আমফানের স্মৃতি উস্কে আসছে ‘ইয়াস’, দুই ২৪ পরগনাকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ নবান্নের
গত বছর আমফানে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল দুই ২৪ পরগণায়। উপকূলবর্তী দুই জেলায় এবারও সাইক্লোনের বিপর্যস্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকছে।
কলকাতা: গত বছর এরকম সময়েই আমফান তছনছ করে দিয়েছিল প্রায় গোটা বাংলাকে। সেই কথা মাথায় রেখেই এবার আরও এক সাইক্লোনের জন্য সবরকম প্রস্তুতি সেরে রাখছে নবান্ন। বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য সমস্ত বন্দোবস্ত আগাম করে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাইক্লোনের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে আজ একটি ভিডিও কনফারেন্সও করা হয় নবান্নের তরফে। কোভিড পরিস্থিতিতে এই ঝড় অভিশাপ হয়ে আসতে পারে, তাই কোনও খামতি রাখতে চাইছে না রাজ্য।
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ২৬ মে প্রবল ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়তে পারে পশ্চিমবঙ্গে। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে ২৬ ও ২৭ মে আছড়ে পড়তে পারে সেই ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’। উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা প্রশাসনকে তাই প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নবান্নের তরফে দেওয়া নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, দুই জেলায় ত্রাণ শিবিরগুলিকে তৈরি রাখাতে হবে। জেনারেটর, টয়লেট-সহ সব ব্যবস্থা প্রস্তুত রাখতে হবে সেখানে। আমফানের কথা মাথায় রেখেই সাধারণের জন্য চাল, কাপড়, তারপুলিন ইত্যাদি প্রয়োজনীয় জিনিসের ব্যবস্থা আগে থেকেই করতে বলা হয়েছে। কী কী প্রয়োজন, সেই তালিকাও আজই জমা দিতে হবে জেলা প্রশাসনকে। ঝড়ের আগেই যাতে উপকূলবর্তী এলাকা থেকে লোকজনকে নিয়ে এসে আশ্রয় শিবিরে রাখা হয়, সেই নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। মহকুমা বা ব্লক স্তরের অফিসারদের বলা হয়েছে, এই বিষয়ে স্থানীয় বিধায়ক, সাংসদ ও পঞ্চায়েতের সদস্যদের কথা বলতে হবে। ঝড়ের আগে মাইকিং করে এলাকায় সতর্কবার্তা দেওয়ার কথাও জানানো হয়েছে প্রশাসনের তরফে। আর এর মধ্যে অবশ্যই বাদ যাবে না সামাজিক দূরত্বের বিষয়টি।
শুধু ত্রান শিবিরের ব্যবস্থাই নয়। সাধারণ মানুষের কাছে ত্রাণের জিনিসপত্র পৌঁছে দেওয়ার জন্য গাড়ির ব্যবস্থাও করে রাখতে বলা হয়েছে। সমুদ্র তীরবর্তী এলাকার জন্য প্রস্তুত রাখতে হবে নৌকা, স্পিড বোট, ডুবুরি। সাইক্লোন পরবর্তী পরিস্থিতির জন্য তৈরি রাখতে হবে গাছ কাটার মেশিন। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে যাতে কারও মৃত্যু না হয়, সেই ব্যাপারে কড়া বার্তা দিয়েছে নবান্ন। পুলিশের সঙ্গে কথা বলে মহকুমা শাসক যাতে পুরো পরিকল্পনা তৈরি করে ফেলেন, সেই নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সংযোগ স্থাপন করতে হবে বিদ্যুত ও টেলিকম বিভাগের সঙ্গেও।
আরও পড়ুন: তাউটে তাণ্ডবের পর গুজরাট পরিদর্শনে প্রধানমন্ত্রী
ঝড়ে সবথেকে বেশি আশঙ্কা থাকে মৎস্যজীবীদের নিয়ে। দুই ২৪ পরগণার বহু মানুষ সমুদ্রে মাছ ধরে জীবনধারণ করেন। তাই মৎস্যজীবী অ্যাসোসিয়েশনকে এই বিষয়ে সতর্ক করার কথা বলা হয়েছে। সাইক্লোনের ব্যাপারে তাঁদেরকে জানিয়ে সমুদ্রে যেতে নিষেধ করতে হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।