আংটি দেখে শনাক্ত করেছিলেন, তারপরই উধাও স্বামীর দেহ, জ্ঞানেশ্বরী-কাণ্ডে ফের চাঞ্চল্যকর অভিযোগ

কয়েকদিন আগেই অভিযোগ সামনে এসেছে, অমৃতাভ চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি নিজেকে জ্ঞানেশ্বরী-কাণ্ডে 'মৃত' বলে দাবি করে রেলের সুবিধা নিয়েছেন।

আংটি দেখে শনাক্ত করেছিলেন, তারপরই উধাও স্বামীর দেহ, জ্ঞানেশ্বরী-কাণ্ডে ফের চাঞ্চল্যকর অভিযোগ
সিবিআই দফতরে প্রসেনজিৎ আটার মেয়ে পৌলমী
Follow Us:
| Updated on: Jun 21, 2021 | 6:29 PM

কলকাতা: সদ্য শিরোনামে উঠে এসেছে প্রায় ১১ বছর আগের জ্ঞানেশ্বরী ট্রেন দুর্ঘটনা। মাওবাদীদের ষড়যন্ত্রে জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় বহু মানুষের মৃত্যু হয়। এমনভাবে দুমড়ে মুচড়ে গিয়েছিল ট্রেন যে বহু দেহ শনাক্ত করাই দায় হয়ে উঠেছিল। আর এত বছর বাদে সেই ঘটনায় সামনে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। ‘মৃত’ বলে ভুয়ো সার্টিফিকেট দিয়ে ক্ষতিপূরণে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে অমৃতাভ চৌধুরী নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এমনকি বোনকে চাকরিও পাইয়ে দিয়েছে অমৃতাভ। এরই মধ্যে সিবিআই-এর কাছে অভিযোগ জানাল ওই ঘটনায় আরও এক মৃতের পরিবার। তাঁদের দাবি, মৃতদেহ শনাক্ত করা হলেও, মেলেন ডেট সার্টিফিকেট। কোনও সুবিধাও পায়নি পরিবার।

হাওড়ার শালকিয়ার বাসিন্দা প্রসেনজিৎ আটার পরিবার আজ সোমবার এই অভিযোগ নিয়ে হাজির হন নিজাম প্যালেসে। সিবিআই দফতরে অভিযোগ জানিয়েছেন তাঁর মেয়ে পৌলমী আটা। সিবিআই সেই অভিযোগ গ্রহণ করেছে ও যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছে।

প্রসেনজিতের স্ত্রী যূথিকা আটা জানান, হাতের আংটি দেখে স্বামীর দেহ শণাক্ত করেছিলেন তিনি। সেই দেহ যে তাঁর স্বামীর ছিল, সে ব্যাপারেও ১০০ শতাংশ নিশ্চিত তিনি। কিন্তু পরে তিনি যখন প্রমাণপত্র নিয়ে দেহ নিতে গিয়েছিলেন, ততক্ষণে অন্য কেউ দেহ নিয়ে চলে গিয়েছে। যূথিকার অভিযোগ পত্রে লিখেছেন, ‘একজন জীবিত ব্যক্তি নিজেকে মৃত বলে সুযোগ সুবিধা নিচ্ছেন। অথচ আমার পরিবারের একমাত্র রোজগেরে ব্যক্তির মৃত্যু হওয়া সত্ত্বেও আমি কোনও সুবিধা পাচ্ছি না।’ তাঁর দাবি, এমনও হতে পারে যে এই অমৃতাভই তাঁর স্বামীর দেহ দেখিয়ে টাকা নিয়েছে।

দ্রুত তদন্তের আর্জি জানিয়েছে প্রসেনজিতের পরিবার। তাঁদের দাবি, প্রকৃত তদন্ত করে অন্তত একটাই ডেথ সার্টিফিকেট ও একজনকে চাকরি দেওয়ার সুযোগ দিক রেল। যূথিকা আটা জানিয়েছেন, কিছুদিন আগেই তাঁর ব্রেন স্ট্রোক হয়েছেম বর্তমানে প্যারালাইজড তিনি।

আরও পড়ুন: অক্সিজেনের মাত্রা ৬০! ভেন্টিলেশনেই প্রসব মায়ের, পূর্ব ভারতে নজির গড়ল কলকাতা

অন্য দিকে, সোমবার অমৃতাভ চৌধুরী ও তাঁর বাবার ডিএনএ পরীক্ষার আর্জি জানিয়েছিলেন সিবিআই গোয়েন্দারা। সিবিআই আদালত সেই আর্জি মঞ্জুর করেছে। কয়েকদিনের মধ্যেই ডিএনএ পরীক্ষা হবে বলে জানা গিয়েছে। এ দিন সকাল থেকেই অমৃতাভকে জেরা করছিল সিবিআই। তারপরই ডিএনএ পরীক্ষার প্রয়োজন বোধ করেন গোয়েন্দারা। রবিবারই অমৃতাভর জোড়াবাগানে পুরনো বাড়িতে যান সিবিআই গোয়েন্দারা। পারিবারিক পুরনো অ্যালবাম থেকে বেশ কিছু ছবি বাজেয়াপ্ত করেন। সেগুলি থেকে অমৃতাভর পুরনো চেহারা সঙ্গে বর্তমান চেহারার মিল খতিয়ে দেখেন। তন্তকারীরা নিশ্চিত হন, এই ব্যক্তিই অমৃতাভ। তাঁর হাতের লেখার নমুনাও সংগ্রহ করা হয়েছে। হাতের লেখা মিলিয়ে দেখা হবে। এ ছাড়া তাঁর স্কুল-কলেজের সহপাঠীদের সঙ্গেও কথা বলার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা।