Medical Politics : ‘যুযুধান’ দুই পক্ষ আজ একমঞ্চে, নির্মল-শান্তনুর ‘জোট’ নিয়ে জল্পনা
Medical Politics : একসময় নির্মল মাঝির সঙ্গে বিরোধের জেরে প্রোগ্রেসিভ ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন থেকে বেরিয়ে নতুন মঞ্চ তৈরি করেছিলেন শান্তনু সেন অনুগামীরা। কলকাতা আইএমএ শাখার নির্বাচনে দুই চিকিৎসক নেতার শিবিরের তরজা এখনও স্মৃতিতে তাজা।
কলকাতা: শান্তনু সেন-নির্মল মাজির সম্পর্ক কেমন? শনিবারের আগেও এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া ছিল জলবৎ তরলং। কেউ বলেন, ‘অহি-নকুল’। আবার কারও চোখে ‘মধুর’। তবে সেটা তির্যক অর্থে। শনিবার এনআরএসে প্রোগ্রেসিভ ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশনের (Progressive Doctors Association) বার্ষিক সভা সেই ধারণাকেই অতীত করে দিল। এক মঞ্চে তৃণমূলের (Trinamool Congress) যুযুধান দুই চিকিৎসক নেতার উপস্থিতি সাম্রাজ্য অটুট রাখার তাগিদ থেকেই বলে মনে করছেন সরকারি চিকিৎসকদের একাংশ।
একসময় নির্মল মাঝির সঙ্গে বিরোধের জেরে প্রোগ্রেসিভ ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন থেকে বেরিয়ে নতুন মঞ্চ তৈরি করেছিলেন শান্তনু সেন অনুগামীরা। কলকাতা (Kolkata) আইএমএ শাখার নির্বাচনে দুই চিকিৎসক নেতার শিবিরের তরজা এখনও স্মৃতিতে তাজা। সে সব এখন অতীত।
নির্মল মাঝি অবশ্য বলছেন, “আমরা বরাবরই একে অপরের পরিপূরক। কিন্তু, কিছু মিডিয়া প্রচার করেছে আমাদের বিরুদ্ধে। আমাদের স্বচ্ছতা, সততা, দায়বদ্ধতা নিয়ে আমরা চলি। অনেকেই আমাদের মধ্যে একটা দূরত্ব তৈরি করতে চেয়েছেন। আইএমএ নির্বাচনে আমার সঙ্গে শান্তনু সেনের কিছু হয়নি। অন্য কারও হতে পারে। আমার সঙ্গে কিছু হয়নি।” খানিক একই সুর শান্তনু সেনের গলাতেও। তিনি বলেন, “কলকাতা আইএমএ নির্বাচনে আমি একজন নন মেডিক্যাল লোককে দেখেছিলাম বলে প্রতিবাদ করেছিলাম। সেখানে শান্তনু সেন ও নির্মল মাঝির মধ্যে কোনও বিরোধ হয়নি। আমরা দুজন গুরু শিষ্য। আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে অনুগত প্রাণ আজ থেকে নয়, ছাত্র জীবন থেকে।”
যুযুধান দুই পক্ষ স্বেচ্ছায় কাছাকাছি। কেন? স্বাস্থ্য মহলের অন্দরে কোথাও কোথাও শোনা যাচ্ছে এই পট পরিবর্তনের নেপথ্য নায়ক চক্ষু বিশেষজ্ঞ সুশান্ত রায়। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন মেডিক্যাল কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট তথা হেলথ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের চেয়ারম্যান সুদীপ্ত রায়। সুশান্তের বদন্যতাতেই উত্থান সুদীপ্তর। এই আবহে প্রোগ্রেসিভ ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশনের মঞ্চে হাতে হাত শান্তনু-নির্মলের। সুদীপ্ত রায়-সুশান্ত রায়ের উত্থানই কী এর কারণ? উত্তর দিতে গিয়ে সরাসরি সুদীপ্ত-সুশান্ত প্রসঙ্গে এড়িয়ে শান্তনুর উত্তর, “আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুগত সৈনিক। উনি যদি আমাদের দারোয়ান গিরি করতে বলেন তাই করব। ওনার নির্দেশই শিরোধার্য। তৃণমূল একটা টিম। উনি যখন যেখানে যাঁকে কাজে লাগানোর কথা ভাবেন তাঁকে সেই দায়িত্ব দেন। আমরা কাজ করে যাই।” মুখে বলছেন, কারও উত্থানে এই কাছাকাছি আসা নয়। তবে দুই নেতার কাছাকাছি আসা যে স্বাভাবিক নয়, তা মানছেন চিকিৎসক নেতার অনুগামীরাও।
জুনিয়র চিকিৎসক মহম্মদ মিরাজউদ্দিন বলেন, “কলকাতা আইএমএ নির্বাচনে কী হয়েছিল সেটা বাদ দিন। ওটা একটা অ্যক্সিডেন্ট ছিল। কিন্তু আমরা সবাই মা-মাটি সরকারের দল করি। তাঁর নির্দেশেই এই প্রোগ্রাম। শান্তনু সেন, নির্মল মাঝি একমঞ্চে থাকবেন এটাই তো বিভেদের মাঝে ঐক্য।” বিরোধের আশঙ্কা কি পুরোপুরি কাটিয়ে ওঠা গিয়েছে? নইলে দুই নেতার নামে জয়ধ্বনি উঠলেও অডিটোরয়ামের ভিতর থেকে দ্রুত পায়ে বাইরে বেরিয়ে জুনিয়র চিকিৎসকদের উদ্দেশে নির্মলবাবুকে কেন বলতে শোনা গেল, লোকে তো ভাববে বিক্ষোভ হচ্ছে!