Jorasanko Thakur Bari: ‘এভাবে কি পার্টি অফিস বানানো যায়?’ রবীন্দ্রনাথের বাড়িতে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় ভাঙার নির্দেশ হাইকোর্টের
Jorasanko Thakur Bari: এদিনের শুনানির প্রেক্ষিতে আদালতের পর্যবেক্ষণ হেরিটেজ নির্মাণ ভেঙে ফেলা যায় না। ভেঙে ফেলা অংশের পুনরুদ্ধার প্রয়োজন। অনুমতি ছাড়া নতুন নির্মাণও নয়।

কলকাতা: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জোড়াসাঁকোর বাড়ি অর্থাৎ মহর্ষী ভবনে তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয় ভাঙার নির্দেশ দিলেন প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চের। ভাঙতে হবে রবীন্দ্রভারতীর অংশের নির্মাণও। ওই অংশের নির্মাণ পুনরায় আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে হেরিটেজ বিভাগকেও। পুনরুদ্ধারের পর মহর্ষী ভবনকে ‘হেরিটেজ বিল্ডিং’ বলে আলাদা করে চিহ্নিত করতে হবে ওই দফতরকে। কলকাতা হাইকোর্টের বড় অস্বস্তি তৃণমূল কংগ্রেসের। এদিনের শুনানির সময়ে প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেন, হেরিটেজ বিল্ডিং না হলেও, কি যে কেউ গিয়ে যে কোন জায়গায় দলীয় কার্যালয় বানিয়ে ফেলতে পারে? তিন সপ্তাহের মধ্যে পুরসভাকে কড়া পদক্ষেপ করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ১৯ ডিসেম্বর।
বর্তমানে জোড়াসাঁকোয় একটা অংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসাবে ব্যবহার করা হয়। রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসও রয়েছে। কিন্তু এই ভবনেরই একাংশে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় করা হয়। শুরু হয় রাজনৈতিক নেতাদের আনাগোনা। তা নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক তৈরি হয়। সম্প্রতি একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। হাইকোর্ট আগেই এই অফিস সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। হোর্ডিং খোলা হলেও দলীয় কর্মীদের আনাগোনা লেগেই ছিল।
সোমবার ফের হাইকোর্টে এই মামলার শুনানি ছিল। এই মামলায় আগেই রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে হলফনামা জমা দেওয়া হয়েছিল। সওয়াল জবাবের সময়েই প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেন, “হেরিটেজ বিল্ডিং না হলেও কি যে কেউ গিয়ে কোথাও পার্টি অফিস বানিয়ে ফেলতে পারে?” রাজ্যের আইনজীবীর কাছে জানতে চাওয়া হয়, “আপনাদের কাছে কি কোনও প্রসেশন পেপার রয়েছে? না থাকলে এটা বেআইনি নির্মাণ ধরে নেওয়া হবে।” এরপর পুরসভার কাছেই জানতে চাওয়া হয়, “আপনাদের কেউ ওই ঘর ব্যবহারের জন্য দিয়েছিল?” এর প্রেক্ষিতে কলকাতা পুরসভার তরফে জানানো হয়, পুরসভার হেরিটেজ দফতর ইতিমধ্যেই বেআইনি নির্মাণ খুঁজে পেয়েছে। মামলাকারীর আইনজীবী শ্রীজীব চক্রবর্তী আদালতের নজরে আনেন, দলীয় কার্যালয় এখনও রয়েছে। তাঁর বক্তব্য, “পুলিশের উচিত কার্যালয় বন্ধ করে ওই ঘর রবীন্দ্রভারতীকে ফিরিয়ে দেওয়া।” যদিও এদিন তৃণমূলের তরফে সওয়াল করা হয়, “ওই ঘরে আগে সিপিএমের দলীয় কার্যালয় ছিল। এখন তৃণমূলের রয়েছে।” এদিনের শুনানির প্রেক্ষিতে আদালতের পর্যবেক্ষণ হেরিটেজ নির্মাণ ভেঙে ফেলা যায় না। ভেঙে ফেলা অংশের পুনরুদ্ধার প্রয়োজন। অনুমতি ছাড়া নতুন নির্মাণও নয়। আদালতের গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ হেরিটেজ ঘোষিত না হলেও কি কোনওভাবে যে কোনও নির্মাণ ভেঙে দলীয় কার্যালয় নির্মাণ করা যায়?





