ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের দাবিতে দিল্লি যাচ্ছেন জুন-দেব-মানসরা, দেখা করবেন কেন্দ্রীয় সেচমন্ত্রীর সঙ্গে
মুখ্যমন্ত্রীর ঘাটাল সফরের পরই বন্যা পরিস্থিতি নজরে রেখে দীর্ঘ বৈঠকে বসে নবান্ন। সেই বৈঠকে গঠিত হয় কমিটি।
কলকাতা: আগামী মঙ্গলবার ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান, দিঘা মাস্টারপ্ল্যান, সুন্দরবন মাস্টারপ্ল্যান-সহ একাধিক বিষয় নিয়ে আলোচনায় বসছে রাজ্যে। দুপুর ২টোয় নীতি আয়োগের ভাইস চেয়ারম্যানের সঙ্গে এই বৈঠক হবে। তবে তার আগে কেন্দ্রীয় সেচমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসবে বাংলার প্রতিনিধি দল। সে কারণে রাজ্যের সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রের নেতৃত্বে আট সদস্যের দল যাচ্ছে দিল্লিতে। কী দাবি রাখা হবে তা ইতিমধ্যেই চূড়ান্ত করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই প্রতিনিধি দলে সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র ছাড়াও থাকছেন মানস ভুঁইয়্যা, শিউলি সাহা, শ্রীকান্ত মাহাতো, হুমায়ুন কবীর, সুখেন্দুশেখর রায়, দেব ও জুন মালিয়া।
বর্ষা ও নিম্নচাপের জোড়া ফলায় চলতি মাসে বাংলার একাধিক জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। বিশেষ করে হাওড়া, হুগলির একাধিক জায়গা, মেদিনীপুরের ঘাটালের পরিস্থিতি মারাত্মক হয়। বানভাসি এলাকা সরেজমিনে ঘুরে দেখেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘাটালে দাঁড়িয়ে গত ১১ অগস্ট মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, এই অবস্থার জন্য কেন্দ্র দায়ী। পরিকল্পিত বন্যা’র অভিযোগের পাশাপাশি ঘাটাল মাস্টার প্ল্য়ান রূপায়ণে জেলার জনপ্রতিনিধিদের দিল্লি গিয়ে দরবার করারও নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। অন্যদিকে, ঘাটালের সাংসদ দেবের বক্তব্য ছিল, “ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে আমরা দীর্ঘদিন ধরে যুদ্ধ করছি। আমি নিজে বহু বার সংসদে এ প্রসঙ্গ তুলেছি। দিল্লিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় সেচমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছি।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই বলেছেন, ঘাটাল নিচু জায়গা। মাস্টার প্ল্যান ছাড়া কোনও ভাবেই ঘাটালকে রক্ষা করা সম্ভব নয়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বার বার মাস্টার প্ল্যান নিয়ে বলা হচ্ছে। কেন্দ্র তাতে কিছুতেই অনুমোদন দিচ্ছে না। এদিকে জল ছেড়ে দেওয়ার ফলে পরিকল্পিত বন্যা হচ্ছে। ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে আমি সৌমেন মহাপাত্র, মানস ভুঁইয়্যাকে বলব কেন্দ্রীয় সেচ মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করুন। সঙ্গে শ্রীকান্ত মাহাতো, শিউলি সাহা, জুন মালিয়া, দেবও যাক। ওরা দাবি জানাক। আমি মনে করি লোকসভা ও রাজ্যসভার সাংসদরাও সঙ্গে যান। না হলে কিন্তু ঘাটালকে বাঁচানো যাবে না।”
মুখ্যমন্ত্রীর ঘাটাল সফরের পরই বন্যা পরিস্থিতি নজরে রেখে দীর্ঘ বৈঠকে বসে নবান্ন। সেই বৈঠকে গঠিত হয় কমিটি। কমিটির চার প্রতিনিধি ঘাটালেও যান পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সেচ ও নিকাশি বিভাগের প্রধান সচিব প্রভাত কুমার মিশ্রও ছিলেন সেখানে। চার সদস্যের প্রতিনিধি দল হরিশপুর, প্রতাপপুর বাঁধ, শীলাবতী বাঁধ এলাকা ঘুরে দেখেন। একই সঙ্গে জেলার মন্ত্রী, বিধায়ক, সাংসদদের নিয়েও বৈঠক করা হয়।
সিদ্ধান্ত হয় আবারও ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান-সহ একাধিক প্রকল্পের দাবি নিয়ে কেন্দ্রীয় সেচমন্ত্রীর সঙ্গে রাজ্যের প্রতিনিধি দল দেখা করবে। সেই মতোই এবার দিল্লি যাচ্ছেন মানস ভুঁইয়্যা, সৌমেন মহাপাত্র, জুন মালিয়া, দেবরা। একই সঙ্গে এই বিষয়ে নীতি আয়োগের সঙ্গেও আলোচনায় বসছে রাজ্য। কী ভাবে মাস্টার প্ল্যানের পরিকল্পনার সফল বাস্তবায়ন করে বছরকার এই প্লাবন থেকে রক্ষা করা যায় সেদিকেই নজর রাজ্যের। আরও পড়ুন: লাশকাটা ঘরে শুয়ে অভিজিৎ! মা জন্মদিনে রেঁধে দিল পছন্দের খাবার, দাদা আনল শার্ট-পারফিউম