CM Mamata Banerjee: কোনও সরকার দুর্ঘটনা ঘটায় না, প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কোনও কথা বলব না : মমতা
CM Mamata Banerjee: ‘এ বিষয়ে কোনও টিপ্পনি কাটব না। এই সময় রাজনীতির থেকে মানুষের জীবন অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’ সাফ দাবি মমতার।
গুজরাট: ‘কোনও দুর্ঘটনা তো আমাদের হাতে থাকে না। কোনও সরকার দুর্ঘটনা ঘটায় না।’ গুজরাতের মোরাবিতে মর্মান্তিক সেতু বিপর্যয় সম্পর্কে বলতে গিয়ে এ কথা বলতে শোনা গেল বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Chief Minister Mamata Banerjee)। ছটপুজোর দিন গুজরাটের (Gujrat) মোরাবিতে সেতু বিপর্যয়ের (Morbi Bridge Collaps) জেরে প্রাণ গিয়েছে ১৩৫ জনের। আহত হয়েছেন বহু মানুষ। শোকের ছায়া গোটা দেশে। যদিও দুর্ঘটনার পর সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে নারাজ মমতা। যদিও মমতার এ মন্তব্যের পর পাল্টা কটাক্ষবাণ শানিয়েছেন বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী।
মমতার বিরুদ্ধে তোপ দেগে সুজন বলেন, “আমাদের কথা ছেড়ে দিন। তৃণমূলের নেতারা তো বিজেপি সরকারকে দায়ী করে বসে আছে। পোস্তার সময় মোদী কী বলেছিলেন সে সব ছবি সামনে এনে বিজেপি সরকার ও প্রধানমন্ত্রীকে দায়ী করে বসে আছে। আসলে ওরা জানে না মমতার সঙ্গে বিজেপি নেতাদের ম্যানেজমেন্ট কখন কী অ্যাঙ্গেলে আছে তা ওরা টের পাচ্ছে না।”
যদিও মমতার সাফ কথা, “এ বিষয়ে কোনও টিপ্পনি কাটব না। এই সময় রাজনীতির থেকে মানুষের জীবন অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তবে আমি প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কোনও কথা বলব না। আমি রাজনীতি নিয়ে কোনও কথা বলব না। ” যদিও তারপরেও গুজরাটের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে খোঁচা দিতে ছাড়েননি মমতা। সামনেই আবার গুজরাটে বিধানসভা নির্বাচন। সেই রেশ ধরে মমতার বক্রোক্তি, “সবথেকে বেশি ব্রিজ তো বাংলায় বেশি। আমাদের এখানে নদী বেশি। সে কারণে আমাদের এখানে সেতু বেশি। যদিও আমাদের এখানে সেতু দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা অনেক কম ছিল। কিন্তু ওখানে মৃতদের পরিবারের পাশে সরকার ঠিকমতো পাশে দাঁড়াতে পারছে না। কারণ ওরা নির্বাচনে ব্যস্ত। তবে আমি প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কোনও কথা বলব না। আমি রাজনীতি নিয়ে কোনও কথা বলব না। কারণ মানুষের জীবন রাজনীতির আলোচনার থেকে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমি ওখানে যেতেও চাই। কিন্তু গেলেও আবার বলবে রাজনীতি করতে এসেছে। আমরা চাই যাঁরা মারা গিয়েছেন তাঁদের পরিবার সুবিচার পাক। তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হোক।”
মমতা আরও বলেন, “এ ঘটনায় আমি দুঃখিত। এ ঘটনায় যে সমস্ত পরিবার তাঁদের সদস্যদের হারিয়েছেন আমার তাঁদের প্রতি সমবেদনা রয়েছে। অনেক লোকের এখনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। আমাদের রাজ্যের একজন মারা গিয়েছেন। আমরা এখনও জানিনা কতজনের মৃতদেহের খোঁজ মিলবে। মানবিকতার দিক থেকে দেখলে যাঁদের জন্য এ ঘটনা ঘটেছে তা আসলে একটা অপরাধ। টেন্ডার যাঁরা নিয়েছিল, যে কন্ডাকটররা করেছিল তাঁদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে ইডি-সিবিআই। ওরা শুধু সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়। এত লোকের জীবন যাঁরা নিল, এত গুরুতর অপরাধ করল, যাঁরা সত্যিকারের অপরাধী তাঁদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না?” তবে এই প্রথম নয়, ইডি-সিবিআই নিয়ে তোপ দাগতে গিয়ে এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে কাঠগড়ায় তুলতে দেখা গিয়েছিল মমতাকে। কিছুদিন আগেই বিধানসভায় ইডি-সিবিআইয়ের তৎপরতা নিয়ে নিন্দা প্রস্তাব পেশ করে মমতাকে বলতে শোনা যায়, “আমি বিশ্বাস করি না যে, এটা নরেন্দ্র মোদী করেছে। এটা বিজেপি নেতাদের কাজ। তিনি বলেন আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন যে, ইডি-সিবিআই আর প্রধানমন্ত্রীর দফতর দেখে না, দেখে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।”
অন্যদিকে এদিন আবার একযোগে মোদী-মমতার বিরুদ্ধে তোপ দাগতে গিয়ে মালবাজার বিপর্যয়ের প্রসঙ্গ টেনে আনেন সুজন। তোপ দেগে বলেন, “মালবাজারের জন্য দায়ী কে? সরকার দায়ী নয়, পুরসভা দায়ী নয়। মুখ্যমমন্ত্রীর মনোভাব এমন যে যাঁরা ওখানে গিয়েছিল তাঁরাই যেন দায়ী। তাই ওখানে গুজরাটের সরকারও দায়ী নয়। একটা উইন উইন পরিস্থিতি। বিজেপির সরকারের সঙ্গে ম্যানেজমেন্টে সুবিধা হচ্ছে।”