বাড়িতেই খুন করে দাহ করা হয় অর্জুনকে, নেপথ্যে কি তন্ত্র সাধনা? সল্টলেকে ব্যবসায়ী খুনে চাঞ্চল্যকর মোড়
সমস্ত তথ্যপ্রমাণ সামনে রেখে, পুলিসের অনুমান, এই খুনের সঙ্গে গীতা ও বিদুর ছাড়াও আরও কেউ যুক্ত আছে। পাশাপাশি, তন্ত্রসাধনার মত ধর্মীয় বিশ্বাসের যোগ থাকতে পারে বলেই মনে করেছেন তদন্তকারীদের একাংশ।
সল্টলেক: অভিজাত ব্যবসায়ী অর্জুন মাহেনসরিয়ার খুনে নয়া তথ্য ফাঁস। সন্দেহ আগে থেকেই ছিল। এবার পাকাপোক্ত প্রমাণ পেয়েই অর্জুনের মা গীতা মাহেনসরিয়া ও ভাই বিদুরকে গ্রেফতার করল বিধাননগর(Bidhannagar) থানার পুলিস।
পুলিস সূত্রের খবর, জেরার প্রাথমিক পর্বেই নিজেদের দোষ কবুল করেন গীতা ও বিদুর। খাবারের সঙ্গে মাদক বা ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে প্রথমে বেহুঁশ করার পর মাথায় ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করে খুন করা হয় অর্জুনকে। খুনের(Murder) প্রমাণ লোপাট করতে মৃতদেহ বাড়িতেই পোড়ানোর চেষ্টা করা হয়। অর্ধদগ্ধ সেই দেহ বিছানার চাদরে মুড়ে ছাদেই রেখে দেওয়া হয়। সেই কঙ্কালই বৃহস্পতিবার উদ্ধার করে পুলিস।
আরও পড়ুন : সল্টলেকের অভিজাত ব্যবসায়ীর নিখোঁজ ছেলের খোঁজে বাড়ির ছাদেই মিলল কঙ্কাল
পারিবারিক বিবাদের জেরেই এই খুন(Murder) হয়েছে বলে প্রাথমিক অনুমান পুলিসের। খুন(Murder) করার পরেই রাঁচিতে চলে যান গীতা। অর্থাৎ, প্রায় দুমাস আগে খুন হন অর্জুন। মৃতদেহ পোড়ানোর জন্য সেভাবে দুর্গন্ধও ছড়ায়নি। পড়শিদেরও নজরে আসেনি। বৃহস্পতিবার অকুস্থল থেকে অর্জুনের দেহ উদ্ধারের সময়ে হোম-যজ্ঞ ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানের চিহ্নও পাওয়া গেছে। সিড়িতে ভারী কিছু টেনে নিয়ে যাওয়ার চিহ্নও পেয়েছেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন : লভ-জিহাদ সন্দেহে বিয়েতে বাধা, বিয়ের মণ্ডপ থেকে তুলে আনা হল মুসলিম দম্পতিকে
সমস্ত তথ্যপ্রমাণ সামনে রেখে, পুলিসের অনুমান, এই খুনের সঙ্গে গীতা ও বিদুর ছাড়াও আরও কেউ যুক্ত আছে। পাশাপাশি, তন্ত্রসাধনার মত ধর্মীয় বিশ্বাসের যোগ থাকতে পারে বলেই মনে করেছেন তদন্তকারীদের একাংশ।
আরও পড়ুন : কাঁচি দিয়ে কুপিয়ে খুন স্ত্রীকে, মৃতদেহ আগলে বসে ভিডিয়ো গেমে মত্ত স্বামী
প্রসঙ্গত, মৃত অর্জুনের বাবা অনিল মাহেনসরিয়ার সন্দেহ ছিল স্ত্রী গীতাই তাঁর ছেলেকে অপহরণ করেছে। অনিলের বয়ানের ভিত্তিতেই বৃহস্পতিবার বিকেলে সল্টলেকের এ জে ব্লকের ২২৬ নম্বর বাড়িতে তল্লাশি চালায় পুলিস।
আরও পড়ুন : ধর্ষণের ভিডিয়ো ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দেখিয়ে নির্যাতন নাবালিকাকে, ধৃত তিন সহ এক নাবালক
অনিলকে জেরা করে পুলিস জানতে পারে, সল্টলেকের এ জে ব্লকের বাড়িটি তাঁর স্ত্রী গীতা মাহেনসারিয়ার। ১৯৮৮ সালে গীতার সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। তাঁদের তিনটি সন্তান রয়েছে। বড় ছেলে অর্জুন (২৫)। বাকি দুই সন্তান বিদুর (২২) এবং বৈদেহী (২০)। সম্প্রতি ওই দম্পতির মধ্যে মনোমালিন্যের জেরে অনিল রাজারহাটের একটি আবাসনে একা থাকতেন। সল্টলেকের বাড়িতে থাকতেন স্ত্রী গীতা এবং তাঁদের তিন সন্তান।
আরও পড়ুন : আদিবাসী শিশুদের টিউশন দিতে চান মিমি
অপরাধীরা ধরা পড়লেও অর্জুনকে হঠাৎ কেন খুন হতে হল তা নিয়ে ধন্দে পুলিস। শুক্রবার দুই অভিযুক্তকেই বিধাননগর(Bidhannagar) মহকুমা আদালতে পেশ করে পুলিসি হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানিয়েছে তদন্তকারী দল।