Journalist Attacked: রিপোর্টারের পরিবারের কথা ভেবে এক পা পিছিয়েছি, এবার দশ পা এগোব: TV9 বাংলার ম্যানেজিং এডিটর
Journalist Beaten: আগ্নেয়াস্ত্রর ভয় দেখিয়ে, প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে জোর করে ফেসবুক লাইভ এসে বলতে বাধ্য করা হয়, যা খবর প্রকাশিত হয়েছে না ভুল। কোনওরকমে সেখান থেকে প্রাণ হাতে নিয়ে হাইওয়েতে পৌঁছানোর পর পুলিশ তাঁদের উদ্ধার করেন।
কলকাতা: ফের আক্রান্ত টিভি নাইন বাংলা (TV9 Bangla Journalist Heckcled)। এবার বীরভূমের নলহাটিতে (Nalhati) বিভাস অধিকারীর ডেরায় খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার টিভি নাইন বাংলার সাংবাদিক ও ক্যামেরাপার্সন। ভাঙচুর করা হয়েছে ক্যামেরা। বিভাসের দুই ছেলের নেতৃত্বে প্রায় জনা পঞ্চাশ গ্রামবাসী ঘিরে ধরেন টিভি নাইন বাংলার প্রতিনিধিদের। গাড়ির চালকের থেকে চাবি ছিনিয়ে নেওয়া হয়। দুই প্রতিনিধিকে রাস্তায় ফেলে পেটে, মুখে, হাতে এলোপাথাড়ি মারতে শুরু করে। আগ্নেয়াস্ত্রর ভয় দেখিয়ে, প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে জোর করে ফেসবুক লাইভ এসে বলতে বাধ্য করা হয়, যা খবর প্রকাশিত হয়েছে, তা ভুল। কোনওরকমে সেখান থেকে প্রাণ হাতে নিয়ে হাইওয়েতে পৌঁছানোর পর পুলিশ তাঁদের উদ্ধার করেন।
টিভি নাইন বাংলার উপর হামলা এই প্রথম নয়। এর আগেও বার বার আক্রান্ত হয়েছেন আমাদের প্রতিনিধিরা। এই হামলার কড়া ভাষায় নিন্দা জানিয়েছেন টিভি নাইন বাংলার ম্যানেজিং এডিটর অমৃতাংশু ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “আমরা জানি একজন সৈনিকের কাজ কী। তাঁকে যুদ্ধক্ষেত্রে যেতে হবে, গুলি খেতে হবে। আমরা তার জন্য প্রস্তুত রয়েছি।” কিন্তু, যখন কোনও দুষ্কৃতীর স্বরূপ সাংবাদিকরা চিনিয়ে দেয়, তখন সেই দুষ্কৃতীরা সেই রূপটা প্রকাশ করে দেয়। এমনই মনে করছেন অমৃতাংশু ভট্টাচার্য।
যখন নলহাটিতে টিভি নাইন বাংলার প্রতিনিধিদের আটকে রাখা হয়েছিল, যখন তাঁদের জোর দেওয়া হচ্ছিল, বাধ্য করা হচ্ছিল ফেসবুক লাইভে এসে ‘ভুল খবর’ প্রকাশিত হয়েছে, এমন বলার জন্য… তখন সাংবাদিকের মোবাইলের অপর প্রান্তে ছিলেন টিভি নাইন বাংলার ম্যানেজিং এডিটর অমৃতাংশু ভট্টাচার্য। যেভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল, সেই সব ফোনের অপর প্রান্ত থেকে শুনতে পাচ্ছিলেন তিনি। তিনি টিভি নাইন বাংলার প্রতিনিধিকে দুষ্কৃতীদের দাবি মতো কথা বলার অনুমতি দেন। কেন? কারণ, প্রতিটি সাংবাদিকের একটি পরিবার থাকে। অমৃতাংশু ভট্টাচার্যর কথায়, যেভাবে বাংলার প্রতিটি মানুষের কাছে তিনি দায়বদ্ধ, ঠিক একইভাবে চ্যানেলের ম্যানেজিং এডিটর হিসেবে সংস্থার প্রতিটি কর্মীর কাছেও তিনি দায়বদ্ধ।
তিনি বললেন, ‘আমরা দায়বদ্ধ বলেই যারা দুষ্কৃতী, যারা দুর্নীতিপরায়ণ, তাদের খবর তুলে ধরছি। আমরা জানি, আমরা আক্রান্ত হব। বিভিন্ন ভাবে আক্রান্ত হব। রাজি আছি। কিন্তু এমনটা আশা করিনি।’ যেভাবে একজন সাংবাদিককে আটকে রেখে টিভি নাইন বাংলার ডিজিটাল প্লাটফর্ম, সোশ্যাল প্লাটফর্ম থেকে প্রকাশিত খবর ডিলিট করানোর উপর চাপ দেওয়া হচ্ছিল, সেই আস্পর্ধা দেখে স্তম্ভিত তিনি। বললেন, “আমি সমস্ত কিছু ডিলিট করিয়েছি। আমরা লড়াই করি। লড়াইয়ে কখনও কখনও এক পা পিছোতে হয়।” রাস্তায় আসার পর যতক্ষণ পর্যন্ত না পুলিশ তাঁদের উদ্ধার করেছে, ততক্ষণ পর্যন্ত সাংবাদিকের ক্ষমা চেয়ে ফেসবুক লাইভটি অন ছিল। পুলিশ এসে তাঁদের উদ্ধার করার পর, আবার খবরগুলি পাবলিশ করা হয়।
ম্যানেজিং এডিটর অমৃতাংশু ভট্টাচার্য বলছেন, “এবার এই লোকগুলি বুঝতে পারবে, কোনও মিডিয়ার গায়ে হাত দিলে পরিণাম কী হতে পারে। একজনের গায়ে হাত দিলে, গোটা মিডিয়া ফ্যাটার্নিটিকে এদের সহ্য করতে হবে। বুঝতে হবে, একজন সাংবাদিকের গায়ে হাত দিয়ে, বাকি সাংবাদিকরাও কীভাবে পিঠে যন্ত্রণা অনুভব করে। দুষ্কৃতীদের কোনও পার্টি হয় না, কোনও জাত হয় না, এদের পরিচয় শুধুই দুষ্কৃতী। যত এরকম দুষ্কৃতী ও দুর্নীতিবাজ থাকবে, আমরা কাউকে ছাড়ব না। তাদের মুখোশ খুলে দেওয়া আমাদের কাজ। সেই কাজ আমরা করে যাব। আজ সহকর্মীর কথা ভেবে, তাঁর পরিবারের কথা মাথায় রেখে আজ পিছিয়েছি। আগামীতে দশ পা এগোব। পারলে আটকে দেখাক।”