Kunal Ghosh on TMC: ‘মমতা সর্বাধিনায়িকা, অভিষেক সেনাপতি’, পরোক্ষে কাকে বার্তা কুণালের?
Kolkata: অভিষেকের 'ব্যক্তিগত মত' প্রকাশের পর থেকেই বিরোধের সূত্রপাত। সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছিলেন অভিষক কার্যত তৃণমূল সুপ্রিমোর বিরুদ্ধাচারণ করছেন। সেই শুরু।
ফেসবুক পোস্টে, তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের স্পষ্ট মন্তব্য, “তৃণমূলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সর্বাধিনায়িকা। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সেনাপতি। আমরা সকলে সৈনিক। বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই চলছে, চলবে। আমরা মমতাদির নেতৃত্বে, অভিষেকের সেনাপতিত্বে ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে জয়লাভ করেছি। বাংলার এই মডেল সকলের কাছে আকর্ষণীয় হয়েছে। মানুষকে সঙ্গে নিয়েই দেশে গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, প্রগতিশীল সরকার গঠনের লড়াই চলছে, চলবে।”
অথচ, দুপুরেই সাংবাদিক বৈঠকে কুণাল বলেছিলেন, “আমি তুলনানুপাতে ছোট বিষয়গুলি নিয়ে কথা বলতে পারি, তা আমার এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে। কিন্তু, পুরভোটেপর মতো বড় বড় বিষয়গুলি নিয়ে কথা বলার কেউ নেই। এ বিষয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সিরা রয়েছেন, তাঁরা বলবেন।” তারপরেই রাতে কুণালের ফেসবুক পোস্টকে ঘিরে জল্পনা শুরু হয়েছে।
বস্তুত, অভিষেকের ‘ব্যক্তিগত মত’ প্রকাশের পর থেকেই বিরোধের সূত্রপাত। সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছিলেন অভিষক কার্যত তৃণমূল সুপ্রিমোর বিরুদ্ধাচারণ করছেন। সেই শুরু। যত দিন গিয়েছে, তত মমতা বনাম অভিষকের ছবিটিকেই মান্যতা দিয়েছে বিরোধীরা। বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ মন্তব্য করেছিলেন, “তৃণমূলের অবস্থা এখন শাশুড়ি বৌমার ঝগড়ার মতো। তৃণমূলে এখন দুটো দিক। একদিকে মমতা, একদিকে অভিষেক।” কার্যত একই সুর তুলেছে কংগ্রেসও।
দলের অন্দরে এমন কোনও বিরোধ নেই, এই বিষয়টিই কার্যত প্রমাণ করতে উঠে পড়ে লেগেছেন দলের শীর্ষ নেতারা। এরই মাঝে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের কৃষ্ণ আর অভিষেক অর্জুন এমনই ‘মহাভারত’ তত্ত্ব সামনে আনেন মদন। সব মিলিয়ে কার্যত আরও প্রকট হয়ে ওঠে দলের অন্দরের কোন্দল।
খোদ তৃণমূল নেত্রী নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম থেকে দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বার্তা দেন, গোষ্ঠী কোন্দল যেন না হয়। দল, দলের প্রতীক দেখে যেন কাজ করেন সকলে। কিন্তু তাও বিরোধ থামছে কই! সদ্যই তৃণমূল সুপ্রিমোর ভাইপো তথা অভিষেকের ভাই আকাশ বন্দ্যোপাধ্যায় ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন, তাতে লেখা, ‘তৃণমূলের তরফে আমি এক ব্যক্তি এক পদ নীতিকে সমর্থন করি।’ বস্তুত, বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই দলের অন্দরে কোন্দল প্রশমিত করতে তৃণমূল নেত্রী ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ নীতির প্রবর্তন করেন। কিন্তু, সেই নীতিই কি এ বার ‘বুমেরাং’ হতে চলেছে? কার্যত এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ।
বস্তুত পুরভোটের প্রার্থী তালিকা প্রকাশকে কেন্দ্র করে যেভাবে দলের কোন্দল রাস্তায় এসে নেমেছে তাতে বেশ অস্বস্তিতে শাসক শিবির। উপরন্তু, প্রায় চারটি পুরসভা বিরোধী শূন্য অবস্থায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দখল করেছে তৃণমূল। যা নিয়ে তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা। অনেকেই বলছেন পুরভোটে পঞ্চায়েত নির্বাচনের ছাপ দেখা গিয়েছে। সব মিলিয়ে এই মুহূর্তে, বেশ অস্বস্তিতেই তৃণমূল। ফলে, কুণালের এই মন্তব্যে বিশ্লেষকদের একাংশের মত, নাম না করে পার্থ-বক্সিদের দলে তাঁদের অবস্থান বুঝিয়ে দিলেন তৃণমূল নেতা।
বাংলা টেলিভিশনে প্রথমবার, দেখুন TV9 বাঙালিয়ানা
বাংলা টেলিভিশনে প্রথমবার, দেখুন TV9 বাঙালিয়ানা