রেস্তোরাঁয় ডিনারের পর পার্কে গল্প, শেষে বাবাকে জ্যান্ত পোড়াল মেয়ে! বীভৎসতায় কাঁপছে কলকাতা

তদন্তে নামে নর্থ পোর্ট থানার পুলিশ (North Port Police Station)। আর যা তথ্য উঠে আসে, তা ভোট আবহেও তপ্ত বাংলাকে রীতিমতো নাড়িয়ে দেয়।

রেস্তোরাঁয় ডিনারের পর পার্কে গল্প, শেষে বাবাকে জ্যান্ত পোড়াল মেয়ে! বীভৎসতায় কাঁপছে কলকাতা
ফাইল ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 22, 2021 | 10:40 PM

কলকাতা: আকাশ তখনও পরিষ্কার হয়নি। ঘাটে গুটি কতক মানুষ। তাঁরাই প্রথম পার্কের ধারে পোড়া মাংসপিণ্ড পড়ে থাকতে দেখেছিলেন। সেটা যে আদৌ কোনও মানুষের হবে, তা ঘুণাক্ষরেও আঁচ করতে পারেননি। কিন্তু বিপদ বুঝেই থানায় খবর দেন তাঁরা। তদন্তে নামে নর্থ পোর্ট থানার পুলিশ (North Port Police Station)। আর যা তথ্য উঠে আসে, তা ভোট আবহেও তপ্ত বাংলাকে রীতিমতো নাড়িয়ে দেয়।

ঘটনাটি রবিবার বিকেলে প্রকাশ্যে আসে। কলকাতার চাঁদপাল ঘাটের (Chandpal Ghat) সামনে পার্কে পোড়া মাংস পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে, আধপোড়া ওই ব্যক্তির নাম বিশ্বজিৎ আঢ্য। বাড়ি তোপসিয়ার ক্রিস্টোফার রোডে। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে বিশ্বজিৎ আঢ্যের মেয়ে পিয়ালিকে শণাক্ত করে পুলিশ। এরপর বছর বাইশের পিয়ালিকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। জেরায় উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।

পুলিশের টানা জেরার মুখে ভেঙে পড়ে পিয়ালি। যা বলেন, তাতে রীতিমতো স্তম্ভিত হয়ে যান দুঁদে পুলিশ কর্তারাও। জানা যায়, শনিবার রাতে রেস্তোরাঁর ডিনার করার নাম করে বাবাকে নিয়ে বেরিয়েছিলেন পিয়ালি। ডিনারও করেছিলেন এক সঙ্গে। পরে নিয়ে গিয়েছিলেন পার্কে, গল্প করবেন বলে। বাবাকে পাশে বসিয়ে গল্পও করছিলেন। মদ্যপান করছিলেন বাবা। এরপর ঘুমিয়ে পড়লে কেরোসিন ঢেলে বাবা জ্যান্ত জ্বালিয়ে দেন তিনি। শিউরে ওঠার মতো ঘটনা।

নিজস্ব ছবি

জেরায় তিনি জানান, বাবা মদ্যপান করতেন। তাঁকে মারধর করতেন। দীর্ঘদিন ধরেই তাঁকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন। বাধ্য হয়েই বাবাকে খুনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। যদিও পুলিশ পিয়ালির বক্তব্য খতিয়ে দেখছে। কেবল এই কারণেই এত নৃশংস খুন নাকি অন্য কোনও কারণ রয়েছে, তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।

পিয়ালির বিয়ে হয়েছিল। তবে ডিভোর্স হয়ে যাওয়ার পর বাবার কাছেই থাকতেন তিনি। বিশ্বজিৎ বৈঠক খানা রোডে একটি প্রেসে কাজ করতেন। পরিবারে ইদানীং একটা অনটন তৈরি হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, বিশ্বজিতের পৈত্রিক বাড়িটি একশো বছরের পুরনো। বিষয় সম্পত্তিগত কারণে খুন কিনা, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: খেলার মাঝে ধূলোর ঝড়, রাস্তায় চাপ চাপ রক্ত! চোখের সামনে ক্ষত বিক্ষত দুই শিশু

ঘটনার বীভৎসতায় স্তম্ভিত শহর। মনোরোগ বিশেষজ্ঞ অঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই কেউ এমন ধরনের কাজ করতে পারে। বদ্ধপরিকরভাবেই এই কাজটা করা হয়েছে। তার সঙ্গে কথা বলে এর কারণ পুঙ্খানুপুুঙ্খ বিচার করতে হবে। “