Durga Pujo 2021: অক্সিজেন সিলিন্ডার চাই! অষ্টমী থেকেই ফোন আসতে শুরু করেছে রেড ভলেন্টিয়ার্সদের কাছে
Durga Pujo 2021: ইতিমধ্যে অক্সিজেন কিংবা হাসপাতালে বেডের প্রয়োজনে রেড ভলেন্টিয়ার্সদের কাছে ফোন আসতে শুরু করেছে! ভয় পাচ্ছেন তাঁরা!
কলকাতা: গত ছ’মাসে চরম সঙ্কটের সময় ওঁদেরকে পাশে পেয়েছেন অনেকেই। যখনই বিপদে পড়েছেন, ডাক দিয়েছেন অথবা ডাকেনওনি… নিজেরাই খবর পেয়ে ওঁত পেতে পড়েছিলেন সেখানে। কখনও কাঁধে করে অক্সিজেন সিলিন্ডার পৌঁছেছেন বাড়িতে, কখনও ক্যান্টিনের খাবার, কখনও হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া-গত ছ’মাসে সেই সব রেড ভলেন্টিয়ার্সদের কথা অস্বীকার করতে পারবেন, এমন বোধহয় হাতেগোনা ক’জনই আছেন! রাজনীতির উর্ধ্বে, রঙের উর্ধ্বে কাজ করেছেন। এবারের পুজোটা নিয়ে ছিল অনেক সতর্কবাণী। কোভিডের তৃতীয় ঢেউয়ের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বাংলা। কিন্তু সেলফি, গ্রুপফি, কানে মাস্ক, অরক্ষিত মুখের ভিড় ভয় ধরাচ্ছে মনে। ভয় পাচ্ছেন করোনার বিরুদ্ধে লড়া প্রথম সারির যোদ্ধা রেড ভলেন্টিয়ার্সরাও।
অক্টোবরের শুরুর দিক থেকেও পজিটিভিটি রেট তুলনা করলে দেখা যাচ্ছে, বাংলায় তা ১.৭৮ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে। জেলার ক্ষেত্রে ফল আরও মারাত্মক। ৩ শতাংশের বেশি পজিটিভিটি রেট, এমন জেলার সংখ্যাই রয়েছে চার। কলকাতার পরই সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত সংখ্যা দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, নদিয়ায়।
১ সেপ্টেম্বর থেকে ১২ অক্টোবরের মধ্যে করোনার গ্রাফচিত্রের উর্ধ্বমুখী হার দেখে শঙ্কিত বিশেষজ্ঞরাও। চিকিত্সকরা জানাচ্ছেন, গত ৪ দিনে ১.২ শতাংশ থেকে বেড়েছে। রাজ্যে একদিনে করোনার এই পজিটিভিটি রেট ছিল ২.১৩%। পঞ্চমীতে তা বেড়ে হয় ২.১৫%। ষষ্ঠীর দিন পজিটিভিটি রেট আরও বেড়ে পৌঁছয় ২.৩২ শতাংশে।
পুজোর মধ্যেও ওঁদেরকে মণ্ডপের আশেপাশে ঘোরাফেরা করতে দেখা গিয়েছে। কখনও অরক্ষিত মুখে পরিয়েছেন মাস্ক, কখন স্যানিটাইজার বিলি করেছেন, সঙ্গে ‘ফ্রি’তে সচেতনতা। রেড ভলেন্টিয়ার্সের সদস্যরা ক্লান্ত নন, কাজ করতে চান। কিন্তু ওঁদের কথায়, ‘মানুষকে বোঝাতে গিয়ে ক্লান্ত হচ্ছি। এতটা বিপদ কাটিয়ে উঠেছেন, কটা মাস তো সবে পেরিয়েছে। অক্সিজেনের কী পরিমাণ সঙ্কট ছিল, কিন্তু এরই মধ্যে একটা পুজো ভুলিয়ে দিল সব!” প্রাণের পুজোয় যেন বাঙালি প্রাণটাই বাজি রেখেছে।
দীপ্সিতা ধর বললেন, “সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা উচিত ছিল, মাস্ক পরা উচিত ছিল। উচিত তো ছিল অনেক কিছুই করা। সরকারের তরফ থেকেও অনেক নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। মানুষকে আরও বেশি সচেতন হওয়া উচিত ছিল। কোটি কোটি টাকা পুজোর পিছনে খরচ হচ্ছে। আমরা সবাই এখন একটা আশঙ্কায় ভুগছি।”
রেড ভলেন্টিয়ার্সের সদস্য শুভঙ্কর দাস বলেন, “দুর্গাপুজো বাঙালির শ্রেষ্ঠ উত্সব। মানুষের আবেগ, ভালবাসা থাকবেই। কিন্তু করোনার গ্রাফ বাড়ছে। নিজেদের পাড়ার পুজোয় থাকুন, বাড়িতে আড্ডা দিন। এতে আপনার মন ভাল থাকবে। কিন্তু এইভাবে পুজোর ভিড় বিপদ বাড়াচ্ছে। চিকিত্সক-স্বাস্থ্যকর্মীরা যেভাবে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন, সেটা ব্যর্থ হয়ে যাবে। পরের বারের পুজোটা যাতে আরও ভাল ভাবে কাটাতে পারি, তার জন্য এই বছরটা একটু সচেতন থাকা প্রয়োজন।”
ইতিমধ্যে অক্সিজেন কিংবা হাসপাতালে বেডের প্রয়োজনে রেড ভলেন্টিয়ার্সদের কাছে ফোন আসতে শুরু করেছে! ভয় পাচ্ছেন তাঁরা! শুধু বলছেন, ‘এত চেষ্টা করা হচ্ছে, কিন্তু মানুষ সব ভুলে গিয়ে আবার একই কাজ করছে.. সেটাই খারাপ লাগার। আমরা তো আছি, থাকব। তবে সাধারণকেও সচেতন হতে হবে।’