SLST: ‘কিছু আইনজীবী রাজনীতি করছেন’, SLST চাকরিপ্রার্থীদের মুখেও বিকাশের নাম

SLST: চাকরিপ্রার্থীর কথায়, "আমরা বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বাড়িতেও গিয়েছিলাম। আমরা ১৪ মাস ধরে ঘুরছি। বেকার হয়ে ঘরে বসে আছি। কেউ একটু রাস্তা তো দেখান। বিকাশবাবু একজন বিখ্যাত আইনজীবী, উনি আমাদের যে কেসগুলো করেছেন, প্রত্যেকে আনসাকসেসফুল ক্যান্ডিডেট এবং এসএসসি তার প্রমাণও দিয়েছে হলফনামা দিয়ে। যাদের নিয়ে কেস করেছেন তাঁরা অযোগ্য।"

SLST: 'কিছু আইনজীবী রাজনীতি করছেন', SLST চাকরিপ্রার্থীদের মুখেও বিকাশের নাম
আইনজীবীদের একাংশের ভূমিকায় সরব দুই চাকরিপ্রার্থী। Image Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 23, 2023 | 7:35 PM

কলকাতা: একের পর এক বৈঠক। আর সেখান থেকে বেরিয়ে এসে চোখের জলে ভাসা চাকরিপ্রার্থীদের একটাই দাবি, “আমাদের চাকরিটা পেতে দিন।” শনিবার তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এসএলএসটি কর্মশিক্ষা-শারীরশিক্ষা চাকরিপ্রার্থীরা। এদিন যাঁরা কুণালের সঙ্গে দেখা করেন, তাঁরা সকলেই ১৪-১৫ মাস আগে সুপারিশপত্র পেয়েছেন এসএসসির। তাঁদের বক্তব্য, আদালতের স্থগিতাদেশের কারণে এখনও নিয়োগ পাননি তাঁরা। আইনি জট কাটিয়ে চাকরি দেওয়া হোক, দাবি তাঁদের। এদিন সেই চাকরি প্রার্থীদের মুখে শোনা গেল মারাত্মক অভিযোগ। একদল আইনজীবীর দিকে নিশানা করেন তাঁরা।

এদিন কুণাল ঘোষের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, “রেকমেনডেশন লেটার নিয়ে বাড়িতে বসে আছি, আমরা পাড়া প্রতিবেশীদের কাছে মুখ দেখাতে পারছি না। গ্রামেগঞ্জে কীভাবে এসব প্রশ্নের মোকাবিলা করতে হয় বলে বোঝানো যাবে না। আর কিছু আইনজীবী আছেন, এসব নিয়ে রাজনীতি করছেন। তাঁদের উদ্দেশে বলব, আপনারা আমাদের বাড়ির মেয়ের মতো মনে করুন। এইভাবে ঝুলিয়ে রাখবেন না। ১৩-১৪ মাস হয়ে গেল সুপারিশপত্র পেয়ে গিয়েছি। বিয়ে করতে পারেনি এই চাকরিটার জন্য। আমরা কেউ কেউ পার্ট টাইম কাজ করতাম। সুপারিশপত্র পাওয়ার পর চাকরি ছেড় দিই। কারণ, আমরা জানতাম রেকমেনডেশন লেটার পেয়ে গিয়েছি মানে এক মাসের মধ্যে কাজে যোগ দেব। কী পরিস্থিতি বুঝতে পারছেন?”

আরেক চাকরিপ্রার্থীর কথায়, “আমরা বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বাড়িতেও গিয়েছিলাম। আমরা ১৪ মাস ধরে ঘুরছি। বেকার হয়ে ঘরে বসে আছি। কেউ একটু রাস্তা তো দেখান। বিকাশরঞ্জন বাবু একজন বিখ্যাত আইনজীবী, উনি আমাদের যে কেসগুলো করেছেন, প্রত্যেকে আনসাকসেসফুল ক্যান্ডিডেট এবং এসএসসি তার প্রমাণও দিয়েছে হলফনামা দিয়ে। যাদের নিয়ে কেস করেছেন তাঁরা অযোগ্য।”

ওই চাকরি প্রার্থীর মুখে কথা কার্যত কেড়ে নিয়ে এদিন কুণাল ঘোষ বলেন, “যারা বাতিল প্রার্থী তাদের দিয়ে মামলা করিয়ে যোগ্য প্রার্থীদের আটকে রেখেছে। এরা বলে ইনসাফ যাত্রা। সমস্ত নাইনসাফিটাই এখানে হয়ে যাচ্ছে। অযোগ্যদের দিয়ে মামলা করিয়ে যোগ্যদের চোখের জল ফেলানো হচ্ছে।” এদিন কুণালের নিশানায় ছিলেন আইনজীবী তথা বাম নেতা  বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। ২০১৬ সালের পরীক্ষার্থী এই এসএলএসটি চাকরি প্রার্থীরা। তাঁরা জানান, ২০২২ সালে তাঁদের কাউন্সেলিংও হয়। কিন্তু আইনি জটে তাঁদের নিয়োগ হচ্ছে না। ফলে চাপ বাড়ছে ঘরে-বাইরে। অনেকেরই চাকরির বয়স চলে যাচ্ছে। বিয়ে করতে পারেননি অনেকেই, শুধুমাত্র চাকরিটা হয়নি বলে।

তবে এদিন কুণাল ঘোষ ও চাকরি প্রার্থীদের মুখে বারবার আইনজীবীদের একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ শোনা গিয়েছে। অযোগ্যদের হয়ে মামলা করে যোগ্যদের চাকরি আটকে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন তাঁরা। তবে এ প্রসঙ্গে বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীদের হয়ে মামলা লড়া আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বলেন, “বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীরা মামলা করেছেন। আর কোনও আইনজীবী চাকরি আটকাতে পারেন না। চাকরি আটকানোর নির্দেশ যদি দিয়েই থাকে, সেটা আদালত দেয়। আইনজীবী রায় লেখেন না, আইনজীবী আবেদনকারীর পক্ষে সওয়াল করেন মাত্র।” অন্যদিকে বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, কুণাল ঘোষের বক্তব্যের জবাব দেওয়ার প্রয়োজনই মনে করেন না তিনি।