দিনে টার্গেট ১০,০০০! ৩ মাসে কত আয় এই বৃদ্ধের? ‘গান্ধী মার্কার’ খেলা চলছে কলকাতার RBI-এর সামনে

RBI: বাবুঘাটের আরবিআই-এর সামনেই দেখা মিলল সত্তরোর্ধ্ব এক ব্যক্তিকে। তিনি বললেন, "রোজই আসছি। আমার বাবু আছে।" তিন মাস ধরে রোজ ১০০০০ হাজার টাকা করে বদলাচ্ছেন তিনি। তাহলে কত টাকা হল ভাবা যায়?

দিনে টার্গেট ১০,০০০! ৩ মাসে কত আয় এই বৃদ্ধের? 'গান্ধী মার্কার' খেলা চলছে কলকাতার RBI-এর সামনে
ফাইল চিত্রImage Credit source: IANS
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 15, 2023 | 6:50 PM

কলকাতা: ১৯ মে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল। ২০০০ টাকার নোট ব্যাঙ্কে জমা করে দেওয়ার কথা বলেছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। ৫ ডিসেম্বরেও দেখা যাচ্ছে সমস্ত নোট জমা পড়েনি। আরবিআই-এর হিসাব বলছে, এখনও প্রায় ৯ হাজার ৭৬০ কোটি টাকার ২ হাজারি নোট রয়ে গিয়েছে বাজারে। কাদের কাছে রয়ে গিয়েছে সেই নোট? কেনই বা তাঁরা জমা দিচ্ছেন না? কালো টাকা ধরা পড়ে যাওয়ার ভয় কী? প্রশ্ন উঠছেই। কলকাতা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সামনে ভিড়টা কিন্তু বলছে এই প্রশ্ন অমূলক নয়। লাইনে বেশ কিছুক্ষণ নজর রাখলেই বোঝা যাচ্ছে, কার টাকা কে বদলায়?

কালো টাকার রঙবদল। খালি চোখে দেখে বোঝা বড়ই দায়! বাবুঘাটের রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সামনের লাইনটায় এখন নিত্য গিজগিজে ভিড়। তাঁদের মধ্যে মিশে গরিব-দিনমজুর-খেটে খাওয়া মানুষ। তাঁদের কারোর কাছে ২ হাজারের ১০টা নোট, কারোর কাছে ২ হাজারের ২০টা নোট! কিন্তু নিত্য দিন আনা খাওয়া মানুষের পুঁজিতে কি আদৌ ছিল এই টাকা? নাকি অন্য কোনও রহস্য?

প্রশ্নটা করা হয়েছিল তাঁদেরই। বাবুঘাটের আরবিআই-এর সামনে দাঁড়ানো মাথায় ঘোমটা টানা এক মহিলা। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, এই টাকা কার? তিনি বললেন, “এখন আমার কাছে আছে, এখন আমার।” কিন্তু আদতে এই টাকা কার? তিনি বললেন, ” ওই যে বললাম আমার টাকা। ওই আরকী! ওখানে আমার এক দিদিভাই রয়েছেন, তাঁর টাকা।” তাঁর পাশেই যে মহিলা দাঁড়িয়ে ছিলেন, তিনি ওত কথার মারপ্যাঁচ বোঝেন না। স্পষ্ট বললেন, “ওই যে দিদিদের থেকে টাকা নিয়েছি। চেঞ্জ করে আবার দিদিদের হাতেই দিয়ে দেব।” স্পষ্ট জানালেন তাঁরা লোকের হয়ে কাজ করেন।

কিন্তু এভাবে দীর্ঘক্ষণ রোদে দাঁড়িয়ে পা ব্যথা করে লাইনে দাঁড়িয়ে বিনিময়ে কী মিলছে? প্রশ্ন করতে পাশের আরেকজন বললেন, “আমাদের মজুরি দেয়। ২০০০০ টাকা ভাঙালে ৫০০-৬০ টাকা হাতে পাব।” কেউ আবার বললেন ৬০০-৭০০ টাকা। অর্থাৎ রেট মোটামুটি ঘোরাফেরা করছে ৫০০-৭০০ টাকার মধ্যেই।

অন্যের টাকা ধার কাঁট নিজের। কিন্তু অন্যের কালো টাকা এভাবে ভাঙাচ্ছেন? ভয় করছে না? সে প্রশ্নও করা হয়েছিল। তাঁরা বললেন. “কী করব, পেটের জ্বালা। আমরা তো আর চুরি করছি না।”

সকলেই অবশ্য এমন সাহসী নন। ক্যামেরা দেখে অনেকেই ঘোমটা, আঁচল, রুমাল. চাদর দিয়ে মুখ ঢাকছেন। বাবুঘাটের আরবিআই-এর সামনেই দেখা মিলল সত্তরোর্ধ্ব এক ব্যক্তিকে। তিনি বললেন, “রোজই আসছি। আমার বাবু আছে।” তিন মাস ধরে রোজ ১০০০০ হাজার টাকা করে বদলাচ্ছেন তিনি। তাহলে কত টাকা হল ভাবা যায়?

তাহলে প্রশ্ন, এঁদের পিছনে কোন ‘বড় লোকের’ হাত রয়েছে, যাঁরা অন্তত প্রকাশ্যে আসতে পারছেন না?  তাঁদের খুঁজে বার করবে না কেন্দ্রীয় এজেন্সি? নোটবন্দির পরবর্তী পরিস্থিতিতে আবারও এ প্রশ্ন মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে।