বিবেকানন্দের জন্মদিনেই ফের বাংলায় পা রাখছেন শাহ!
১২ জানুয়ারি অমিত রাজ্যে এলে নেতাজির জন্মজয়ন্তী উদযাপন নিয়েও পৃথক বৈঠক করতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে।
কলকাতা: ফের বঙ্গে আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। ১২ জানুয়ারি স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে বাংলায় আসছেন তিনি। এখনও পর্যন্ত খবর রয়েছে, তিনি সেদিন হাওড়াতে জনসভা করতে পারে। তবে তাঁর কর্মসূচির নির্ঘণ্ট এখনও নির্ধারিত হয়নি।
বাংলায় এসে অমিত শাহ নিজেই বলে গিয়েছেন, জানুয়ারি থেকে প্রত্যেক মাসেই তিনি এখানে আসবেন, জনসভা করবেন, দলীয় কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। তবে এবার তাঁর আসার অন্যতম কারণ বিবেকানন্দের জন্মদিন উদযাপনই। এদিকে, নেজাতির ১২৫ তম জন্মজয়ন্তীও বিশেষভাবে উদযাপনের কথা ভাবছেন বলে টুইট করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ১২ জানুয়ারি অমিত রাজ্যে এলে নেতাজির জন্মজয়ন্তী উদযাপন নিয়েও পৃথক বৈঠক করতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে।
রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, বাংলার শাসকদল যেখানে প্রধান বিরোধীপক্ষকে ‘বাংলার সংস্কৃতি’কে হাতিয়ার করেই বিঁধবার চেষ্টা করছে, সেখানে দাঁড়িয়ে গেরুয়া শিবিরও চাইছে বাংলার আবেগের রন্ধ্রে প্রবেশ করতে। নেতাজি, বিবেকানন্দ কিংবা বিরসা মুণ্ডার মতো মহর্ষিরা আজ কি কেবল রাজনীতির ফায়দা তোলার চাবিকাঠি হয়ে উঠেছেন? বাংলা সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে বিজেপি এতটাই এখন মরিয়া যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আন্তর্জাতিক মঞ্চের ‘ব্যাকগ্রাউন্ড’এও থাকছে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের ছবি। বাঙালিদের একাংশ অবশ্য বলছেন, বাংলার সংস্কৃতি আন্তর্জাতিকভাবে তুলে ধরতে চাইছেন মোদি। আবার তাতে বিরক্ত রাজনৈতিক মহলেরই একাংশ।
তবে রাজনীতির কুশীলবরা কিন্তু এসবের পিছনে অন্য গন্ধই পাচ্ছেন! রাজনীতির বিশ্লেষকরা বলছেন, শাসক কিংবা বিরোধী- বাংলার যুযুধান প্রতিপক্ষ এখন ব্যস্ত ‘নীলবাড়ি’ দখলের লড়াইয়ে। আর তাতে গতি আনতে বাঙালি আবেগকে জয় করতে চাইছেন তাঁরা।
নেতাজি, বিরসা মুণ্ডা কিংবা পঞ্চানন বর্মার জন্মদিনে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেই হোক, কিংবা তাঁদের জন্মদিন ‘বিশেষভাবে’ উদযাপনের নয়া রেওয়াজ তৈরি করেই হোক- আখেরে দুই রাজনৈতিক দলই যে একুশের লড়াইয়ের আগে ভোটব্যাঙ্ক সুদৃঢ় করতে চাইছেন, তা স্পষ্ট রাজনৈতিক মহলের কাছে।
আরও পড়ুন: ‘দুয়ারে সরকার’এর প্রথম সারির কর্মীদের মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির পথেই ‘পেটাল’ পুলিস
অনেকেই বলেন, অমিত শাহ বাংলাকে চেনেন নিজের হাতের তালুর মতো। এখানকার এক্কেবারে মূলস্তরের সংগঠনের সঙ্গে পরিচিত রন্ধ্রে রন্ধ্রে। তাই একুশের আগে শাহকেই বারবার ‘কাছে’ পেতে চাইছেন বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব। অমিত শাহ নিজেও বেশি সময় দিতে চাইছেন বাংলাতেই। রাজনৈতিক মহলে আড়ি পাতলে শোনা যাচ্ছে এমনই গুঞ্জন। সেক্ষেত্রে বছরের প্রথমেই বঙ্গসফরে আসার ক্ষেত্রে ১২ জানুয়ারি থেকে আর ভাল দিন কী হতে পারে! জানেন পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদও।