Na Bollei Noy: এক দিকে দান খয়রাতি, অন্য দিকে মূল্যবৃদ্ধি! শ্রীলঙ্কার মতো অবস্থা হবে না তো আমাদের? কিছু কথা না শুনলেই নয়
নেতা-মন্ত্রীরা কান না দিতে পারে, আপনাকে তো দিতেই হবে। কারণ আপনি আম জনতা। আপনি অচ্ছে দিনের স্বপ্ন দেখেন।
কলকাতা: মেলা-খেলাতে টাকা গিয়েছে, মাইনে দেব কীসে? চমকে উঠবেন না। এটা এখানকার নয়, ওখানকার মানে শ্রীলঙ্কার সরকারের বুলি ছিল হয়তো। বছর দু’য়েক আগে, ক্ষমতায় এসে মুক্তহস্তে দান খয়রাতি চালিয়েছিল রাজাপক্ষে সরকার। দ্বীপরাষ্ট্র তার ফলও পেয়েছে হাতে নাতে। ১ কাপ চায়ের দাম ১০০ টাকা। ১ প্যাকেট পাঁউরুটির দাম ১ হাজার ৪০০ টাকা। চালের কিলো ৫০০ টাকা। রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডারের দাম সাড়ে ৬ হাজার টাকা। শুনে চোখ কপালে উঠে গেল, না কি! এক ওই রান্নার গ্যাসের দামটাই যা শ্রীলঙ্কার কাছাকাছি। বাকি জিনিসপত্রের দাম আমাদের এখানে মন্দের ভাল। জানি, আজ রবিবার সকালেই বাজার হয়েছে। এক ব্যাগ টাকা নিয়ে গিয়ে, এক মুঠো বাজার নিয়ে ফিরেছেন। তবুও বিশ্বাস করুন, আমরা এখনও শ্রীলঙ্কা হয়ে যাইনি। শ্রীলঙ্কা তো কোন ছার, আমেরিকার মতো দুনিয়ার বড়দাও মন্দার ভয়ে থরহরি কম্প। তবুও ভারত মজবুত। মানে ভারতের অর্থনীতি এখনও নিজের পায়েই দাঁড়িয়ে আছে। এমনটাই দাবি করছেন এদেশের নেতারা। দেশের নেতারা মানে বিজেপির নেতারা। বিরোধীরা তো বলছে, সাধু সাবধান। রাহুল গান্ধী থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সকলেই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। বলেছেন, আমাদের দেশের অর্থনীতি না কি ভুল পথে চলছে। দেশের অর্থমন্ত্রক অবশ্য তাতে কান দিচ্ছে না।
নেতা-মন্ত্রীরা কান না দিতে পারে, আপনাকে তো দিতেই হবে। কারণ আপনি আম জনতা। আপনি অচ্ছে দিনের স্বপ্ন দেখেন। আপনি বিকাশের খোঁজে হন্যে হয়ে এটিএম-এর লাইনে দাঁড়ান। আর আপনার রাস্তায় এসে দাঁড়ায় কে? না, উন্নয়ন। এখন সেই উন্নয়নের কল্যাণেই তো লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, ওমুক শ্রী, তমুক শ্রী। কিন্তু এত শ্রী বজায় রাখতে তো খরচ-খরচা করতে হয়। নিন্দুকেরা বলেন, বাংলার সরকারের আয় আট আনা তো খরচ এক টাকা। সত্যি না কি? বাংলার সরকারকে দরকারে পাওয়া যায়। কিন্তু, জনতার দরকার মেটাতে গিয়ে সরকারের কোষাগার ফাঁকা হয়ে গেলে টাকা দেবেন কোন গৌরী সেন? কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের তো পাওনাদারের থেকেও খারাপ সম্পর্ক। হকের টাকা না কি দিল্লির সরকার দেয় না। আবার দিল্লির সরকারের প্রতিনিধিরা বলেন, রাজ্যটা চলছেই দিল্লির টাকায়। কিন্তু রাজ্য সরকার দিল্লিকে ক্রেডিট দেয় না।
ছাড়ুন এ সব কথা। দিল্লির লাড্ডু খেলেও বিপদ, না খেলেও! তার থেকে শ্রীলঙ্কার দিকে তাকান। সনত্ জয়সূর্য পর্যন্ত স্টান্স নিয়েছেন। ক্রিজে নয়, রাজপথে। শ্রীলঙ্কার জনতা দড়ি ধরে টান দিয়েছে। রাজা থুড়ি রাজাপক্ষে খান খান। তাই শ্রীলঙ্কার কথা থেকে বাংলার কথা, সব বলব। ভুলে যাবেন না একদা যাহার বিজয় সেনানী হেলায় লঙ্কা করিল জয়, একদা যাহার অর্ণবপোত ভ্রমিল ভারত সাগরময়। সেই বিজয় সিংহ এই বাংলারই রাজপুরুষ ছিলেন। তাই সিংহল থেকে বাংলার কথা দেখুন, শুনুন টিভি নাইন বাংলায়। না বললেই নয়, রাত ৮.৫৭।