Mamata Banerjee: রক্ত থাকতে দক্ষিণেশ্বরের স্কাইওয়াক ভাঙতে দেব না: মমতা
Mamata Banerjee: মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ৮-১০টি বৈঠক করে অনেক কষ্ট করে তাঁর সরকার এই স্কাই ওয়াক বানিয়েছে। ওই এলাকায় অনেক হকার ছিলেন। তাঁদের সকলকে বুঝিয়ে, বিকল্প ব্যবস্থা করে তারপর এই স্কাই ওয়াক তৈরি করা হয়েছে। বললেন, 'এই স্কাই ওয়াক আমার হৃদয়ের একটা মণি-মুক্তোর মতো।'
কলকাতা: দক্ষিণেশ্বরের স্কাইওয়াক ভাঙার জন্য রাজ্যের কাছে জানিয়েছে রেল। সেই নিয়ে এবার কড়া প্রতিক্রিয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠকে বসে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, ‘আমার রক্ত থাকতে, আমি দক্ষিণেশ্বরের স্কাইওয়াক ভাঙতে দেব না।’ মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ৮-১০টি বৈঠক করে অনেক কষ্ট করে তাঁর সরকার এই স্কাই ওয়াক বানিয়েছে। ওই এলাকায় অনেক হকার ছিলেন। তাঁদের সকলকে বুঝিয়ে, বিকল্প ব্যবস্থা করে তারপর এই স্কাই ওয়াক তৈরি করা হয়েছে। বললেন, ‘এই স্কাই ওয়াক আমার হৃদয়ের একটা মণি-মুক্তোর মতো।’
কড়া ভাষায় আক্রমণ শানিয়ে বললেন, ‘এদের ঔদ্ধত্য দেখে আমি অবাক হয়ে যাই। হাত দিচ্ছে কোথায়! হাত দিচ্ছে দক্ষিণেশ্বরে।’
মুখ্যমন্ত্রী রেলমন্ত্রী থাকাকালীন কী কী কাজ করেছেন, সেই খতিয়ানও তিনি তুলে ধরেন। বললেন, ‘মেট্রো রেলের যত প্রজেক্ট, প্রত্যেকটা আমার করা। দক্ষিণেশ্বর-নোয়াপাড়া আমি উদ্বোধন করে এসেছিলাম। নোয়াপাড়া-দমদম আমার করা।’ ২০০৯ সালে তিনি এই প্রকল্পগুলির কথা বলার পরও কেন এতদিন সময় লেগে গেল কাজ করতে, তা নিয়েও প্রশ্ন মমতার।
শুধু দক্ষিণেশ্বরেই নয়, আলিপুর বডিগার্ড লাইনসেও মেট্রোর সঙ্গে জমি সংক্রান্ত ইস্যুতে দ্বন্দ্ব উঠে এসেছে রাজ্যের। মুখ্যমন্ত্রী এদিন সাংবাদিক বৈঠকে সাফ জানিয়ে দিলেন, “সরকার বডি গার্ড লাইনসও ভাঙতে দেবে না।” তবে মুখ্যমন্ত্রী এও জানালেন, মেট্রো বা রেলের থেকে যদি তাঁর থেকে বিকল্প রুটের বিষয়ে পরামর্শ চাওয়া হয়, সেই বিষয়ে তিনি সাহায্য করবেন। বললেন, ‘আমাকে যদি বলে, রুট বানিয়ে দিতে। আমি রুট বানিয়ে দেব। কিন্তু এগুলিতে আমি হাত দিতে দেব না।’
তিনি রেলমন্ত্রী থাকাকালীন যেভাবে গোটা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কাজ করেছেন, সেই কথাও তুলে ধরেন। জানালেন, তিনি সেদিন না থাকলে দিল্লি মেট্রোও হত না। তাঁর সাফ বার্তা, ‘যেটা সহযোগিতা করার মতো, তেমন কিছু চাইলে সরকার সব সময় হাত বাড়িয়ে দেবে। কিন্তু যদি দীর্ঘদিনের মূল্যবান হেরিটেজ ভেঙে ফেলার চেষ্টা হয়, সেটা আমি করতে দেব না। দক্ষিণেশ্ব আজকের নয়। দক্ষিণেশ্বরের স্কাইওয়াকে হাত দিতে হলে, বিবেকানন্দ-রামকৃষ্ণের কথা মনে করতে হবে। কিছুতেই ভাঙতে দেব না।’
বঙ্গ বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য আবার পাল্টা যুক্তি দিয়েছেন, বিষয়টি মেট্রো ও রাজ্য সরকারের আলোচনার বিষয়। এটি নিয়ে রাজনীতির কোনও প্রসঙ্গই হয় না বলে দাবি তাঁর। শমীক বলেন, ‘বিজেপি ওনার রক্তক্ষরণ চায় না। বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীকে অত্যন্ত সুস্থ শরীরে দীর্ঘজীবি অবস্থায় দেখতে চায় এবং তাঁর তৃণমূল কংগ্রেসের স্বাভাবিক বিসর্জন দেখাতে চায়। মেট্রোর পরিকল্পনা, কোনও সরকারের পরিকল্পনা কীভাবে হবে, সেটা তো মেট্রো ও রাজ্য সরকার বসে ঠিক করবে। এটাকে রাজনীতির আঙিনায় আনার কোনও প্রশ্ন নেই। উনি কি এখন বিজেপিকে রামকৃষ্ণ বিরোধী বানাতে চাইছেন নাকি।’