গেরুয়া বসনে শেরাওয়ালি আরাধনা তৃণমূলের বিদায়ী কাউন্সিলরের

গত কয়েকদিন ধরেই পূর্ব কলকাতা এবং দক্ষিণ শহরতলির বিভিন্ন এলাকায় হোর্ডিং পড়েছিল। তাতে লেখা ছিল, 'মা শেরাওয়ালির পূজা অর্চনা'। পাশে মূল উদ্যোক্তা সুশান্তবাবুর ছবি। তাও আবার গেরুয়া বসনে।

গেরুয়া বসনে শেরাওয়ালি আরাধনা তৃণমূলের বিদায়ী কাউন্সিলরের
গেরুয়া বসনে শেরাওয়ালি আরাধনা তৃণমূলের বিদায়ী কাউন্সিলরের
Follow Us:
| Updated on: Jan 03, 2021 | 12:10 AM

কলকাতা: গেরুয়া বসন গায়ে কোনও তৃণমূল (TMC) নেতা কি পুজো করতে পারেন না? তার মানেই কি তিনি বিজেপির দিকে পা বাড়িয়ে? ইদানীং এমন কিছু ঘটনা রাজ্য রাজনীতির বুকে ঘটেছে, যা শাসকদলের মধ্যে কিছুটা এই ধারণার জন্ম দিয়েছে। কিন্তু পুজোর সময় গেরুয়া বসন মানেই তা রাজনৈতিকভাবে ইঙ্গিতবাহী নয়। দলকে যেন এই প্রচ্ছন্ন বার্তাই দিতে চাইলেন কলকাতা পুরসভার ১২ নম্বর বরোর কো-অর্ডিনেটর তথা ১০৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষ।

গত কয়েকদিন ধরেই পূর্ব কলকাতা এবং দক্ষিণ শহরতলির বিভিন্ন এলাকায় হোর্ডিং পড়েছিল। তাতে লেখা ছিল, ‘মা শেরাওয়ালির পূজা অর্চনা’। পাশে মূল উদ্যোক্তা সুশান্তবাবুর ছবি। তাও আবার গেরুয়া বসনে। স্বাভাবিকভাবেই শাসকদলের বর্তমান টালমাটাল অবস্থার মধ্যে আচমকাই পূর্ব কলকাতার শাসকদলের এই দাপুটে জনপ্রতিনিধির গেরুয়া বসনধারী ছবি শাসকদলেরও চোখ টানে। আড়ালে আবডালে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, তাহলে কি এই নেতাও পদ্ম শিবিরে যাচ্ছেন? পুরসভা নির্বাচন মার্চে হতে পারে বলে জানিয়েছে সরকার। তার আগে কি ফের ভাঙন দেখা যাবে তৃণমূলে?

শনিবার তাঁর উদ্যোগে কসবার রাজডাঙায় বিরাট আয়োজনের মাধ্যমে পুজো অনুষ্ঠিত হয়। হুবহু বারাণসীর আরতির মতো চোখ ধাঁধানো আরতিও হয়। গোটা অনুষ্ঠান জুড়েই বিদায়ী কাউন্সিলরের গায়ে ছিল গেরুয়া বসন। সুশান্তবাবু অবশ্য সাফ জানাচ্ছেন, এসবের পিছনে কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই। তাঁর কথায়, “আমি গর্বিত, আমি হিন্দু। তবে তৃণমূল আমার রক্তে রয়েছে।” তবে কি এর মাধ্যমে দলকে কোনও বার্তা দেওয়ার চেষ্টা? উত্তরে তিনি বলেন, “গেরুয়া বসন মানেই কি সেই ব্যক্তি বিজেপি হয়ে গেল! হিন্দুরা পুজোর সময় গেরুয়া বসন পছন্দ করেন। এই রং কোনও দলের নিজস্ব সম্পত্তি নয়। আমি শাসক দলেই আছি। এই বিষয়টি নিয়ে কোনও বিতর্ক নেই। আমি এই পুজো করে রীতিমতো গর্বিত।”

আরও পড়ুন: এন্টালির বহুতল থেকে উদ্ধার তাজা বোমা, পুলিসকে খবর দিল সামরিক গোয়েন্দারা

যদিও কসবা এলাকার বিজেপির কো-অর্ডিনেটর মেঘনাথ হালদার বলেন, “শাসকদলের ভিতরে এখন এমন অবিশ্বাস জন্মে গিয়েছে, কেউ পুজো করলেও বিজেপি ভাবা হচ্ছে। আসলে দলটি তোষণের রাজনীতি করে এসেছে দীর্ঘদিন। এখন বিদায়কালে দলের নেতারা যে কোনওভাবে আঁকড়ে ধরার চেষ্টা করছেন।”

সুশান্তবাবুকে নিয়ে বিরোধী শিবিরে অবশ্য গুঞ্জন, তিনি কয়েক বছর ধরেই দলের মধ্যে অবহেলিত। কলকাতা পুরসভার সংশ্লিষ্ট পদ ছাড়া তাঁকে দল কোনও গুরুত্ব দেয়নি। এমনকী সাম্প্রতিক কালে, কসবার তৃণমূল বিধায়ক জাভেদ খানের অনুগামীদের হাতে তিনি আক্রান্ত হন। তখনও দলের তরফে তেমন কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে। যা নিয়ে সুশান্তবাবু নিজের ক্ষোভ আগেও প্রকাশ করেছেন। সুশান্তবাবুর ওয়ার্ডে গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির থেকে তৃণমূল অনেকটাই পিছিয়ে ছিল। এলাকায় যে বিজেপির প্রভাব বেড়েছে, তা নিয়ে কোনও দ্বিমত নেই শাসকদলে।

আরও পড়ুন: ‘মুখ্যমন্ত্রীকে কৈলাসের কটাক্ষ বুঝিয়ে দিল ওরা নারী বিদ্বেষী’, টুইটারে গর্জন তৃণমূলের মহিলা ব্রিগেডের