শিশুদের জ্বর নিয়ে পরামর্শ রাজ্যপালের! পাল্টা ফিরহাদ বললেন, ‘উত্তর প্রদেশে গিয়ে এসব উপদেশ দিন’
Mystery Fever: শ'য়ে শ'য়ে শিশুর ভিড় বাড়ছে জেলার হাসপাতালগুলিতে। অথচ চিকিৎসার কোনও সঠিক দিশা এখনও মেলেনি কেন সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
কলকাতা: রাজ্যজুড়ে শিশুদের জ্বর নিয়ে এবার সরব হলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। তাঁর প্রতিক্রিয়া, বহুবার বলা হয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোয় জোর দিতে। পাল্টা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের তোপ, উত্তর প্রদেশে গিয়ে রাজ্যপালের পরামর্শ দেওয়া উচিৎ। যেখানে অক্সিজেনের অভাবে শিশুদের প্রাণ যায়।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ৭১ তম জন্মদিন উপলক্ষে রাজভবনের উদ্যানে শুক্রবার বৃক্ষরোপণ করেন রাজ্যপাল। সেখানেই রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় রাজ্যজুড়ে শিশুদের জ্বর নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। জগদীপ ধনখড় বলেন, “আমি বার বার এই বিষয়ে আলোকপাত করেছি। এ রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবায় বিশেষ নজর দেওয়া দরকার। বাচ্চাদের স্বাস্থ্যের সঙ্গে যুক্ত পরিষেবাগুলিতে আলাদা নজরদারির দরকার রয়েছে। আমি আশা করব, রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো সুদৃঢ় হবে।”
এরই পাল্টা মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “রাজ্যেপাল মহোদয়কে বলব এই পরামর্শগুলো উনি যেন উত্তর প্রদেশে দেন। যেখানে ১৬টা বাচ্চা অক্সিজেনের অভাবে মারা গিয়েছে। যেখানে মানুষ অক্সিজেনের অভাবে ছটফট করতে করতে মারা গিয়েছে। যেখানে শ্মশানের অভাবে গঙ্গায় দেহ ভাসিয়ে দিতে হয়েছে। সেই জায়গায় উনি একটু বেশি করে সাজেশন দিন। আমাদের এখানে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা একদম ঠিক আছে।”
প্রসঙ্গত, করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কায় গোটা দেশ যখন ত্রস্ত, তখন বাংলার কপালে নয়া চিন্তার ভাঁজ। উত্তরবঙ্গের পাশাপাশি দক্ষিণবঙ্গেও এই অজানা জ্বরের প্রকোপ দেখা দিচ্ছে। দুর্গাপুর, পুরুলিয়া, আসানসোল, মুর্শিদাবাদেও জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এদিনই সকালে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এই নিয়ে গত তিনদিনে পাঁচ শিশুর মৃত্যু হয়েছে সেখানে।
জ্বর, শ্বাসকষ্ট নিয়ে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ৩৪ জন শিশু। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৮ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছে। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় শিশু ভর্তির সংখ্যাটাও নজরকাড়া। ১৭ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে।
@HomeBengal | রাজ্য জুড়ে অজানা জ্বরে আক্রান্ত শিশুরা। তৃতীয় ঢেউয়ে শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, সাফ জানিয়েছেন গবেষকরা। এমতাবস্থায় শিশুর চিকিৎসার আগাম প্রস্তুতি শুরু করল বীরভূম
সব খবর: https://t.co/qlLoSyDMN9@wbdhfw | @MamataOfficial | @MoHFW_INDIA | #Corona pic.twitter.com/tAl8mb51La
— TV9 Bangla (@Tv9_Bangla) September 17, 2021
উত্তরবঙ্গের জনস্বাস্থ্য বিভাগের ওএসডি চিকিৎসক সুশান্ত রায় বলেন, জলপাইগুড়ি থেকে স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনে পাঠানো হয়েছে ১০টি শিশুর নমুনা। পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে ৩ জন শিশুর মধ্যে আরএস ভাইরাস এবং আরও তিন জন শিশুর ইনফ্লুয়েঞ্জা বি ভাইরাসের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে।
স্বাস্থ্য ভবন যদিও বলছে উদ্বেগের কিছু নেই। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, যে জ্বর প্রাণঘাতী, তা নিয়ে কেন স্বাস্থ্য ভবন এখনও উদ্বিগ্ন নয়। শিশুদের এই জ্বর ভাইরাল ফিভার, নাকি কোনও ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে তাদের জন্য জীবনের হুমকি হয়ে উঠছে তা কেন সুনির্দিষ্ট করতে বলতে পারছে না স্বাস্থ্য দফতর? শ’য়ে শ’য়ে শিশুর ভিড় বাড়ছে জেলার হাসপাতালগুলিতে। অথচ চিকিৎসার কোনও সঠিক দিশা এখনও মেলেনি কেন সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: বিপদে ভাসছে উত্তরবঙ্গ! আরও দুই শিশুর মৃত্যু মালদহ মেডিক্যালে, এখনও অবধি মৃত ৫