AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

নাম খোয়াল মুখ্যমন্ত্রীর প্রকল্প, ‘চোখের আলো’ নামে আর শিবির নয়

স্বাস্থ্য ভবনের খবর, 'চোখের আলো' (Chokher Alo) প্রকল্পের নামের গেঁরোতেই এ হেন সিদ্ধান্ত।

নাম খোয়াল মুখ্যমন্ত্রীর প্রকল্প, 'চোখের আলো' নামে আর শিবির নয়
ফাইল ছবি
| Updated on: Mar 02, 2021 | 12:19 PM
Share

কলকাতা: আলোহীন হয়ে পড়ল চোখের আলো প্রকল্প। চোখের আলো (Chokher Alo)  নাম দিয়ে আর কোনও শিবির করা যাবে না- ঠিক এই ভাষাতেই রাজ্যের বিভিন্ন পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্র, চক্ষু হাসপাতালগুলির কর্তাদের হোয়াটস অ্যাপ বার্তা পাঠিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। স্বাস্থ্য ভবনের খবর, প্রকল্পের নামের গেঁরোতেই এ হেন সিদ্ধান্ত।

প্রচারের পায়ে তো বেড়ি পড়ল। সঙ্গে নামও খোয়ালো মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর (CM Mamata Banerjee)  হাত ধরে শুরু হওয়া চোখের আলো প্রকল্প। স্বাস্থ্য দফতরের খবর, চোখের আলো নাম দিয়ে আর কোনও শিবির করা যাবে না। সোমবার রাজ্য, জেলা, ব্লক স্তরের স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলিকে হোয়াটসঅ্যাপ বার্তা পাঠানো হয়েছে। ইংরাজি ও বাংলায় দুটি বার্তা এদিন প্রকল্প পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকদের মোবাইলে পাঠানো হয়েছে।

বাংলা বার্তাটি হল, ‘চোখের আলো নামে আর ক্যাম্প করা যাবে না। শুধু ন্যাশনাল প্রিভেনশন ফর কন্ট্রোল অব ব্লাইন্ডনেসের অন্তর্গত চক্ষু পরীক্ষার শিবির করা যাবে। মাইক, ব্যানার প্রচার ছাড়া তা করতে হবে। চশমা বিলি শুধু হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতেই হবে। ‘

‘চোখের আলো’ নাম বিয়োগ সংক্রান্ত হোয়াটস অ্যাপ বার্তা জারির সঙ্গে প্রকল্প কীভাবে চলবে, সে বিষয়ে একটি আপাত নির্দেশিকাও স্বাস্থ্যভবনের তরফে জারি করা হয়েছে।

এই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে পরবর্তী নির্দেশিকা জারি না হওয়া পর্যন্ত শিবির চলবে। তবে তাতে কোনও জাঁকজমক চলবে না। শিবির থেকে কোনও চশমা বিলি করা যাবে না। কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তি বা দলের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ যোগ যেন না থাকে। ব্যানার, পোস্টার, মাইকের ব্যবহার করতে হবে অত্যন্ত সন্তর্পণে।

এ হেন সিদ্ধান্তের পিছনে দুটি কারণ থাকতে পারে বলে স্বাস্থ্যভবনের অন্দরে শোনা যাচ্ছে। স্বাস্থ্যভবনের আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, নির্বাচনী বিধি এড়াতেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। তাহলে প্রশ্ন উঠছে, একই বিধি তাহলে স্বাস্থ্যসাথীর ক্ষেত্রে বলবৎ হবে না কেন? বক্তব্যের সূত্র ধরেই স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের একাংশ বলছেন, আসলে ‘চোখের আলো’ প্রকল্পটি নতুন কিছু নয়। ‘ন্যাশনাল প্রোগাম ফর প্রিভেনশন অব কন্ট্রোল ব্লাইন্ডনেস’ই নাম বদলে হয়েছে চোখের আলো। ভোট বিধি জারি হওয়ায় এই নিয়ে প্রশ্ন ওঠার আশঙ্কা থেকেই এই সিদ্ধান্ত।

যদিও স্বাস্থ্যদফতরের কর্তাদের বক্তব্য ভিন্ন। দফতরের চক্ষু বিভাগের এক কর্তার কথায়, প্রকল্প বন্ধ হচ্ছে না। সব দিক বজায় রেখে কীভাবে প্রকল্প চালু রাখা যায়, তা দেখা হচ্ছে। ‘চোখের আলো’ প্রকল্পের নাম রাখা যায় কিনা, এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের পরামর্শ চাওয়া হচ্ছে। এদিকে, কেন এই হোয়াটস অ্যাপ বার্তা দেওয়া হল, তা নিয়ে খোঁজ নেওয়ার কথা বলছেন স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম।

এ প্রসঙ্গে চিকিৎসক দেবাশিস দেবাংশু বলেন,  “কেন একটা নতুন করে প্রকল্প তৈরি করতে হল, যেটা কেন্দ্রীয় সরকারের আগে থেকেই ছিল? তাহলে কি নাম কিনতেই এই প্রচেষ্টা?  চোখের আলো প্রকল্পের যে টাকা তা কিন্তু আসছে ন্যাশনাল প্রিভেনশন ফর কন্ট্রোল অব ব্লাইন্ডনেসের তহবিল থেকেই। তাহলে প্রকল্পের নতুন নাম কেন? তাতে নির্বাচন বিধি লঙ্ঘন করা হচ্ছে।”

আরও পড়ুন:  ফিরহাদ-অরূপ যেন ভোটে না লড়েন! নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি বিজেপির

এবিষয়ে চিকিৎসক সংগঠনের নেতা শান্তনু সেন বলেন, “আমাদের রাজ্যে সরকারি পরিষেবা একদম বিনামূল্যে দেওয়া হয়। কেন্দ্রের বঞ্চনার শিকার হয় বাংলা। বাংলাকে কেন্দ্রকে অনুকরণ করতে হয় না। উল্টে দেখেছি কেন্দ্রই বাংলাকে অনুকরণ করতে গিয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে। যারা স্বাস্থ্য সাথী ও চোখের আলো প্রকল্পের সুবিধা নিতে যাচ্ছেন, তাদের প্রতি নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে অবিচার করা হচ্ছে। চোখের আলো প্রকল্পে যে মানুষটা ছানি কাটাতে যাচ্ছে, তাকে বাধা দেওয়া হচ্ছে। ”