বিশ্লেষণ: এ বার ঘরে বসেই বদলির আবেদন! ‘উৎসশ্রী’র সব প্রশ্ন জানুন এক ক্লিকে

Utshashree: দূরের স্কুলে পোস্টিং হলে অনেক ক্ষেত্রেই হয়রানির শিকার হতে হয় শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। তাঁদের জন্যই রাজ্য সরকারের এই ঘোষণা।

বিশ্লেষণ: এ বার ঘরে বসেই বদলির আবেদন! 'উৎসশ্রী'র সব প্রশ্ন জানুন এক ক্লিকে
অলংকরণ- অভিজিৎ বিশ্বাস
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 22, 2022 | 1:15 PM

কলকাতা: শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পোস্টিং নিয়ে সমস্যা বহু বছরের। অনেককেই কয়েক ঘণ্টার পথ অতিক্রম করে স্কুলে যেতে হয়। ভোরে উঠে বাড়ি থেকে বেরিয়ে বাস-ট্রেনের ঝক্কি সামনে স্কুল। আর ফিরতে ফিরতেও হয়ে যায় রাত। একবার পোস্টিং হওয়ার পর বদলি পেতে মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হয় তাঁদের। কারও বাড়িতে রয়েছেন অসুস্থ ব্যক্তি, আর আবার সন্তান ছোট। সেই সব শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কথা মাথায় রেখে সম্প্রতি এক বিশেষ পোর্টাল তৈরি করেছে রাজ্য সরকার। ‘উৎসশ্রী’ পোর্টাল চালুর কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই পোর্টালের মাধ্যমে সহজেই আবেদন করা যাবে বদলির জন্য।

কী এই ‘উৎসশ্রী’?

যে সব শিক্ষক বা শিক্ষিকার বদলির প্রয়োজন, তাঁরা যাতে সহজেই অনলাইনে আবেদন করতে পারেন, তার জন্যই এই পোর্টাল চালু করা হয়েছে। প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক, সব স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারাই আবেদন জানাতে পারবেন। আবেদনের জন্য কোথাও যাওয়ার প্রয়োজন নেই।

চাইলেই আবেদন করা যাবে না, রয়েছে কিছু শর্ত:

একই বিদ্যালয়ে একটানা পাঁচ বছর কাজ করার পরই কোনও শিক্ষক বা শিক্ষিকা আবেদন করতে পারবেন। একবার বদলি হয়ে গেলে তারপর পাঁচ বছর আর আবেদন করা যাবে না। কোনও শিক্ষক বা শিক্ষিকা যদি আগে বদলির নির্দেশ পেয়েও তা ফিরিয়ে দিয়ে থাকেন, তাহলে পরের সাত বছর আর আবেদন করতে পারবেন না। কোনও শিক্ষক বা শিক্ষিকা যদি সাসপেন্ড হয়ে থাকেন, তাহলে তাঁর আবেদন করার সুযোগ নেই। কারও বিরুদ্ধে যদি বিভাগীয় তদন্ত চলে তাহলেও তিনি আবেদন করতে পারবেন না।

ঘরে বসেই সহজেই করা যাবে আবেদন:

‘উৎসশ্রী’র পোর্টালে গিয়ে আবেদন করতে হবে।নিজের এমপ্লয়ি আইডি ও প্যান কার্ড নম্বর জমা দিতে হবে পোর্টালে। তারপর মোবাইল নম্বরে ও ই-মেলে চলে আসবে একটি ওটিপি। এই ওটিপি নিৰ্দিষ্ট জায়গায় বসিয়ে লগ ইন করতে হবে। এরপর ক্লিক করতে হবে self initiated transfer অপশনে।

কোন জেলার স্কুলে আবেদন করতে চান, তা জানাতে হবে। অর্থাৎ নিজে যে জেলার বাসিন্দা সেখানে, নাকি অন্য জেলায় তা জানাতে হবে। সবথেকে বেশি তিনটি স্কুল পছন্দ করতে পারবেন তাঁরা। যে সব স্কুলে শূন্যপদ আছে কেবলমাত্র সেখানেই আবেদন করা যাবে।

কী কারণে তিনি আবেদন করছেন, তা জানাতে হবে। মোট ৬টি কারণ দেওয়া রয়েছে। এই ছয় কারণের মধ্যে একটি বেছে নিতে হবে। স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা, বয়স ৫৭ বছরের ওপরে হলে, সন্তানের বয়স ১০ বছরের কম হলে, নিজের বা পরিবারের কেউ মারণ রোগে আক্রান্ত হলে আবেদন করা যাবে। এ ছাড়া ‘অন্যান্য কারণ’-এরও একটি অপশন থাকবে। স্বাস্থ্যজনিত কারণ দেখানে প্রেসক্রিপশন সহ অন্যান্য প্রমাণ দিতে হবে। যদি কোনও শিক্ষক বা শিক্ষিকার প্রতিবন্ধকতা থাকে ৪০ শতাংশের ওপর, তিনিও প্রমাণ দেখিয়ে আবেদন করতে পারবেন। শুধু তাই নয়, স্বামী বা স্ত্রীর কর্মস্থলের নিকটও বদলির আবেদন করা যাবে। তবে স্বাস্থ্য বা সন্তানের কারণে আবেদন জানালে, তাঁদেরকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

Mamata

প্রক্রিয়া কত দূর এগোলো জানবেন কী ভাবে?

প্রত্যেকটি ধাপ পার করার পর মেল অথবা মেসেজ আসবে শিক্ষক-শিক্ষিকার কাছে। কোনও ত্রুটি থাকলে আবেদন আটকে যাবে। না থাকলে, আবেদন করার ১৪ দিনের মধ্যেই সমস্যার সমাধান করা যাবে। মেডিক্যাল গ্রাউন্ডে বদলির ভেরিফিকেশন করা হবে সিএমওএইচ-এর কাছ থেকে। সব কিছু ঠিক থাকলে বদলির আবেদন গ্রহণ করা হবে ও সেটা এমএমএস ও মেলের মাধ্যমেই জানা যাবে।

মিউচুয়াল ট্রান্সফারের নিয়ম কী?

এ ক্ষেত্রে কোনও একটি জেলা বা মহকুমায় কত জন মিউচুয়াল ট্রান্সফারের জন্য আবেদন করেছেন, তা খতিয়ে দেখা হবে। একই সার্কেলের মধ্যে ট্রান্সফারের আবেদন করা যাবে। চাকরিতে যোগদানের পর থেকে শিক্ষক শিক্ষিকাদের স্কোর তৈরি করা হবে। অনেকের স্কোর সমান হলে, বয়স অনুযায়ী, র‍্যাঙ্ক বের করা হবে। যিনি সিনিয়র হবেন, তাঁকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। যে তিনটি স্কুল পছন্দ করবেন, সেই স্কুলের মধ্যে সুযোগ না পেলে আবার স্কুল বাছাইয়ের সুযোগ দেওয়া হবে।