ManoharPukur Murder: স্ত্রীকে ‘খুনের’পর মনোহরপুকুরের অরবিন্দ নিজেই ১০০ ডায়াল করে পুলিশ ডাকেন

Murder: মানসিক অবসানে ভুগছিলেন। পুলিশের কাছে জেরায় সে কথা জানিয়েছেন মনোহরপুকুরে স্ত্রীকে খুনে অভিযুক্ত অরবিন্দ বাজাজ।

ManoharPukur Murder: স্ত্রীকে 'খুনের'পর মনোহরপুকুরের অরবিন্দ নিজেই ১০০ ডায়াল করে পুলিশ ডাকেন
স্ত্রীকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগে ধৃত অরবিন্দ বাজাজকে ১২ নভেম্বর পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিল আদালত। নিজস্ব চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 31, 2021 | 5:34 PM

কলকাতা: স্ত্রীকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগে ধৃত অরবিন্দ বাজাজকে ১২ নভেম্বর পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিল আদালত। রবীন্দ্র সরোবর থানার অন্তর্গত মনোহরপুকুর রোডে (ManoharPukur Murder) স্ত্রীকে খুন এবং মেয়েকে খুনের চেষ্টার অভিযোগে এই অরবিন্দ বাজাজকে শনিবার রাতে গ্রেফতার করা হয়। উল্লেখযোগ্য বিষয়, স্ত্রীকে ‘খুনের’ পর অরবিন্দ নিজেই ১০০ ডায়াল করে থানায় খবর দেন। এরপর পুলিশ এসে আহত মেয়েকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করানোর ব্যবস্থা করে।

করোনা, অতিমারির জেরে দু’বছর ধরে কাজ নেই অরবিন্দ বাজাজের। পুলিশের জেরার মুখে অরবিন্দ জানান, একে আয়ের পথ বন্ধ থাকায় মানসিক অবসাদ, অন্যদিকে নিয়মিত শ্বশুরবাড়ি থেকে চাপ দেওয়া হতো। দাম্পত্য কলহে জেরবার হয়ে পড়েছিলেন তিনি। পুলিশের দাবি, সে কারণেই স্ত্রীকে খুনের পরিকল্পনা করেন বলে পুলিশি জেরায় জানান অরবিন্দ।

স্থানীয়রা জানান, ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে মনোহরপুকুরের ফ্ল্যাটে বাজাজ দম্পতি থাকেন। তাঁদের এক মেয়ে। ডাক্তারি পড়ে। স্বামী-স্ত্রী প্রায়শই গাড়িতে যাতায়াত করতেন। কখনও কখনও সঙ্গে মেয়েও থাকত। বাইরে থেকে দেখে কোনও দিন মনে হয়নি এরকম সমস্যা রয়েছে।

এলাকাতেই দোকান চালান এক যুবকের কথায়, এরকম ঘটনা যে এলাকায় ঘটে গিয়েছে তাঁরা প্রথমে তার টেরটুকু পাননি। পরে পুলিশের গাড়ি ঢুকতেই জানাজানি হয়। জানতে পারেন, ফ্ল্যাটে একজন মারা গিয়েছেন। পারিবারিক অশান্তির জেরে এই ঘটনা বলেই কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে।

পুলিশের প্রাথমিক জেরায় অরবিন্দ জানান, স্ত্রীর বাপের বাড়ি থেকে তাঁর উপর ক্রমাগত চাপের পরিবেশ তৈরি করা হতো। জামাইকে নিজেদের তালুর মধ্যে শ্বশুরবাড়ির লোকজন রাখতে চাইতেন বলেও পুলিশ সূত্রে খবর। শ্বশুরবাড়ির বিরাট ব্যবসা। সিমেন্টের ব্যবসা তাদের।

পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় অরবিন্দ জানিয়েছেন তাঁকে মাত্র ১৫ হাজার টাকার মাস মাইনের কর্মী হিসাবে সেই ব্যবসায় খাটতে হতো। এক দু’বছর নয়, ১৫ বছর ধরে এই অবস্থা তাঁর। সেই টাকাতেই স্ত্রী প্রিয়াঙ্কা ও মেয়েকে নিয়ে তাঁর সংসার চলত। এমনকী মেয়ের ডাক্তারি পড়ার খরচও সেই টাকাতেই দিতে হতো অরবিন্দকে।

মেয়েকে সুইমিং ট্রেনিং সেন্টারে ভর্তি করিয়েছিলেন, আঁকা শিখিয়েছেন। মেয়ে পড়াশোনাতে ভাল। শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে অংশীদারিত্বে বিভিন্ন জায়গায় একাধিক সম্পত্তি রয়েছে অরবিন্দের। পুলিশি জেরায় সে কথা জানিয়েছেন বলে সূত্রের খবর। এমনকী সেখান থেকে ৬ বিঘা জমি বিক্রি করে নিজে আলাদাভাবে কোনও ব্যবসা করতে চেয়েছিলেন অরবিন্দ। কিন্তু শ্বশুরবাড়ির লোক তাতে রাজি হননি।

উল্টে নিজে কিছু আলাদাভাবে করতে চাইলেই ক্রমাগত মিথ্যে মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেওয়া হত শ্বশুরবাড়ির তরফে। করা হতো ব্ল্যাকমেইলও। বিগত ১০ মাস ধরে আরও বেশি করে চাপ দেওয়া হচ্ছিল অরবিন্দের ওপর। আর এই সব কিছুতেই শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে ষড়যন্ত্রের শরিক ছিলেন স্ত্রী প্রিয়াঙ্কা বাজাজ। তা থেকেই তারপর ধীরে ধীরে ক্ষোভ তৈরি হয়। দীর্ঘদিন ধরে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন অরবিন্দ।