স্বস্তিতে তৃণমূল, দিদির সঙ্গেই থাকছেন আসানসোলের জিতেন্দ্র

কলকাতা: দলেই আছেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি। তৃণমূল ছাড়ার পর ৪৮ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই সিদ্ধান্ত বদল করলেন পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক। এদিন কলকাতায় সুরুচি সংঘে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে স্পষ্ট জানান, তিনি বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছেড়েও কোথাও যাবেন না। তৃণমূলেই থাকবেন। তিনি বলেন, ‘আমার ব্যবহারে দিদি দুঃখ পেয়েছে, আমি দিদিকে দুঃখ দিয়ে থাকতে পারব না। ক্ষোভের […]

স্বস্তিতে তৃণমূল, দিদির সঙ্গেই থাকছেন আসানসোলের জিতেন্দ্র
জিতেন্দ্র তিওয়ারি, ফাইল চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Dec 18, 2020 | 11:54 PM

কলকাতা: দলেই আছেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি। তৃণমূল ছাড়ার পর ৪৮ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই সিদ্ধান্ত বদল করলেন পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক। এদিন কলকাতায় সুরুচি সংঘে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে স্পষ্ট জানান, তিনি বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছেড়েও কোথাও যাবেন না। তৃণমূলেই থাকবেন। তিনি বলেন, ‘আমার ব্যবহারে দিদি দুঃখ পেয়েছে, আমি দিদিকে দুঃখ দিয়ে থাকতে পারব না। ক্ষোভের কিছু নেই, তৃণমূল কংগ্রেস থেকে বেরলাম না। ইস্তফা দিয়েছিলাম, ফেরত চাইছি। আমার খারাপ লেগেছে দিদি দুঃখ পেয়েছে। দিদিকে দুঃখ দিয়ে আমি কোনও কিছু করতে চাই না। আমি যা করেছি তার জন্য দিদির কাছে ক্ষমা চাইছি। আগের যা ছিল সব ভুলে গেছি। দিদি আমার শেষ কথা।  দলের কাজ করব না বলেছিলাম সেটা প্রত্যাহার করছি। দলের সব কাজ করব। মনে ভুল বোঝাবুঝি ছিল। মিটিয়ে নিয়েছি। আমারই দোষ ছিল।’

বৃহস্পতিবার একে একে সব পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন জিতেন্দ্র। তবে শুক্রবার বিকেল থেকেই পুনরায় সুর নরম করা শুরু করেন আসানসোল পুরসভার পদত্যাগী পুর প্রশাসক। নিজের ঘনিষ্ঠ মহলে জানান, দিদির হাত ছাড়বেন না তিনি। সূত্রের খবর, এদিন কালীঘাটে মমতার বাড়িতে যে বৈঠক হয় সেখানে তাঁকে নিয়েও আলোচনা হয়েছিল। এরপর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে তাঁর বৈঠক হয়। সেখান থেকে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গেও একদফা আলোচনা করেন। বেরনোর সময় সাংবাদিকদের সামনে সাফ করেন, তৃণমূল ছাড়ছেন না তিনি।

আরও পড়ুন: বিজেপির বড় পদক্ষেপ, বাংলায় আসছেন ৫ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী

তাঁর সিদ্ধান্ত বদলের ফলে কিছুটা হলেও স্বস্তি এনে দেবে রাজ্যের শাসক শিবিরে। বিশেষ করে শুভেন্দু দল ছাড়ার পর থেকে যেভাবে হিড়িক পড়েছে, তাতে বেশ উদ্বেগে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। এতটাই যে, এদিন খোদ দলের সুপ্রিমো কালীঘাটে বৈঠক ডেকে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের কাছে গোটা বিষয়টি নিয়ে তাঁর মতামত জানতে চান। মমতা এদিন আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেন। সেটা হল- যারা যাব যাব করছে তাদের যেন শেষবারের মতো বোঝানো হয়। জিতেন্দ্রও সেই তালিকাতেই ছিলেন। দলের কার্যপ্রণালীর প্রতি তিনি নিজের ক্ষোভ উগরে দিলেও মমতার প্রতি তাঁর কৃতজ্ঞতা প্রকাশে কখনই কুণ্ঠা ছিল না।

এদিন জিতেন্দ্রর সঙ্গে বৈঠক শেষে অরূপ বলেন, জিতেন্দ্র তিওয়ারি তৃণমূল কংগ্রেসে ছিলেন, তৃণমূল কংগ্রেসে আছেন। বিজেপির বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ে নেতৃত্বে লড়াই করবেন। একসঙ্গে থাকতে গেলে মনোমালিন্য হয়। ভুল বোঝাবুঝি হয়ে থাকতে পারে। কিন্তু জিতেন তৃণমূলে ছিল, তৃণমূলে থাকবে। বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করবে।

যদিও গতকাল তৃণমূলের প্রাথমিক সদস্যপদও ছেড়ে দিয়েছিলেন জিতেন্দ্র। তারপর থেকেই তাঁর বিজেপিতে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। জল্পনা চলছিল, আগামিকাল মেদিনীপুরে অমিত শাহের হাত ধরে যোগদান পর্বে শুভেন্দুর সঙ্গে তিনিও উপস্থিত থাকতে চলেছেন। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, তেমনটা হওয়াই অবধারিত ছিল। যদি না রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব বেঁকে বসতেন। আসানসোল বিজেপি নেতৃত্ব থেকে অগ্নিমিত্রা পাল, সকলেই এক সুরে জানিয়ে দেন, জিতেন্দ্র এলে তাঁরা মেনে নেবেন না। বিজেপি রাজ্যে সভাপতি দিলীপ ঘোষও সেই সুরেই সুর মেলান। খোলাখুলি ‘নো এন্ট্রি’ বোর্ড ঝুলিয়ে দেন জিতেন্দ্রর সামনে। এরপর বিকেলের মধ্যে সুর নরম করে রাতেই ইউটার্ন করলেন জিতেন্দ্র।

আরও পড়ুন: তৃণমূল আদৌ ১০০ পেরোবে কিনা সন্দিহান মুকুল