‘সততার প্রতীক’ রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, পোস্টারে ছয়লাপ শহর

প্রশ্ন উঠছে, শুভেন্দু অধিকারীর পথেই কি তবে এবার হাঁটতে চলেছেন রাজ্যের আরও এক বিধায়ক।

'সততার প্রতীক' রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, পোস্টারে ছয়লাপ শহর
উত্তর কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় এই ফ্লেক্স দেখা গিয়েছে।
Follow Us:
| Updated on: Dec 06, 2020 | 1:56 PM

কলকাতা: এবার শহরে পড়ল রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের পোস্টার। সৌজন্যে উত্তর কলকাতা স্পোর্টস লাভার অ্যাসোসিয়েশন। পোস্টারে রাজীবের ঢাউস ছবি। কর জোরে দাঁড়িয়ে জননেতা। লেখা ‘সততার প্রতীক’। এই পোস্টার ঘিরেই ঝড় উঠছে রবিবাসরীয় রাজনৈতিক আড্ডার টেবিলে। প্রশ্ন উঠছে, শুভেন্দু অধিকারীর পথেই কি তবে এবার হাঁটতে চলেছেন রাজ্যের আরও এক বিধায়ক। তৃণমূলের ‘মুষলপর্ব’ সত্যিই কি তবে আগত।

শনিবার টালিগঞ্জে এক অরাজনৈতিক মঞ্চ থেকে রাজীব বার্তা দিয়েছিলেন, “দলে স্তাবকদের গুরুত্ব বেশি। আমি ভালকে খারাপ, খারাপকে ভাল বলতে পারি না। তাই আমার নম্বর কম। মাঠে ঘাটে নেমে যাঁরা কাজ করেন তাঁরা দলে গুরুত্ব পান না। ঠান্ডা ঘরে বসে থাকা লোকেরা দলে প্রথম সারিতে। এটা খুব যন্ত্রণাদায়ক।” তারপর ২৪ ঘণ্টাও কাটেনি। উত্তর কলকাতার শ্যামবাজার, শোভাবাজার মেট্রো চত্বর, উল্টোডাঙা, কাঁকুড়গাছি, ফুলবাগান, গিরিশ পার্ক এলাকা ছেয়ে গিয়েছে রাজীবের ‘সততার প্রতীক’ পোস্টারে।

আরও পড়ুন: পা থেকে মাথা পর্যন্ত দুনীর্তিগ্রস্ত, তারাই বেশি চিৎকার করে, রাজীবকে তোপ অরূপের

শনিবার রাত থেকেই রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছিল দলের অন্দরে। রবিবার তা দ্বিগুণ বেড়ে গেল। এর আগেও একাধিকবার দলের সমালোচনায় সরব হয়েছেন ডোমজুড়ের বিধায়ক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। গত জুলাইয়ে প্রথমবার দলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন তিনি।

আমপানের ত্রাণ-দুর্নীতির অভিযোগে তৃণমূল যখন দিশেহারা, তখন প্রথম বোমাটা রাজীবই ফাটিয়েছিলেন। বলেছিলেন, দলকে দুর্নীতি মুক্ত করতে চুনোপুঁটি ধরে লাভ নেই। রাঘব বোয়ালদের ধরতে হবে। এ জল বহু দূর গড়িয়েছিল। সূত্রের খবর, রাজীবকে সে সময় ডেকে পাঠিয়েছিলেন দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি। খোলামেলা আলোচনা হয়েছিল। তবু কোথাও যেন ছন্দ কাটছিল বারবার।

রাজীবের একটা স্বচ্ছ ভাবমূর্তি রয়েছে। চেহারায় তারুণ্যের ছাপ। কথাবার্তা সংহত, সংযত। উচ্চ শিক্ষিত। ইয়ং ব্রিগেডের কাছে শুভেন্দু অধিকারীর মতোই তাঁর গ্রহণযোগ্যতা। গত ভোটে রাজ্যের যে বিধানসভা আসনটায় তৃণমূল সবথেকে বেশি ভোট পেয়েছিল, সেটা রাজীবের ডোমজুড়। মানুষের সমর্থনের এই ‘অহং’ও তাঁর মধ্যে প্রচ্ছন্ন।

সেই রাজীব যেভাবে প্রকাশ্যে দলের সমালোচনা করছেন তা তৃণমূলের জন্য যথেষ্ট অস্বস্তির। প্রশ্ন উঠছে, তবে কি শুভেন্দুর মতোই সচেতনভাবে দলের থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন রাজীব। শনিবার টালিগঞ্জের অরাজনৈতিক মঞ্চ থেকে তিনি যেভাবে বোমা ফাটালেন তা যথেষ্ট ইঙ্গিতবাহী। রাজীব অবশ্য বলেছেন, “এখনও মন্ত্রিত্বে আছি। এখনও দলেই আছি।” কিন্তু ‘এখনও’ শব্দে রাজীব যেভাবে জোর দিয়েছেন সেটাও তাৎপর্যপূর্ণ।

তিনি কি গেরুয়া শিবিরেই ভিড়বেন? এ প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, সময়ই সবটা বলবে। ডেডলাইন ডিসেম্বর। তবে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী কিন্তু নিশ্চিত, তৃণমূল ভাঙছে। ভোটের পরে দলটা হয়তো উঠেই যাবে।