১১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ভ্যাকসিন কিনবে রাজ্য, নবান্নে ঘোষণা মমতার

ফ্লাড শেল্টার নিয়ে চিঠি যাচ্ছে নীতি আয়োগের কাছেও। নবান্নে জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।

১১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ভ্যাকসিন কিনবে রাজ্য, নবান্নে ঘোষণা মমতার
ছবি ফেসবুক
Follow Us:
| Updated on: May 31, 2021 | 5:12 PM

কলকাতা: করোনা (COVID-19) বিধিনিষেধে আরও কিছু ছাড়, ভ্যাকসিন কেনা থেকে ইয়াস পরবর্তী পরিস্থিতি কী ভাবে মোকাবিলা করা হবে সে সমস্ত বিষয় নিয়ে সোমবার নবান্নে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ রাজ্যের অন্যান্য প্রশাসনিক কর্তারা। বৈঠক শেষে একাধিক সিদ্ধান্তের কথা জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-

১ জুন থেকে ছাড় মিলবে যে সমস্ত ক্ষেত্রে

নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ১৬ জুন পর্যন্ত বিধি নিষেধ বহাল থাকলেও বইপাড়া, খুচরো বাজার, মুদির দোকান-সহ অন্যান্য খুচরো জিনিসের দোকান খোলা থাকবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ইতিমধ্যেই সোনার দোকান ও শাড়ির দোকানের ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে। দুপুর ১২টা থেকে ৩ টে পর্যন্ত খোলা থাকছে। এরসঙ্গে খুচরো বাজারের দোকানগুলোও যুক্ত হবে। তথ্য প্রযুক্তি দফতর গুলি ১০ শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ করতে পারবেন। যদি কোনও কনস্ট্রাকশন কোম্পানি নিজের কর্মীদের টিকা দিয়ে কাজ করান তাতে রাজ্যের কোনও আপত্তি নেই বলেই জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সবরকম স্বাস্থ্য বিধি মেনে কাজ করতে হবে।

১১৪ কোটি টাকায় টিকা কিনছে রাজ্য

এই মুহূর্তে রাজ্যে অ্যাক্টিভ কেস অনেকটাই কমেছে বলে জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজেদের টাকায় টিকা কেনা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। মে মাসে প্রায় ১৮ লক্ষ ডোজ় রাজ্য কিনেছে। জুন মাসে আরও ২২ লক্ষ ভ্যাকসিন ডোজ় কেনা হচ্ছে। এর জন্য ১১৪ কোটি টাকা ব্যয় করা হচ্ছে। সুপার স্প্রেডারদের রাজ্যে টিকাকরণে জোর দেওয়া হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সবজি বিক্রেতা, হকার, মৎস্য বিক্রেতাদের মত বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রের মানুষকে যুক্ত করা হয়েছে। এখনও ৯ লক্ষ এই ধরনের মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে।

ইয়াস ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় যাবে দুয়ারে ত্রাণ

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে ২০ হাজার কোটির বেশি টাকার ক্ষতি হয়েছে রাজ্যে। ১২০০ ত্রাণশিবির চলছে। প্রায় ২ লক্ষ লোক ত্রাণশিবিরে রয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত ব্লকগুলিতে পৌঁছবে দুয়ারে ত্রাণ। এই সুবিধা যাবে টর্নেডোর জন্য ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিতেও। তবে নিজের আবেদন নিজেকেই করতে হবে। কোনওরকম অভিযোগ-বিতর্ক যাতে না তৈরি হয় সে কারণেই এই সিদ্ধান্ত দুয়ারে ত্রাণ নিয়ে। এসডিও অফিস, ব্লক অফিস ও গ্রামপঞ্চায়েতে যে শিবির হবে সেখানেই জমা দিতে হবে আবেদন পত্র।

ত্রাণ নিয়ে অভিযোগ যেন না আসে

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান গোসাবা থেকে তাঁর কাছে অভিযোগ এসেছে। গোসাবার বিধায়ক করোনা আক্রান্ত হওয়ায় কিছু এলাকায় সমস্যা হচ্ছে। জেলাশাসকদের এগিয়ে এসে সে সমস্ত সমস্যা সমাধানের নির্দেশ দেন মমতা। পুলিশসুপারের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা মেটানোর নির্দেশ দেন তিনি। কোনও পরিষেবার যেন অভাব না হয় তা দেখতে হবে। জেলা পরিষদকে সঙ্গে নিয়ে এই কাজ করার কথা বলেন তিনি।

দিঘা নিয়ে অসন্তুষ্ট মমতা

দিঘার ৭ কিলোমিটার রাস্তায় একটি সেচের ব্রিজ দীর্ঘদিন ধরে পড়ে রয়েছে। কোনও কাজ হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেটা দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দেন তিনি। একইসঙ্গে তাঁর পর্যবেক্ষণ, ঝড়ে তটের পাথরগুলি উঠে যাওয়ার পর দেখা গিয়েছে কংক্রিটের উপরেই পাথরগুলি বসানো। এটা করার কথা নয়, জানান মুখ্যমন্ত্রী। খোদাই না করে কেন পাথর আবার বসানো হল তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, “কাজে কিছু গাফিলতি নিশ্চয়ই ছিল। আমি যেহেতু এসব লক্ষ্য রাখি তাই বুঝতে পারি।”

ফ্লাড শেল্টারের জন্য নীতি আয়োগকে চিঠি

প্রতি বছর যেহেতু বন্যা-দুর্যোগ বাড়ছে। তাই ফ্লাড শেল্টার বাড়াতে চায় রাজ্য। সে ক্ষেত্রে নীতি আয়োগকে চিঠি দিয়ে টাকা চাওয়া হবে বলে জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যসচিবকে চিঠি লেখার নির্দেশ দেন তিনি।