মুকুলের পরামর্শেই গা ঢাকা দিই! অস্তিত্ব নেই লাল ডায়রির: বিস্ফোরক সুদীপ্ত

প্রধানমন্ত্রী-সহ দেশের রাষ্ট্রপতি, এবং সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ও সিবিআই অধিকর্তার উদ্দেশে চিঠি লিখে এমন দাবি করেছেন সারদা-কর্তা

মুকুলের পরামর্শেই গা ঢাকা দিই! অস্তিত্ব নেই লাল ডায়রির: বিস্ফোরক সুদীপ্ত
অলংকরণ- অভীক দেবনাথ
Follow Us:
| Updated on: Dec 28, 2020 | 6:53 PM

কলকাতা: মুকুল রায়ের (Mukul Roy) পরামর্শেই কলকাতা ছেড়ে গা ঢাকা দিয়েছিলেন সুদীপ্ত সেন (Sudipta Sen)। আর যে লাল ডায়রি নিয়ে এত হইচই, তার নাকি কোনও অস্তিত্বই নেই। অতিসম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী-সহ দেশের রাষ্ট্রপতি, এবং সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ও সিবিআই অধিকর্তার উদ্দেশে চিঠি লিখে এমন দাবি করেছেন সারদা-কর্তা। দিনকয়েক আগেই ব্যাঙ্কশাল কোর্টে দাঁড়িয়ে ওই চিঠির কথা উল্লেখ করেছিলেন সারদা মামলার আরেক অভিযুক্ত কুণাল ঘোষ। সেই চিঠি ও তার সঙ্গে এই বিস্ফোরক তথ্যগুলি এদিন প্রকাশ্যে এসেছে।

২১ পাতার এই দীর্ঘ চিঠির প্রতি ছত্রে সুদীপ্ত সেন দাবি করেছেন, তিনি প্রতারণা করতে চাননি। তাঁকে ভুল পথে পরিচালনা করেছেন কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, এবং তাঁরাই সাধারণ মানুষের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। সেই তালিকায় প্রথমেই রয়েছে প্রাক্তন রেলমন্ত্রী, বর্তমানে বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের নাম। সারদা কর্তার অভিযোগ, মুকুল রায় এবং তাঁর সঙ্গীদের নির্দেশেই যে তিনি কলকাতা ছেড়ে গা ঢাকা দিয়েছিলেন।

সুদীপ্ত সেন ফের একবার তাঁর চিঠিতে দাবি করেন, বেশ কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব তাঁর কাছ থেকে আর্থিক ভাবে লাভবান হয়েছেন। সেই তালিকায় রয়েছে সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া রাজ্যের প্রাক্তন পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী, সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী এবং কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরীর নাম। শুভেন্দুকে নিয়ে সুদীপ্ত লিখেছেন, তিনি ৬ কোটি টাকা নিয়েছিলেন। সারদা-কর্তার দাবি, কাঁথিতে ২২ তলা আবাসন করতে পুরসভার অনুমোদন প্রয়োজন ছিল। সেই সময় শুভেন্দুর ভাই সৌমেন্দু কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান ছিল। শুভেন্দুর এক বন্ধু টাকা নিতে আসত বলেও চিঠিতে দাবি করেছেন সুদীপ্ত।

নতুন এই চিঠিতে আরও এক চমকপ্রদ দাবি করেছেন সারদা কর্তা। লিখেছেন, লাল ডায়েরি বলে কোনও কিছুর অস্তিত্ব নেই। ঠিক যখন সিবিআই দেবযানী মুখোপাধ্যায়ের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটে দেওয়া একটি বয়ানের ভিত্তিতে নতুন করে রাজীব কুমারকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইছে, তখন লাল ডায়রির অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে গোটা তদন্তকে কার্যত আরও ঘোলাটে করে দিলেন সুদীপ্ত।

আরও পড়ুন: বদলি করা হল ডায়মন্ড হারবারের পুলিস সুপারকে

উল্লেখ্য, ইডি-কে দেওয়া বয়ানে দেবযানী একটি লাল ডায়েরির কথা উল্লেখ করেছিলেন। সেই ডায়েরির যে হদিশ নেই, তাও জানিয়েছেন দেবযানী। সারদা মামলার প্রাথমিক তদন্ত যখন রাজ্য পুলিস করছিল, সেই তদন্তকারী দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তৎকালীন বিধাননগর পুলিসের কমিশনার রাজীব কুমার। সিবিআই তদন্তভার নেওয়ার পর সেই রাজীবের বিরুদ্ধেই একাধিক তথ্যপ্রমাণ লোপাট-সহ লাল ডায়রি নিরুদ্দেশ করে দেওয়ার অভিযোগ তোলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। দেবযানীর সেই লাল ডায়রির বয়ানকে হাতিয়ার করেই যখন সিবিআই রাজীব কুমারকে হেফাজতে চাইছে, সেই পরিস্থিতিতে ফের সারদা-কর্তার জেল থেকে লেখা চিঠি কী ভূমিকা নেয় সেটাই এখন দেখার। TV9 বাংলার পক্ষ থেকে ওই চিঠির সত্যতা যাচাই করা হয়নি।

আরও পড়ুন: তৃণমূল ছাড়ার পর এই প্রথম নন্দীগ্রামের মাটিতে পা রাখছেন শুভেন্দু, মঙ্গলবার পদযাত্রা