বর্ষায় জমবে না বইমেলা! মত শীর্ষেন্দু-সঞ্জীব-বুদ্ধদেবের

অরুণাভ রাহারায়: শেষ পর্যন্ত ৪৫তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা (International Kolkata Book Fair) অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। তবে এ খবরেও নিশ্চিন্ত নন বইপ্রেমীরা। কিন্তু কেন? কারণ, গিল্ডের ঘোষণা অনুযায়ী বইমেলা হবে জুলাই মাসে। আর জুলাই মানেই বর্ষাকাল। গত বছর শীতে, নির্দিষ্ট সময়ে বইমেলা চলার সময়ও অকাল বৃষ্টিতে সব লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। ক্ষতির মুখে পড়েন প্রকাশকরা। তাই এবার […]

বর্ষায় জমবে না বইমেলা! মত শীর্ষেন্দু-সঞ্জীব-বুদ্ধদেবের
Follow Us:
| Updated on: Feb 06, 2021 | 6:54 PM

অরুণাভ রাহারায়: শেষ পর্যন্ত ৪৫তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা (International Kolkata Book Fair) অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। তবে এ খবরেও নিশ্চিন্ত নন বইপ্রেমীরা। কিন্তু কেন? কারণ, গিল্ডের ঘোষণা অনুযায়ী বইমেলা হবে জুলাই মাসে। আর জুলাই মানেই বর্ষাকাল। গত বছর শীতে, নির্দিষ্ট সময়ে বইমেলা চলার সময়ও অকাল বৃষ্টিতে সব লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। ক্ষতির মুখে পড়েন প্রকাশকরা। তাই এবার ভরা বর্ষায় গিল্ডের বইমেলা করার সিদ্ধান্তকে সঠিক বলে মনে করছেন না অনেকে।

সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের মতে, “মার্চে বইমেলা করতে চেয়েছিল গিল্ড। আমি তখন বারণ করেছিলাম। আমরা এখনও অতিমারির মধ্যে আছি। জুন মাসে বর্ষা নেমে যায়। জুলাই পর্যন্ত থাকে। সেই সময় করাটাও সংকটের। আমার কাছে কোনও পরামর্শ চায়নি ওরা। দেখলাম জুলাই মাস ঘোষণা করে দিয়েছে। আমার কাছে যদি পরামর্শ চায় তাহলে আমি পিছিয়ে দিতে বলব। পুজোর আগে করতে বলব। কারণ সত্যিই তো বর্ষাকালে বইপত্র ভিজে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আমাকে জিজ্ঞসা করলে আমি অবশ্যই বলব, বর্ষাকালে বইমেলা বেশ অসুবিধেজনক।”

আরও পড়ুন: শেষমেশ কলকাতা বইমেলা হচ্ছে? জানা যাবে আগামিকাল

গিল্ড অবশ্য বর্ষার জল রুখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে, এমনই জানাচ্ছেন কর্তারা। গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক সুধাংশুশেখর দে বলেন, “অতিমারিতে আমরা সত্যিই বইমেলা করার সাহস করতে পারিনি। এখনও পর্যন্ত মানুষ ভীত হয়ে আছেন। তবে বাইরে থেকে ভ্যাকসিন আসার ফলে কিছুটা সাহস এসেছে। সামনেই নির্বাচন। নানা পরীক্ষা রয়েছে। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি জুলাই মাসে বইমেলা করব। তখন বর্ষাকাল। এর আগে যখন শীতকালে বইমেলা করেছি তখনও বৃষ্টি এসে লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে। এবার এই বিষয়ে নিশ্চয়ই আমাদের ভাবনা-চিন্তা থাকবে। এখনও অনেক সময় আছে।”

সাহিত্যিক সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের কথায় “খবরটা পেয়ে ভাবতে শুরু করলাম এ কী কাণ্ড! বর্ষাকালে বইমেলা তো জমবে না। চারদিকে বৃষ্টি হবে। টপটপ করে স্টলে জল পড়বে। সবচেয়ে বড় কথা বইপ্রেমীরা আসতেও পারবে না। ওয়েদারের ওপর তো আমাদের হাত নেই। আমরা ধরেই নিতে পারি, বর্ষাকালে বৃষ্টি হবে। আকাশ মেঘলা থাকবে। একটা বিতিকিচ্ছিরি অবস্থা হবে। বর্ষাকালে কেন বইমেলা ঘোষণা করলেন ওরা, বুঝতে পারছি না। দেরি যখন হয়েছে, আরেকটু দেরি হোক। সব চেয়ে ভাল হয় যদি পুজোর আগে করা যায়।”

জুলাই মাসের বইমেলায় অখুশি সাহিত্যিক বুদ্ধদেব গুহ-ও। তিনি বলেন, “বর্ষার বইমেলায় আসতে-যেতে পাঠকের অসুবিধে হবে। ওই সময় বইমেলা করাটা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। আমার ধারণা, এবার খুব মুশকিল হবে। তবে বইমেলা হওয়াটাও জরুরি। অনেক প্রকাশকের উপকার হবে।” ‘ছোঁয়া’ প্রকাশনার কর্ণধর তারেক কাজী বলেন, “এটা একটা ভুল সিদ্ধান্ত। গতবার সব লণ্ডভণ্ড হওয়ার পরেও কেউ খোঁজ নিতে আসেনি। গিল্ড যদি মনে করে শুধু রোজগারের জন্যই বইমেলা, তাহলে করুক। হয়তো প্রকাশক হিসেবে অংশ নেব। তবে মাথায় দেনা নিয়ে ফিরে আসতে হবে। গতবার বিপুল ক্ষতি হয়েছে। গিল্ড কোনও ক্ষতিপূরণ দেয়নি। আর এবার তো ভরা বর্ষায় বইমেলা!” বর্ষায় বইমেলা কতটা সাফল্য পায়, তা দেখার জন্য তাকিয়ে আছেন বইপ্রেমীরা।