৩০ শতাংশ ভোট নিয়ে সরকার বানাত মমতা, তাই এত কাটাকাটা-মারামারি: বিজেপি

এই পরিস্থিতিতে একুশের নির্বাচনের আগে বঙ্গ রাজনীতির প্রেক্ষাপটে নয়া সমীকরণ তৈরি হতে চলেছে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

৩০ শতাংশ ভোট নিয়ে সরকার বানাত মমতা, তাই এত কাটাকাটা-মারামারি: বিজেপি
ফাইল ছবি
Follow Us:
| Updated on: Jan 03, 2021 | 3:59 PM

কলকাতা: আসন্ন নির্বাচনে আব্বাস সিদ্দিকির নেতৃত্বেই বাংলায় লড়বে মিম। ফুরফুরা শরিফে আসার পর স্পষ্টই একথা ঘোষণা করে দিয়েছেন আসাউদ্দিন ওয়েইসি। তবে এখনও পর্যন্ত জল্পনা জিইয়ে রেখেছেন আব্বাস সিদ্দিকি। বিকালেই তাঁর সাংবাদিক বৈঠক করার কথা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে একুশের নির্বাচনের আগে বঙ্গ রাজনীতির প্রেক্ষাপটে নয়া সমীকরণ তৈরি হতে চলেছে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

আব্বাস সিদ্দিকি শুধু ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন, “আমার সঙ্গে অনেকেই কথা বলেছেন। প্রত্যেকেই আমার মুখটা সামনে রেখে লড়তে চাইছেন। আমাদের লড়াই দুর্নীতির বিরুদ্ধে। বাংলায় সুশাসন প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে সঙ্গ দেব আমরা।” অর্থাৎ সিদ্দিকি যে এখনই তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করতে চান না, তা পরিষ্কার।

এবিষয়ে এখনও মুখ খুলতে চাইছে না বাম-কংগ্রেস জোট। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি ওয়েইসির প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান সিদ্দিকি, তাহলে একুশে ভোট বিশেষ করে সংখ্যালঘু ভোট ভাগাভাগির আশঙ্কা থাকছে। ভোটব্যাঙ্কের ঝুলিতে তার প্রভাব পড়বে।

তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ” সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা করেছেন, তা বাইরে থেকে অন্য কোনও লোক এসে সংখ্যালঘুদের যে ঐক্য তা ভাঙাতে পারবেন না। তাঁরা জানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে তাঁরা কতটা সুরক্ষিত! ”

বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় কিন্তু তৃণমূলকে বিঁধতে ছাড়লেন না। বললেন, “আজকে তৃণমূলের বুক ধড়পড়ানি বেড়ে গিয়েছে। তাঁরা পকেট থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে বলে দুঃখ হচ্ছে। কোনও খান, কোনও ওয়েইসি, কোনও ফুরফুরা শরিফ সরকার গঠন করবে না। এই তিরিশ শতাংশ ভোট নিয়ে সবাইয়ের কাটাকাটি মারামারি চলছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই তিরিশ শতাংশ ভোট নিয়েই সরকার বানাত। এখন ওঁ যখন বুঝে গিয়েছে তিরিশ শতাংশ ভোট অন্যের পকেটে চলে যাচ্ছে, তখন মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে।”  অন্যদিকে কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেন, “৫১ শতাংশ ভোটকে লক্ষ্য রেখে বিজেপি এগিয়ে চলেছে। কেউ কোনওরকম সেখানে বাধা দিতে পারবে না।”

উল্লেখ্য, একুশের নির্বাচনে বাংলায় প্রার্থী দেবে বলে আগেই চমকে দিয়েছিলেন ওয়াইসি। এরপর আচমকাই ফুরফুরা শরিফে তাঁর আগমন রাজনৈতিক মহলে আরও বেশি করে প্রভাব ফেলল। প্রথম থেকেই অ-বিজেপি শক্তিগুলি বলে আসছিল, ওয়েইসি আসলে এখানে বিজেপি-র বি টিম হিসাবে কাজ করছে। যদিও তা প্রথম থেকেই উড়িয়ে দিয়েছেন ওয়েইসি। বিজেপির হয়ে ভোট কাটাকাটির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন মিম সুপ্রিমো।

আরও পড়ুন: অভিষেকের সফরের আগেই তপ্ত পাহাড়, পড়ল গুরংবিরোধী পোস্টার, পুড়ল গাড়ি

তবে এক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের বক্তব্য, ওয়েইসি বুঝতে পেরেছেন, বাংলায় তাঁর কোনও প্রভাব পড়বে না। কারণ এক সাংবাদিক বৈঠকে ওয়াইসির কটাক্ষ করতে গিয়ে ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেছিলেন, “বাংলায় উর্দুভাষী মুসলিম রয়েছেন মাত্র ৬ শতাংশ।” হয়তো সেই হিসাব করেই আব্বাস সিদ্দিকির স্মরণে এসেছেন ওয়েইসি। বলছে রাজনৈতিক কুশীলবরা। তবে আব্বাস এখন কোন পথে হাঁটে, তার দিকেই তাকিয়ে গোটা বাংলা।