AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

চব্বিশের লক্ষ্যেই কি সর্বভারতীয় স্তরে অভিষেকের অভিষেক!

সর্বভারতীয় রাজনীতিতে মমতা যে ক্রমশ প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছেন, সেই ইঙ্গিত মিলেছিল আগেই। তোপসিয়ার দলীয় অফিস থেকে কি সেই ঘুঁটিই সাজালেন মমতা?

চব্বিশের লক্ষ্যেই কি সর্বভারতীয় স্তরে অভিষেকের অভিষেক!
অলংকরণ: অভিজিৎ বিশ্বাস
| Edited By: | Updated on: Jun 05, 2021 | 11:43 PM
Share

কলকাতা: ২০১১-তে ৩৪ বছরের বাম শাসনের অবসান ঘটিয়ে ক্ষমতায় আসেন মমতা (Mamata Banerjee)। ২০১৬-তে মমতার পথ ছিল অনেকটাই নিষ্কণ্টক। তবে, ২০২১ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন অনেকেই। মমতা কি পারবেন? নরেন্দ্র মোদী কিংবা অমিত শাহরা প্রায় প্রতিনিয়ত আসা-যাওয়া করছিলেন বাংলায়। তবে ২ মে প্রমাণিত হয়েছে, গেরুয়া শিবির মমতার সামনে তেমন কোনও চ্যালেঞ্জই নয়। রাজনৈতিক মহল মনে করে, আদতে বঙ্গ বিজেপি নয়, মমতার কাছে নৈতিকভাবে পরাজিত হয়েছেন মোদীই। আর তাতেই সম্ভবত বেড়েছে মমতার আত্মবিশ্বাস। ২০১৯-এ যে বীজ তিনি বপন করেছিলেন, ২০২৪-এ তা প্রস্ফুটিত করাই তাঁর লক্ষ্য, এমন ইঙ্গিতই মিলেছে শনিবারের বৈঠকে। নেতা-নেত্রীদের বার্তা থেকে স্পষ্ট যে, ঘর সাজিয়ে অন্য রাজ্যেও যে পা বাড়াবেন তিনি।

সর্বভারতীয় স্তরে অভিষেকের অভিষেক:

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে যে মমতার দ্বিতীয় প্রজন্ম হিসেবে ভাবা হচ্ছে, সেই প্রমাণ আগেই মিলেছে। বিধানসভা ভোটে যে ভাবে পথে-প্রান্তরে নেমে লড়েছেন তিনি, তা নজর কেড়েছে সবার। ইয়াস বিধ্বস্ত এলাকায় অভিষেকের ভূমিকাও চোখে পড়েছে। তবে কোন পদে তাঁকে নিয়ে আসা হবে, তা স্পষ্ট ছিল না। বৈঠক শেষে জানা গেল, সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হল তাঁকে। আর ‘সর্বভারতীয়’ শব্দটার ওপর যে ঘাসফুল শিবির বিশেষ জোর দিচ্ছে সেটাও বুঝিয়ে দিলেন মমতা। তাই বৈঠক শেষে টু্ইটে অভিষেক লিখলেন, ‘মমতার বার্তা দেশের প্রতিটি কোনায় পৌঁছে দেব আমি।’ সুতরাং শুধু রা্য যে তিনি নিজেও যে দিল্লিকে টার্গেট করেই কাজ করবেন, তা বুঝিয়ে দিলেন।

রাজনৈতিক মহলের মতে, অভিষেক তরুণ, শিক্ষিত নেতা, মাঠে নেমে লড়াই করছেন, সুবক্তাও বটে। তাই সর্বভারতীয় স্তরে তৃণমূলকে পথ দেখাতে বছর ৩৩-এর অভিষেকের ওপর ভরসা করছেন মমতা। তৃণমূলকে মমতা যে পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছেন তাতে সর্বভারতীয় পদে থাকতে গেলে অন্যান্য আঞ্চলিক দলের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখতে হতে পারে অভিষেককে। তরুণ এই নেতা সেটা পারবেন বলেই মনে করছে তৃণমূলের বর্ষীয়ান নেতারাও। সুব্রত মুখোপাধ্যায়, পূর্ণেন্দু বসুরা প্রত্যেকেই এ দিন অভিষেককে এই পদের জন্য যোগ্য বলে উল্লেখ করেছেন।

অলংকরণ: অভিজিৎ বিশ্বাস

অন্য রাজ্যেও সংগঠনে জোর:

বাংলায় ভোটের আগে দলবদলের হিড়িক পড়ে গেলেও মমতার জিততে অসুবিধা হয়নি। বরং ভোটের পর অনেক দলবদলু নেতা-নেত্রীই তৃণমূলে ফেরার আর্জি জানাচ্ছেন। তাই বাংলায় মোটামুটি মমতার খুঁটি শক্তই আছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এবার তাই তৃণমূলের বিস্তার ঘটানোই লক্ষ্য মমতার। ২০১৯-এই আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে একজোট হওয়ার বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। আর এবার দলের সংগঠন যে সেই লক্ষ্যেই সাজাচ্ছেন, তেমন ইঙ্গিত মিলল।

বৈঠকের শেষে সাংবাদিক বৈঠকেদের মুখোমুখি হয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায় সাফ জানালেন, ‘অন্য রাজ্যগুলিতে বিস্তার ঘটাতে সাংগঠনিক স্তরে কাজ করতে হবে।’ এ দিনের বৈঠকে এই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানালেন তিনি। অন্য দিকে, একই ইঙ্গিত মিলল কাকলি ঘোষ দস্তিদারের কথায়। তিনি পেয়েছেন সর্বভারতীয় মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী পদ। তিনিও জানিয়েছেন যে, সর্বভারতীয় স্তরের কথা মাথায় রেখেই সংগঠন তৈরির পরিকল্পনা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘অন্যান্য রাজ্য থেকে ডাক আসছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।’ সুতরাং, নবান্ন নয়, দিল্লির কথা ভেবেই যে এ দিনের সাংগঠনিক রদবদল হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।

আরও পড়ুন: রাজনীতি ছেলেখেলা নয়, আর্মচেয়ার পলিটিক্স করতে আসিনি: সায়নী ঘোষ

উল্লেখ্য, ফেডেরাল ফ্রন্টের লক্ষ্যে গত লোকসভা নির্বাচনে মমতা ব্রিগেডের মঞ্চে এনেছিলেন অখিলেশ, তেজস্বী, দেবগৌড়া, স্তালিনের মতো নেতাদের। ভিনরাজ্যে প্রচারেও গিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। কিন্তু ২০১৯-এ মোদীর সামনে তেমন কোনও চ্যালেঞ্জ ছুঁড়তে পারেনি এই বিরোধী শিবির। তাই এবার ২০২৪-এর দিকে তাকিয়ে প্রস্তুতি চলছে বলেই মত রাজনৈতিক মহলের।