AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

শুভেন্দুর সঙ্গে আমাকে গুলিয়ে ফেলবেন না, পার্থর বাড়িতে দাঁড়িয়ে বলে গেলেন রাজীব

বেলা ১২টার কিছু পরেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে পৌঁছন বনমন্ত্রী রাজীব। রয়েছেন তৃণমূলের ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরও।

শুভেন্দুর সঙ্গে আমাকে গুলিয়ে ফেলবেন না, পার্থর বাড়িতে দাঁড়িয়ে বলে গেলেন রাজীব
অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ এদিনের বৈঠক।
| Updated on: Dec 13, 2020 | 3:01 PM
Share

কলকাতা: আলোচনা তো আলোচনাই। এতে আবার সন্তুষ্ট-অসন্তুষ্টর কী আছে। রবিবার পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে বৈঠক শেষে এমনটাই বললেন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে তাঁকে যেন গুলিয়ে না ফেলা হয়। কারণ তাঁরা দু’জন আলাদা মানুষ। দলীয় মহাসচিবের নাকতলার বাড়ি ছেড়ে বেরোনোর আগে রাজীব বলে গেলেন, দলকে যা জানাবার তিনি জানিয়েছেন। আগামিদিনের রণনীতি কী হবে তা নিয়েই এদিনের বৈঠকে কথা হয়েছে। অর্থাৎ হাওড়ার ডোমজুড়ের বিধায়ককে নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে রাজ্য রাজনীতিতে যে চাপানউতোর চলছে, তা ছাই চাপাই রইল।

রবিবার বেলা ১২টার কিছু পরেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে পৌঁছন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। আগেই হাজির হন তৃণমূলের ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর। তৃণমূল সূত্রে খবর, ‘বেসুরো’ নেতার বক্তব্য শুনতেই তাঁকে বাড়িতে ডেকে পাঠান পার্থবাবু। প্রায় ঘণ্টা দেড়েক সেখানে ছিলেন রাজীব। এরপরই বেরিয়ে বলেন, “আমি দলের একজন কর্মী হিসাবে দলীয় স্তর থেকে মহাসচিবের ডাকে আলোচনা করার জন্য এসেছি। আগামী দিনের রণনীতি ঠিক করার জন্য এসেছিলাম। এর বাইরে আর কিছু তো সংবাদমাধ্যমে বলার জন্য নয়। আলোচনা আগামিদিনে আরও হবে। সেইমতো কাজকর্ম করব আমরা।”

আরও পড়ুন: আপডেট: বুদ্ধবাবু ভাল আছেন, মঙ্গলবারই হাসপাতাল থেকে ছাড়া হতে পারে

এদিন শুভেন্দু-প্রসঙ্গ উঠতেই রাজীব বলেন, “দয়া করে আমার সঙ্গে কাউকে জড়াবেন না। শুভেন্দুবাবুর ব্য়াপারটাও ব্যক্তিগত। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যাপারটাও ব্যক্তিগত। এটা তো অস্বীকার করার কিছু নেই দলের মধ্যে কারও যদি ক্ষোভ থাকে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আলোচনার মধ্যেই তো মিটবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।” একইসঙ্গে রাজীবের নামে কলকাতা-সহ বিভিন্ন জেলায় নজরে আসা পোস্টার সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমি ব্য়ক্তিগতভাবে মনে করি এ ধরনের প্রচারের আমার কোনও প্রয়োজন নেই। যদি কেউ এগুলি করে থাকে কারা করছে জানি না, তবে এতে আমার সমর্থন নেই।”

দলীয় মহাসচিবের সঙ্গে রবিবাসরীয় বৈঠক নিয়ে রাজীবের বক্তব্য, “আলোচনা তো আলোচনাই। এতে আবার সন্তুষ্ট-অসন্তুষ্টর কী আছে। কারও ক্ষোভ থাকতেই পারে, কারও আবার আরও সন্তুষ্টির দাবি থাকতে পারে। সেটা অবশ্যই আলোচনার মাধ্যমেই মিটবে। এদিনের বৈঠকে আগামিদিনে কীভাবে কী করা যায় তা নিয়ে কথা হয়েছে। আবারও হবে। আমাকে ডাকলে আমি আসব।”

গত কয়েকদিন ধরেই রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে অস্বস্তিতে দল। পরিস্থিতির সূত্রপাত অতি সম্প্রতি টালিগঞ্জের হরিদেবপুরের একটি অরাজনৈতিক অনুষ্ঠানমঞ্চ থেকে। সেখানে হাওড়ার ডোমজুড়ের তৃণমূল বিধায়ক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ”আমি স্তাবকতা করতে পারি না। আমি ভালকে খারাপ, খারাপকে ভাল বলতে পারি না। তাই আমার নম্বরও কম। আমি পিছনের সারিতে।”

আরও পড়ুন: ‘বাংলা হিন্দুরাজ্য হবেই, হারের ভয়ে হতাশায় ভুগছেন মমতা’

রাজীবের এই বক্তব্য় ঘিরে শোরগোল পড়ে যায় রাজ্য রাজনীতিতে। বিরোধীদের কাছে মমতার মন্ত্রীর এই বক্তব্য যেমন অতিরিক্ত অক্সিজেন জুগিয়েছে, দল তেমনই নানা প্রশ্নের মুখে পড়েছে। রাজীবও নিজের বক্তব্য থেকে সরতে নারাজ। শনিবারও তিনি বলেছিলেন, যা বলেছেন তা তাঁর মনের কথা। সেই অবস্থান থেকে সরে দাঁড়ানোর প্রশ্নই নেই। সূত্রের খবর, এরপরই তড়িঘড়ি দল রাজীবের বক্তব্য শুনতে তাঁকে ডেকে পাঠায়। রবিবার সকালেই বৈঠকে বসেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর।

তৃণমূলের আরেক ‘বিদ্রোহী’ নেতা শুভেন্দু অধিকারীর মতোই রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলত্যাগের পরিকল্পনার জল্পনা বঙ্গ রাজনীতিতে এখন ট্রেন্ডিং। কলকাতা, হাওড়া-সহ বিভিন্ন জেলায় ইতিমধ্যেই রাজীবের ছবি দিয়ে পোস্টার, ফ্লেক্স লাগানো হয়েছে। সেখানে তাঁকে ‘কাজের মানুষ কাছের মানুষ’ কিংবা ‘ছাত্র যুবর নয়নের মণি’ বলে লেখা হয়েছে। ঠিক যেমনটা দেখা গিয়েছে ‘দাদার অনুগামী’দের পোস্টার, ফেস্টুনে। দিলীপ ঘোষরাও আগাম বলে রেখেছেন, রাজীবের মতো ‘ভাল ছেলে’কে তাঁরা দলে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত।  এই আবহে এদিনের বৈঠক নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তবে ‘তৃণমূলেই থাকছেন’ কি না সে প্রশ্নের ধারেকাছেও কিন্তু এদিন ঘেঁষলেন না রাজীব। বলে গেলেন, ”যা বলেছি এর বেশি আর কিছু বলতে পারব না। এরপর যা বলার পার্থদা যদি বলেন, বলবেন।”