SSC Recruitment Scam: ‘নাটের গুরু’ সুবীরেশই! কেন? চার্জশিট দিয়ে জানাল CBI
SSC Recruitment Scam: চার্জশিটে সিবিআই আরও উল্লেখ করেছে, ২০১৬ সালের নবম-দশমের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নজরদারির দায়িত্বে ছিলেন সুবীরেশ ভট্টাচার্য।
সুজয় পাল
কলকাতা: এসএসসি-র নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআইয়ের চার্জশিটে বিস্ফোরক তথ্য উঠে এল। সূত্রের খবর, গত ২৭ অক্টোবরে পেশ করা চার্জশিটে রয়েছে এক ডজন নাম। ওই চার্জশিটে স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিনহা, প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম রয়েছে। তবে নাম নেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের।
সূত্রের খবর, সিবিআই চার্জশিটে উল্লেখ নিয়োগ দুর্নীতির ‘নাটের গুরু’ সুবীরেশ ভট্টাচার্য। দুর্নীতির একদিকে সুবীরেশ অন্যদিকে সঙ্গীরা হলেন এসপি সিনহা, অশোক সাহারা। চার্জশিটে সিবিআই জানিয়েছে, কোভিডকালে লকডাউন চলাকালীন আচার্য সদন ফাঁকা ছিল। সেই সুযোগে চলেছে বেলাগাম বেনিয়ম।
সিবিআই চার্জশিটে উল্লেখ করেছে. এসএসসি-র অফিসে বসেই ভুয়ো সুপারিশ পত্র ছাপা হয়েছিল। ওই সুপারিশ পত্রের ভিত্তিতেই অবৈধ নিয়োগ হয়েছে। তৎকালীন চেয়ারম্যান সৌমিত্র সরকার ছুটিতে থাকাকালীন এই দুর্নীতির কারবার চলে বলে সিবিআই তদন্তে জানতে পেরেছে। সৌমিত্রর ওপর দায় চাপাতেই তাঁর অনুপস্থিতিতে অবৈধ নিয়োগ করা হয়।
চার্জশিটে সিবিআই আরও উল্লেখ করেছে, ২০১৬ সালের নবম-দশমের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নজরদারির দায়িত্বে ছিলেন সুবীরেশ ভট্টাচার্য। শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার দায়িত্বে থাকা বেসরকারি সংস্থা ওএমআর শিট স্ক্যান করার পর সুবীরেশের কাছে সিডি জমা দেয়। সুবীরেশ সেটা ওয়েবসাইটে আপলোড করার জন্য প্রোগ্রামিং অফিসার পর্ণা বসুকে জমা দেন। যদিও তদন্ত চলাকালীন সেই সিডি খুঁজে পায়নি সিবিআই। নবম-দশমের শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষার মডেল উত্তরপত্রে ইতিহাসের উত্তর ভুল ছিল বলে অভিযোগ করেন পরীক্ষার্থীরা। অভিযোগ পেয়ে এসএসসি-র তরফে যাঁরা প্রশ্নপত্র তৈরি করেছিলেন, তাঁদের দিয়ে রিভিউ করানো হয়। সিবিআই-এর দাবি, সংশোধিত মডেল উত্তরপত্র ওয়েবসাইটে আপলোড করতে বাধা দেন তৎকালীন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য।
সুবীরেশের নির্দেশেই হাতে লেখা ফলাফল ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়েছিল। সিবিআই বলছে, সেটা এমনভাবে আপলোড করা হয়েছিল যাতে চাকরি প্রার্থীরা শুধু নিজের প্রাপ্ত নম্বর দেখতে পান বাকি পরীক্ষার্থীরা কত নম্বর পেয়েছেন, তা দেখার উপায় ছিল না। দুর্নীতির জন্যই এমনটা করা হয়েছিল বলে দাবি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার।
সিবিআই চার্জশিটে লিখেছে, অবৈধ নিয়োগকে বৈধ দেখানোর জন্য ফলাফল প্রকাশের আগেই অযোগ্য প্রার্থীদের ওএমআর শিটের প্রাপ্ত নম্বর বদলে দেওয়া হয়। শুধু লেখা পরীক্ষা নয়, পার্সোনালিটি টেস্টেও অযোগ্য প্রার্থীদের প্রাপ্ত নম্বর বদল করা হয় বলে সিবিআই জানতে পেরেছে। তা চার্জশিটে উল্লেখও করেছে। একাধিক শিক্ষা কর্তা ছাড়াও সিবিআই চার্জশিটে নাম রয়েছে প্রসন্ন রায়, প্রদীপ সিংহের মতো মিডলম্যান ও কয়েকজন অবৈধভাবে নিয়োগ হওয়া শিক্ষকেরও।