ছিল টিউমার, হয়ে গেল ‘সেদ্ধ ডিম’! আর জি কর-এর চিকিৎসকরা বলছেন, এমন ডিম শরীরেই তৈরি হয়!

বিস্ময়ের ঘোর কাটল না চিকিৎসকদের। অপারেশন টেবল আলো করে রয়েছেন এক অণ্ডা! এমন যেন এখুনি কেটে খাওয়া যাবে! প্রায় পাঁচ সেন্টিমিটার লম্বা হৃষ্টপুষ্ট এই ডিমের রহস্য কী?

ছিল টিউমার, হয়ে গেল 'সেদ্ধ ডিম'! আর জি কর-এর চিকিৎসকরা বলছেন, এমন ডিম শরীরেই তৈরি হয়!
রহস্যজনক ডিম , নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 08, 2020 | 9:30 PM

সৌরভ দত্ত: ভাবা হয়েছিল টিউমার। বেরল আস্ত সেদ্ধ ডিম! আর জি কর হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের টেবিলে যা দেখে মঙ্গলবার সকালে তাজ্জব বনে যান সার্জারি বিভাগের চিকিৎসকেরা।

আর জি কর হাসপাতাল সূত্রের খবর, দমদমের বাসিন্দা ৫২ বছরের রোগী মাস পাঁচেক ধরে তলপেটে ব্যথায় ভুগছিলেন। ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে গত বৃহস্পতিবার আর জি কর হাসপাতালের সার্জারির বহির্বিভাগে ইউনিট ফোরের চিকিৎসকদের প্রথমে দেখান ওই রোগী। মূত্রথলিতে সংক্রমণের জন্য তলপেটে ব্যথা হতে পারে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করেন চিকিৎসকেরা। আল্ট্রাসোনোগ্রাফির রিপোর্টের পরে সংক্রমণ নয়, মূত্রথলিতে টিউমার থাকার কারণে ব্যথা হচ্ছে বলে চিকিৎসকেরা অনুমান করেন। সিটি স্ক্যানের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরে মূত্রথলির পাশাপাশি টিউমারের অবস্থান খাদ্যনালী হওয়ার সম্ভাবনা হতে পারে বলে মনে হয় চিকিৎসকদের।

আরও পড়ুন :  কমছে দৈনিক সংক্রমণ, বাড়ছে স্বস্তি, প্রতিষেধক পাওয়ার অপেক্ষায় দেশ

মঙ্গলবার সকালে অস্ত্রোপচার করে মাঝবয়সী ব্যক্তির পেট থেকে টিউমার বার করার সিদ্ধান্ত নেন সার্জারির ইউনিট ফোরের চিকিৎসকেরা। তলপেট কাটতেই মিলল প্রায় পাঁচ সেন্টিমিটার লম্বা ডিমের সন্ধান! আস্ত ডিম হজম না হয়ে পেটের মধ্যে অস্বস্তির কারণ হয়েছিল তা কিন্তু নয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ব্যাখ্যা মেনেই পেটের মধ্যে বাসা বেঁধেছে। তবে সচরাচর এ ধরনের ঘটনার খোঁজ মেলে না।

আরও পড়ুন :  ‘কেরামতি বালব’ কিনে ৯ লক্ষ টাকা খোয়ালেন ব্যবসায়ী

চিকিৎসকেরা বলছেন, দেহতন্তুর সঙ্গে চর্বি, ক্যালসিয়াম জমাট বেঁধে ডিমের মতো আকার ধারণ করে। চিকিৎসকদের পরিভাষায় যে রোগের নাম ‘পেরিটোনিয়াল লুজ বডি বা অ্যাবডমিনাল মাইস’। চিকিৎসকেরা বলছেন, প্রায় পাঁচ সেন্টিমিটার লম্বা ডিম্বাকৃতি দেহতন্তু খুব একটা দেখা যায় না। পুরুষদের ক্ষেত্রে অ্যাপেন্ডিক্স গলে বা বৃহদন্ত্রের গা থেকে মাংস খসে এবং স্ত্রী রোগীদের ক্ষেত্রে জরায়ুর গা থেকে ছোট টিউমার খসে এ ধরনের দেহতন্তু তৈরি হতে পারে। গত সত্তর বছরে সারা পৃথিবীতে এ ধরনের নথিভুক্ত ঘটনার সংখ্যা তিরিশেরও কম।