বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগেও বেনজির তরজা! টুইট-যুদ্ধে রাজ্যপাল বনাম শিক্ষামন্ত্রী
রাজ্যপালের এই টুইটের কিছুক্ষণ পর আরেকটি টুইট করেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। তিনি লেখেন, ‘সার্চ কমিটির অনুমোদনে রাজ্য উচ্চ শিক্ষা দফতর দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে সঞ্চারী রায় মুখোপাধ্যায়কে নিয়োগ করেছে।‘
কলকাতা: ২০১৮ সালে বিধানসভায় আইন পাশ হয়ে খাতায় কলমে পথ চলা শুরু করে দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়। তবে দু’বছর পর এই প্রথম সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করলেন আচার্য জগদীপ ধনখড় (Jagdeep Dhankhar)। তবে নিয়োগ নিয়েও এবার টুইটারে তরজায় জড়ালেন রাজ্যপাল ও শিক্ষামন্ত্রী।
এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের কথা টুইট করে ঘোষণা করেন আচার্য জগদীপ ধনখড়। সেখানে তিনি লেখেন, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপিকা সঞ্চারী রায় মুখোপাধ্যায়কে দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ করা হল। ৬১ বছরের সঞ্চারী আগামী ৪ বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করবেন বলেও জানান রাজ্যপাল।
Under Sec 64(4) of Dakshin Dinajpur University Act, 2018, Prof. Sanchari Roy Mukherjee, Prof. of Economics, North Bengal University, is appointed as first Vice Chancellor of Dakshin Dinajpur University for four years or till he attains age of sixty-five, whichever is earlier.
— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) December 15, 2020
তবে রাজ্যপালের এই টুইটের কিছুক্ষণ পর আরেকটি টুইট করেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। তিনি লেখেন, ‘সার্চ কমিটির অনুমোদনে রাজ্য উচ্চ শিক্ষা দফতর দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে সঞ্চারী রায় মুখোপাধ্যায়কে নিয়োগ করেছে।‘ পার্থর আরও বক্তব্য, ‘রাজ্যের প্রত্যেক কোণায় উচ্চশিক্ষার পৌঁছে দেওয়ার স্বপ্ন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সত্যি করেছেন। উত্তরবঙ্গের মানুষের জন্য একটা দারুণ মুহূর্ত।‘
লক্ষণীয় বিষয় হল, রাজ্যের তরফে রাজ্যপালের সবরকম টুইট সর্বদাই এড়িয়ে যাওয়া হলেও এ ক্ষেত্রে তেমনটা হয়নি। পার্থর পাল্টা টুইট দেখে রাজ্যপালও চুপ করে থাকেননি। কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি আবার লেখেন, ‘ভুল জায়গায় একজনের ক্ষমতা প্রদর্শন বন্ধ হওয়ার সময় এসেছে। আইন মোতাবেক উপাচার্য নিয়োগের পূর্ণ ক্ষমতা আচার্যেরই রয়েছে।‘ পাশাপাশি তিনি মনে করিয়ে দেন, সার্চ কমিটির চেয়ারপার্সনও আচার্যই নিয়োগ করেন।
আরও পড়ুন: শুভেন্দুর ৯ চোখা কথা, উঠে এল হত্যা-অকৃতদার-বহিরাগত তত্ত্বও
উপাচার্য নিয়োগ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্তিয়ার নিয়ে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বারংবারই রাজ্য বনাম রাজ্যপালের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে। আইন সংশোধন করে উপাচার্যদের জন্য রক্ষাকবচের ব্যবস্থা করা হলেও বারংবার প্রশ্ন তুলেছেন আচার্য। গতবছর আচার্যের পরামর্শ ছাড়া ডিলিট ডিএসসি প্রাককের নাম চূড়ান্ত করা নিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে ভর্ৎসনা করেন আচার্য। আন্দোলনের মুখে সমাবর্তন অনুষ্ঠানের দিন ফটক থেকেই ফিরে যেতে হয় আচার্যকে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেনেট বৈঠকে অংশ নেওয়াকে কেন্দ্র করেও তৈরি হয় বিতর্ক। পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে শোকজ নোটিশ পর্যন্ত পাঠানো হয় রাজভবন থেকে।
উপাচার্য নিয়োগ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের দৈনন্দিন কাজকর্মকে রাজভবনের ছত্রছায়া থেকে দূরে রাখার চেষ্টা নিয়ে বারবার সরব হতে দেখা গিয়েছে আচার্যকে। দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগকে কেন্দ্র সোশ্যাল মিডিয়ায় রাজ্যপাল বনাম আচার্যের টুইট তরজা এর আগে কখনও দেখা যায়নি। কে বড় এই লড়াইয়ের জল কতদূর গড়ায় এখন সেটাই দেখার।
আরও পড়ুন: আবাসনের ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু বিজেপি নেতার ছেলের, দুর্ঘটনা নাকি অন্য কিছু?