Junior Doctors Protest in Medical College: ফের হেনস্থার শিকার জুনিয়র চিকিৎসকরা! নিরাপত্তার লিখিত আশ্বাসেই কর্মবিরতি উঠল মেডিকেল কলেজে
Kolkata Medical College Doctors Protest: চিকিৎসকদের দেওয়া লিখিত আশ্বাসে বলা হয়েছে, এক মাসের মধ্যেই রাতে জেনারেল এমার্জেন্সি বিভাগ, স্ত্রী রোগ এমার্জেন্সি বিভাগ, ইএনটি ও শিশুরোগের এমার্জেন্সি বিভাগে পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে।
কলকাতা: ফের হেনস্থার শিকার জুনিয়র চিকিৎসকরা (Junior Doctors)। এ বার আক্রান্ত কলকাতা মেডিকেল কলেজের কর্তব্যরত জুনিয়র চিকিৎসকরা। গর্ভবতী এক মহিলার চিকিৎসা কেন্দ্র করেই ঝামেলার সূত্রপাত হয়। সেই সময় এমার্জেন্সি বিভাগে (Emergency Ward) একাধিক রোগী আসায়, ওই মহিলাকে বসতে বলা হয়েছিল। এই কথা বলার পরই ওই মহিলার পরিবারের সদস্যরা জুনিয়র চিকিৎসকদের উপর চড়াও হয়, দুই চিকিৎসককে হেনস্থা করা হয়। হামলার প্রতিবাদে কর্মবিরতি ঘোষণা করে জনিয়র চিকিৎসকরা। শেষে হাসপাতালের এমএসভিপি এসে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা দেওয়ার লিখিত আশ্বাস দেন। ৯ ঘণ্টা পর কর্মবিরতি তুলে নেন চিকিৎসকরা।
গোটা ঘটনার সূত্রপাত হয় শনিবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ইডেন বিল্ডিংয়ে চিকিৎসকদের কাছে আসেন ৬ মাসের গর্ভবতী এক মহিলা। চিকিৎসকরা প্রাথমিক পরীক্ষার পরই জানান, গর্ভস্থ সন্তানের দুদিন আগেই মৃত্যু হয়েছে। সেই সময় এমার্জেন্সি বিভাগে একাধিক রোগী আসায়, ওই মহিলাকে বসতে বলা হয়। এরপরই চিকিৎসকদের উপর চড়াও হয় রোগী পরিবার। তাদের রোগীকে আগে না দেখে, অন্য রোগীকে কেন চিকিৎসকেরা দেখতে গিয়েছেন, এই অভিযোগেই চিকিৎসকদের মারধর করতে উদ্যত হয় তারা। দুই জুনিয়র চিকিৎসকদের হেনস্থা করা হয়েছে বলেই জানা গিয়েছে।
জুনিয়র চিকিৎসক ও প্রত্য়ক্ষদর্শীদের দাবি, ওই মহিলার গর্ভস্থ সন্তানের যে দুদিন আগেই মৃত্যু হয়েছে, তা আগে থেকেই জানত রোগী পরিবার। গোটা বিষয়টি জানার পরও চিকিৎসকদের উপর চ়ড়াও হওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন চিকিৎসকরা। হেনস্থার অভিযোগে অনির্দিষ্টকালের জন্য এমার্জেন্সি বিভাগে কর্মবিরতির ঘোষণা করেন তারা। ভোররাতেই বউবাজার থানায় ওই রোগী পরিবারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগও দায়ের করেন জুনিয়র চিকিৎসকরা।
এদিকে, জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতির জেরে গতকাল রাতে সবকটি এমার্জেন্সি বিভাগেই কাজ বন্ধ ছিল বলে জানা গিয়েছে। তবে সিনিয়র চিকিৎসকেরা গুরুতর অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসা করেছেন। বিক্ষোভের খবর পেয়েই হাসপাতালে ছুটে আসেন এমএসভিপি। তিনি জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের সমস্ত অভিযোগ শোনেন। বারংবার রোগী পরিবারের হাতে হেনস্থার শিকার হওয়ায় চিকিৎসকেরা যে নিরাপত্তার দাবি জানান, তা মেনে নেন তিনি। লিখিত আশ্বাস দেওয়ার পরই কর্মবিরতি তুলে নেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। গতকাল রাত থেকে প্রায় ৯ ঘণ্টা ধরে চলে এই কর্মবিরতি।
জানা গিয়েছে, চিকিৎসকদের দেওয়া লিখিত আশ্বাসে বলা হয়েছে, এক মাসের মধ্যেই রাতে জেনারেল এমার্জেন্সি বিভাগ, স্ত্রী রোগ এমার্জেন্সি বিভাগ, ইএনটি ও শিশুরোগের এমার্জেন্সি বিভাগে পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে। প্রতিদিন রাতেই কমপক্ষে ২৫ জন পুলিশকর্মী জরুরি বিভাগগুলিতে মোতায়েন করা হবে বলে জানানো হয়েছে। এছাড়া হাসপাতালে নিরাপত্তা ব্য়বস্থা খতিয়ে দেখতে এমএসভিপির নেতৃত্বে একটি নজরদারি কমিটি গঠন করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।
লিখিত আশ্বাস পাওয়ার পর জুনিয়র চিকিৎসকরা কর্মবিরতি তুলে নিলেও, তারা জানিয়েছেন, এক মাসের মধ্য়ে যদি নিরাপত্তার ব্যবস্থা না করা হয়, তবে ফের কর্মবিরতিতে বসবেন তারা।
এদিকে, ২০১৯ সালে এনআরএস কাণ্ডের পরে এই প্রথম কোনও মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসক নিগ্রহের ঘটনা এবং তার জেরে কর্মবিরতিতে বসলেন চিকিৎসকরা। এনআরএস কাণ্ডের মতোই এবারের অবস্থান বিক্ষোভও যাতে বড় আকার না নেয়, তার জন্য মাঝরাতেই হাসপাতালে ছুটে আসেন এমএসভিপি। তাঁর লিখিত আশ্বাসেই কর্মবিরতি তুলে নেন চিকিৎসকরা।