ নয়।” তখন থেকেই জল্পনার জাল বোনা শুরু। রাজনৈতিক মহলে চর্চা শুরু হয়, তবে কি মুকুলকে কোনও প্রচ্ছন্ন বার্তা দিয়ে রাখলেন নেত্রী?

দ্বিতীয় বড় সঙ্কেত মেলে গত ৭ মে। বিধায়ক পদে শপথ নেওয়ার পর সুব্রত বক্সির সঙ্গে একান্তে প্রায় ৪৫ মিনিট কথা বলেন মুকুল। বেরিয়ে আরেকটি চাঞ্চল্যকর মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, “কিছু সময়ে চুপ থাকতে হয়। যা বলার সময় মতো বলব।” তাঁর এই মন্তব্য নিয়ে জলঘোলা তৈরি হলে পরের দিনই টুইট করে মুকুল টুইট করে জানান, তিনি বিজেপিতেই আছেন। মুকুলের সেই টুইট রিটুইটও করেন খোদ বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা।

আরও পড়ুন: রাজনৈতিক জল্পনার মাঝেই তৃণমূল ভবনে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ বৈঠকে অভিষেক, পৌঁছলেন মমতাও

কিন্তু এরপর যে বড় ঘটনা ঘটে, তা কার্যত সাফ করে দেন, আজ নয়তো কাল মুকুলের ঘর ওয়াপসি হবেই। মুকুল রায়ের অসুস্থ স্ত্রী-কে দেখতে হাসপাতালে যান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগেই আবার মুকুল পুত্র শুভ্রাংশু টুইট করে আত্মসমালোচনার কথা বলেন। মাঝে একদিন মুকুল এমনটাও বলেন, “আমি এখন নিজের যন্ত্রণায় জ্বলছি।”

এই সময়ের মধ্যেই বিজেপির একের পর এক সাংগঠনিক এড়িয়ে যেতে থাকেন মুকুল। সংবাদ মাধ্যমেরও মুখোমুখি হতে চাননি। তারপরই বৃহস্পতিবার আরেকটি তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেন সৌগত রায়। সেখানেই তিনি আলোকপাত করেন যে, মুকুল কখনই মমতাকে ব্যক্তিগত আক্রমণের পথে হাঁটেননি। তখনই কার্যত সাফ হয়ে যায়, মুকুলে তৃণমূলে ফেরা কেবল সময়ের অপেক্ষা। সেই অপেক্ষার অবসান শুক্রবার শেষ হতে চলেছে। তৃণমূলেই যোগ দিতে চলেছেন মুকুল রায়।

আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীকে দরাজ শংসাপত্র দিয়ে ফেরার রাস্তা প্রশস্ত, আজ কি তৃণমূলে সব্যসাচীও?