RG Kar Hospital: আরজি করে ছাত্র আন্দোলনের জট কাটাতে এবার হস্তক্ষেপ স্বাস্থ্য দফতরের
RG kar: রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান সুদীপ্ত রায়ের কড়া প্রতিক্রিয়া, ছাত্রদের অনড় অবস্থানের জন্য রোগী পরিষেবা ব্যাহত হলে তা কখনওই মেনে নেওয়া হবে না।
কলকাতা: চিকিৎসক পড়ুয়াদের অনশন-বিক্ষোভের জটে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল (RG Kar Medical College)। জট কাটানোর উদ্যোগে এবার ময়দানে নামল স্বাস্থ্য দফতরের। স্বাস্থ্য ভবনে অনশনকারী প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে এবার সরাসরি হস্তক্ষেপ করলেন স্বাস্থ্য সচিব।
স্বাস্থ্য ভবনে অনশনকারী প্রতিনিধিদের সঙ্গে স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্যের বৈঠক হয়। বৈঠকের পরে স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি ছ’টি সমস্যার সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে অনশন তোলার জন্য আর্জি জানিয়েছে। যদিও অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে অনড় আন্দোলনকারীরা। তাঁরা স্পষ্ট জানিয়েছেন, অধ্যক্ষ ইস্তফা না দিলে তাঁরা অনশন প্রত্যাহার করবেন না।
গত দু’মাস ধরে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আন্দোলন চালাচ্ছেন চিকিৎসক পড়ুয়ারা। এরপর গত প্রায় ৩১০ ঘণ্টা ধরে তাঁরা অনশন অবস্থান শুরু করেছেন। বৃহস্পতিবার বেলগাছিয়া ব্রিজের উপর তাঁরা মানব বন্ধন করেন। সেই মানব বন্ধনে দুষ্কৃতী হামলারও অভিযোগ ওঠে। যার প্রতিবাদে শুক্রবার একটি মিছিলও করেন পড়ুয়ারা।
এরই মধ্যে এদিন আচমকাই গোটা ঘটনার পট পরিবর্তন ঘটে। সরাসরি স্বাস্থ্য ভবনের হস্তক্ষেপ লক্ষ্য করা যায় শুক্রবার। স্বাস্থ্য ভবনে স্বাস্থ্য সচিবের নেতৃত্বে ছয় সদস্যর একটি কমিটি তৈরি করা হয়। পাশাপাশি অধ্যক্ষ ও এমএসভিপি বাদ দিয়েই ছাত্র ছাত্রীদের সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
যদিও আন্দোলনকারীরা বলছেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম এদিনের বৈঠকের পর কোনও সদুত্তর পাব। কিন্তু বৈঠকে গিয়ে দেখলাম আমাদের আগে যেমন ঘুরিয়ে ফিরিয়ে কথা বলা হতো, এদিনও বোঝানোর চেষ্টা করা হল। কিন্তু অধ্যক্ষের পদত্যাগ নিয়ে কথা তুললেই তা অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অন্য বিষয় নিয়ে কথা বলা হয়েছে। তাই আপাতত আমাদের আন্দোলনটা আমরা চালিয়ে যাব। অনশনও চলবে।’
কিন্তু কেন অধ্যক্ষের পদত্যাগ চাইছেন পড়ুয়ারা। তাঁদের দাবি, অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এমন কিছু সিদ্ধান্ত নেন যা অগণতান্ত্রিক। যেখানে অধ্যক্ষের স্বৈরাচারী মনোভাব স্পষ্ট হয়। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, “গত ৯ অগস্ট আমরা মিটিংয়ে বসতে চেয়ে প্রিন্সিপাল স্যারের কাছে যাই। স্যার আমাদের সঙ্গে মিটিং না করায় আমরা অবস্থানে বসতে বাধ্য হই। ১০ অগস্ট আমাদের আশ্বাস দেওয়া হয়, দাবিদাওয়া নিয়ে কলেজ কাউন্সিলের বৈঠক হবে। যদিও কোনও অজ্ঞাত কারণে তা হয়নি। আমরা এই ব্যাপারে প্রশ্ন করলে বলা হয় যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ না এলে কলেজ কাউন্সিলের মিটিং করা যাবে না।”
গত কয়েকদিনে বার বার শিরোনামে উঠে এসেছে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নাম। গত ১ অক্টোবরই আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষকে ঘেরাও করে দফায় দফায় বিক্ষোভে সরগরম হয়ে ওঠে হাসপাতাল চত্বর। মাঝরাতে রোগী কল্যাণ কমিটির চেয়ারম্যান সুদীপ্ত রায়ের উপস্থিতিতে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ও বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের মধ্যে ঘণ্টা তিনেকের আলোচনা চলে।
এর আগেও আরজি করের অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে একাধিকবার ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ দেখান ছাত্র-ছাত্রীরা। মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাসে পোস্টারও পড়ে। যেখানে অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবি করা হয়। সেই ঘটনা ঘিরে হাসপাতালের এমএসভিপি সঞ্জয় বশিষ্ঠকে অসুস্থ হয়ে কার্ডিওলজি বিভাগে ভর্তি পর্যন্ত হতে হয়।
যদিও শুক্রবারের বৈঠকের পরে আরজিকরের ছাত্র ছাত্রীদের অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে অনড় থাকা নিয়ে রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান সুদীপ্ত রায়ের কড়া প্রতিক্রিয়া, ছাত্রদের অনড় অবস্থানের জন্য রোগী পরিষেবা ব্যাহত হলে তা কখনওই মেনে নেওয়া হবে না।
আরও পড়ুন: Corona Update: পুজোর কলকাতায় সংক্রমণের গ্রাফ চড়েই রয়েছে, একদিনে আক্রান্ত ১২৭