উচ্চস্বরে বাজছে গান, তৃণমূলের ডাক্তার-বিধায়কের মুখে নেই মাস্ক! কলকাতা মেডিক্যালে ‘জমজমাট’ রাখিবন্ধন

Medical College Kolkata: রাজ্যের প্রথম সারির মেডিক্যাল কলেজের চিত্রটা যদি এরকম হয়, তা হলে সাধারণ মানুষের কাছে কী বার্তা যায় তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে চিকিৎসক সংগঠনগুলি।

উচ্চস্বরে বাজছে গান, তৃণমূলের ডাক্তার-বিধায়কের মুখে নেই মাস্ক! কলকাতা মেডিক্যালে 'জমজমাট' রাখিবন্ধন
ছবি অমিত দাস
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 22, 2021 | 5:47 PM

কলকাতা: কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে মাইক বাজিয়ে রাখিবন্ধন উৎসব পালন হল। সেই উৎসব উদযাপনে উপস্থিত ছিলেন চিকিৎসক-বিধায়ক তথা রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের সভাপতি নির্মল মাজি। থিক থিক করছে অধ্যক্ষ, চিকিৎসক, স্বাস্থ্য কর্মীদের ভিড়। ‘দর্শকের’ সংখ্যাও নেহাত কম নয়। অথচ অনুষ্ঠানের ‘মধ্যমণি’ নির্মল মাজি-সহ চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদেরও একাংশের মুখে নেই মাস্ক। স্বাস্থ্যবিধিও শিকেয় তুলে রাখা। নাচে-গানে জমজমাট রাজ্যের প্রথম সারির সরকারি কোভিড হাসপাতাল চত্বর। অতিমারির আবহে এই ধরনের কাণ্ড স্বভাবতই বিতর্ক তৈরি করেছে। রাজ্যের প্রথম সারির মেডিক্যাল কলেজের চিত্রটা যদি এরকম হয়, তা হলে সাধারণ মানুষের কাছে কী বার্তা যায় তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে চিকিৎসক সংগঠনগুলি।

সংগঠনের প্রতিনিধিদের বক্তব্য, সংক্রমণ বাড়তে পারে এই আশঙ্কায় লোকাল ট্রেন পরিষেবা চালু করা হয়নি। এখনও বন্ধ স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ও। সেখানে রাজ্যের প্রথম সারির কোভিড হাসপাতাল তথা মেডিক্যাল কলেজে এ ধরনের বর্ণাঢ্য উৎসব পালন অনভিপ্রেত। চিকিত্‍সকদের একাংশের প্রশ্ন, পুলিশ প্রশাসন কী ভাবে এই অনুষ্ঠানের অনুমতি দিল? তাঁদের অভিযোগ, এখানে মানা হয়নি স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশিকাও। ভ্যাকসিনের দু’টি ডোজ নেওয়া থাকলেও পড়তে হবে মাস্ক, মানতে হবে দূরত্ববিধি। এই নির্দেশিকার কথা কি জানে না মেডিক্যাল কলেজ? উঠছে প্রশ্ন।

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে এদিনের রাখিবন্ধন উৎসব পালন নিয়ে যে বিতর্ক বেশ কয়েকটি প্রশ্ন উষ্কে দিয়েছে। রাখিবন্ধন উৎসব উপলক্ষে হাসপাতাল চত্বরে উচ্চস্বরে মাইক বাজিয়ে মেডিক্যাল কলেজের স্বাস্থ্যকর্মী-পড়ুয়াদের এদিন নৃত্য পরিবেশন করতে দেখা যায়। চিকিৎসক মহলের একাংশের প্রশ্ন, এ ভাবে কি কোনও হাসপাতালে মাইক বাজিয়ে অনুষ্ঠান উদযাপন করা যায়? দ্বিতীয়ত, এই অনুষ্ঠান চলাকালীন চিকিৎসক-অধ্যক্ষ থেকে স্বাস্থ্যকর্মী, কেউই স্বাস্থ্য়বিধি মেনে জমায়েত করেননি। স্বাস্থ্যবিধি বলছে, দু’জনের মাঝে ৬ ফুটের দূরত্ব থাকতে হবে। অভিযোগ, এ দিন তা মানা হয়নি। কলকাতার কোভিড হাসপাতালেই যদি এ ভাবে অতিমারি বিধিকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখানো হয়, তা হলে বাকিদের জন্য তা ভুল দৃষ্টান্ত তৈরি করবে না?

অনেক চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীই হয়ত বলতে পারেন তাঁদের টিকার দু’টি করে ডোজ় ইতিমধ্যেই নেওয়া রয়েছে। কিন্তু স্বাস্থ্য দফতরের টিকাকরণের প্রশ্নোত্তরে স্পষ্ট বলে দেওয়া হয়েছে, ভ্যাকসিনের দু’টি ডোজ় নেওয়া থাকলেও কোভিড বিধি মানতে হবে। টিকা নেওয়ার পর‌ও কি মাস্ক পরতে হবে, দূরত্ববিধি মানতে হবে। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, হ্যাঁ, টিকার দুটি ডোজ নিলেও তা মেনে চলতে হবে। প্রশ্ন উঠছে, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ কি স্বাস্থ্য দফতরের এই নির্দেশিকা সম্পর্কে অবহিত নন! যদিও এই ঘটনায় নির্মল মাজির বা হাসপাতালের তরফে এখনও কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। আরও পড়ুন: নজরে দেশের স্বাস্থ্যও, আফগানিস্তান থেকে ফিরতেই পোলিও টিকাকরণের ব্যবস্থা কেন্দ্রের