Subrata Mukherjee passes away: ‘ভাইফোঁটার গিফটও কেনা হয়ে গিয়েছিল, এমন দাদা যেন জন্ম জন্মান্তরে পাই…’, কথা বলার ক্ষমতাই নেই বোনেদের
Subrata Mukherjee asses away: TV9 বাংলার প্রতিনিধির সামনে ঢুকরে কেঁদে উঠলেন তনিমাদেবী। বলে উঠলেন, "এরকম দাদা যেন জন্ম জন্মান্তরে পাই। এরকম দাদা যেন সকলে পান। ওত্ত বড় মানুষ কিন্তু দাদার কোনও অহংকার ছিল না। "
কলকাতা: ‘ভাইফোঁটার গিফটও কেনা হয়েছিল। তিন দিন আগে বোনের বরকে নিয়ে গিয়েছিলাম দাদার সঙ্গে দেখা করতে। তখনও তো আমাদের সঙ্গে হেসেই কথা বলল। অনেকক্ষণ ধরে গল্পু করল। মনেই হয়নি দাদা চলে যেতে পারে। আমি কিচ্ছু বলত পারছি না….’ গলা কেঁপে উঠল প্রয়াত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের (Subrata Mukherjee) বোন তনিমাদেবীর।
রাজ্যের মন্ত্রী তিনি। একাধিক দফরের দায়িত্ব তাঁর কাঁধে। ৫০ বছরের পরিষদীয় রাজনীতি। কিন্তু মন্ত্রী কিন্তু তাঁর ঘর-পরিবারকেও সামলেছেন অত্যন্ত দায়িত্বের সঙ্গে। নিতান্ত বাড়ি-ঘেঁষা একজন মানুষ ছিলেন। খেতে ভালোবাসতেন সুুব্রতবাবু।প্রত্যেকবারের ভাইফোঁটায় তাঁর ফোঁটা নেওয়ার ছবি ফুটে উঠল টিভি পর্দায়।
এই ছবি গতবারের ভাইফোঁটার। বোন তনিমাদেবীর বাড়িতেই ফোঁটা নিতে গিয়েছিলেন তিনি। সামনে সাজানো পঞ্চব্যঞ্জন। এবছরও ভাইফোঁটার গিফট কেনা হয়ে গিয়েছিল। ঠিক হয়ে গিয়েছিল মেনুও। কিন্তু আচমকাই চলে গেলেন সুব্রতবাবু। আজও সকালে পিন ওয়ার্ল্ডে পৌঁছে গিয়েছেন তনিমা।
TV9 বাংলার প্রতিনিধির সামনে ঢুকরে কেঁদে উঠলেন তনিমাদেবী। বলে উঠলেন, “এরকম দাদা যেন জন্ম জন্মান্তরে পাই। এরকম দাদা যেন সকলে পান। ওত্ত বড় মানুষ কিন্তু দাদার কোনও অহংকার ছিল না। ” আরেক দিদি বললেন, “সেদিন আর আসবে না। আর কোনওদিনও নিজের হাতে রান্না করে দাদাকে খাওয়াতে পারব না।”
সুব্রতবাবুর বাড়ির ছোট জামাই বলেন, “আমাদের দাদা গোটা পরিবারকে আগলে রাখতেন। আমরা অভিভাবকহীন হয়ে পড়লেন। আমি একজন অত্যন্ত সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে। আমাকে ওঁ পছন্দ করেছিলেন। কোনওদিনও দাদার মধ্যে মন্ত্রী বলে কোনও অহঙ্কার দেখিনি।”
সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে শোকবিহ্বল মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। ‘সুব্রতদা’ বলে ডাকতেন তিনি। বৃহস্পতিবারই তিনি বলে দিয়েছেন, “সুব্রতদার দেহ আমার পক্ষে দেখা সম্ভব নয়।”
বৃহস্পতিবার এসএসকেএম হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। রাত ৯ টা ২২ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সুব্রত। ২৫ অক্টোবর থেকে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার কথা ছিল আজ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হার্ট অ্যারিথমিয়া। মুহূর্তে সব শেষ। ২৪ অক্টোবর প্রবল শ্বাসকষ্ট, হৃদরোগের উপসর্গ নিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয় সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে। চিকিত্সা চলছিল আইসিসিইউতে। হৃৎপিণ্ড ঠিকমতো পাম্প না করায় বাইপ্যাপে চিকিত্সা চলছিল। ভর্তির সময় থেকেই একাধিক হার্ট অ্যারিথমিয়া হয় তাঁর। একইসঙ্গে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, করোনারি অর্টারিয়াল ডিজিজে হৃৎপিণ্ডের মাংসপেশীও দুর্বল ছিল। সোমবার বুকে দুটি স্টেন্ট বসানো হয়। তারপরের দুদিন হৃৎপিণ্ডের ছন্দপতন ঘটেনি। গতকাল সন্ধ্যায় মেডিক্যাল বোর্ডের দুই সদস্য চিকিত্সকের ভিজিটের সময়ও সুস্থ ছিলেন। বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকরা সন্ধ্যা ৬.৪৫ নাগাদ হাসপাতাল ছাড়তেই বিপত্তি। সেই লড়াই থেকে আর ফিরতে পারলেন না সুব্রত মুখোপাধ্যায়। ১১ দিনের লড়াই শেষে না ফেরার দেশে পঞ্চায়েতমন্ত্রী।