West Bengal Assembly: ১ বৈশাখই বাংলা দিবস, রাজ্য সঙ্গীত ‘বাংলার মাটি বাংলার জল’, প্রস্তাব পাশ বিধানসভায়

Mamata Banerjee: মমতা বলেন, এতদিন পর বাংলা দিবস পালন করার ভাবনা নেওয়া হয়েছে। কারণ এতদিন পশ্চিমবঙ্গ দিবস ও পালন হয়নি। সব চাপিয়ে দিলে সহ্য করতে পারব না।

West Bengal Assembly: ১ বৈশাখই বাংলা দিবস, রাজ্য সঙ্গীত 'বাংলার মাটি বাংলার জল', প্রস্তাব পাশ বিধানসভায়
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। Image Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 07, 2023 | 4:55 PM

১ বৈশাখই পালিত হবে ‘বাংলা দিবস’। বাংলার সঙ্গীত এবার থেকে ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল’। বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় আলোচনা শেষে পাশ হল এ সংক্রান্ত প্রস্তাব। বিজেপি প্রথম থেকেই ২০ জুন ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’-এর দাবি করে এসেছে। এদিন শুভেন্দু অধিকারী, শঙ্কর ঘোষরা অধিবেশনকক্ষে এ নিয়ে নিজেদের বক্তব্য পেশ করেন। তবে কেন ২০ জুন বাংলার দিবস হতে পারে না, তা নিজের মতো ব্যাখ্যা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উল্লেখযোগ্য, এদিন বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও বিজেপি বিধায়কদের যে পোশাকে দেখা গিয়েছে, সেখানে সামনে লেখা ‘২০ জুন পশ্চিমবঙ্গ দিবস’, পিঠে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ছবি।

বাংলার দিবস নিয়ে বিধানসভায় প্রস্তাব ও আলোচনা

  1. এরপরই ভোটাভুটি চায় বিজেপি। জয় বাংলা বনাম ভারত মাতা স্লোগান ওঠে অধিবেশন কক্ষে। পাশ হয় প্রস্তাব। প্রস্তাবের পক্ষে ভোট পড়ে ১৬৭। বিপক্ষে ৬২, বিরত ১। এরপরই মুখ্যমন্ত্রীর গলায় শোনা যায়, বাংলার মাটি, বাংলার জল গানটি।
  2. বক্তব্য শেষ করার আগে মমতা বললেন, “কে সাপোর্ট করল না করল যায় আসে না। আমাদের নির্দেশ থাকবে, বাংলা দিবস পালন করব পয়লা বৈশাখ। শুভ নববর্ষের দিন। গান থাকবে বাংলার মাটি বাংলার জল।”
  3. আমি জানি অন্য একটি রাজনৈতিক দলের মিটিং আছে। যাওয়ার আগে বলেই দিলেন, রাজ্যপালকে বলবেন সই না করতে। মনে রাখবেন, কিছু কিছু জিনিস জোর করে চাপিয়ে দেওয়া যায় না। : মমতা
  4. রাখিবন্ধনকে মর্যাদা দিয়ে বাংলার মাটি বাংলার জল এই সঙ্গীত ঠিক হোক। আমি ইমাম অ্যাসোসিয়েশন, রাজবংশী, আদিবাসী, হিন্দিভাষী, উর্দুভাষী, ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, মহামেডান ক্লাব সকলকে ডেকেছিলাম। অনেকে বিশ্ববাংলা প্রতিষ্ঠার দিনটিও বলেছেন। তবে আমরা মনে করি যা মানুষের মনেপ্রাণে লেগে আছে, সেটাই গ্রাহ্য হোক। আমরা মনে করি বাংলার ক্যালেন্ডারে প্রথম দিনটা ১ বৈশাখকে পশ্চিমবঙ্গ প্রতিষ্ঠা দিবস হিসাবে ঘোষণা করতে চাই। বাংলার মাটি, বাংলার জল রবীন্দ্রসঙ্গীতকে বাংলার সঙ্গীত হিসাবে কার্যকরী করতে চাই। : মমতা
  5. আমরা বাংলাদেশ নিয়ে আলোচনা করছি না। ওটা আলাদা দেশ। আমরা বাংলার কথা বলেছিলাম। তার পিছনে অনেক কারণ আছে। বাংলার নামটা একেবারে শেষে বলা হয় যেহেতু West Bengal। আমরা বাংলা শুধু বলতে পারি না কেন? পঞ্জাব যদি পাকিস্তানেও থাকে, পঞ্জাব যদি ভারতবর্ষেও থাকে সেক্ষেত্রে যদি করা যায়। তাহলে বাংলাদেশ আলাদা, আর বাংলা রাজ্য আলাদা, সেটাও করা যেতে পারে। আজ আপনারা ক্ষমতায় আছেন তাই করলেন না। কাল যখন ক্ষমতা থেকে উল্টোবেন তখন আমরা এটাকে করে দেবো। : মমতা
  6. রাজ্য পুনর্গঠন কমিশনের প্রসঙ্গ তুলতে চাইছেন অনেকে। রাজ্য পুনর্গঠন কমিশনের ১৯৫৬ সালে পুরুলিয়া, ইসলামপুর পেয়েছিলাম। এগুলো সবই পরের ব্যাপার। মূল পশ্চিমবঙ্গের গঠন স্থির হয় ১৫ অগস্ট। তাই বলব যদি বাংলার মানুষের জন্য কোনও সিদ্ধান্ত নিতে হয়, তা ভেবেচিন্তে নেওয়া ভাল। আমাদের কাছে ২-৩টে সাজেশন এসেছে। রাখিবন্ধনের দিন করা যেতে পারে। হিন্দু মহাসভাও বলে গিয়েছে, সাহিত্যিকরাও এসেছিলেন। ৯৯ শতাংশ মানুষ ১ বৈশাখের কথা বলে গিয়েছে। : মমতা
  7. আমরা এখানে জন্মগ্রহণ করেছি, বড় হয়েছি। কিন্তু এই কারণে স্বাধীনতার পরে ফাউন্ডেশন ডে বলে কখনও পালন করিনি। কারণ ওটা ছিল না আমাদের। বিধানসভাও কোনওদিন পাশ করেনি। কোনও ইতিহাসও ছিল না। যদি আদৌ কোনও পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালন করতে হয়, তাহলে দেশভাগের শোক ভুলিয়ে দেওয়া একটি দিন পালন করার কথা ভাবা যেতে পারে। : মমতা
  8. বাংলার ইতিহাসে দেশভাগ সেই সময় হয়ত ঐতিহাসিক অনিবার্যতা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এটা যেমন সত্যি। তেমন এটাও সত্যি, তার ভয়ঙ্কর আঘাতে লক্ষ্য লক্ষ্য বাঙালির জীবন ছারখার হয়ে গিয়েছিল। এক ঝটকায় তারা ছিন্নমূল হয়ে গিয়েছিল। হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল। অর্থনীতি ভেঙে পড়েছিল। পরিকাঠামো ধ্বংস হয়েছিল। : মমতা
  9. পশ্চিমবঙ্গ কোনও সাধু উদ্যোগে, কোনও এক বিশেষ দিনে রাজ্যের মর্যাদা নিয়ে পথচলা শুরু করেনি। বাংলা বহুকালের পুরনো রাজ্য। দেশভাগের এক অত্যন্ত বেদনাদায়ক প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে ১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্ট সেই বাংলাকে ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ সরকার যাওয়ার সময় দ্বিখণ্ডিত করে যায়। পশ্চিমবঙ্গ নামে একটি খণ্ডিত, টুকরো তৈরি হয়। : মমতা
  10. উত্তরপূর্ব ভারতে আবার নানা সময়ে একে একে রাজ্যগুলি তাদের পরিচিতি পায়। যেদিন রাজ্যগুলির যাত্রা শুরু হয় সেদিনই নাগাল্যান্ড, মণিপুর, মেঘালয়, মিজোরাম তাদের প্রতিষ্ঠা দিবস হয়। এইভাবে নানা ঐতিহাসিক প্রক্রিয়ার ফসল হিসাবে নানা সরকারি আদেশ বা আইন এবং স্থানীয় মানুষের চাহিদা অনুসারে নানা রাজ্যের জন্ম হয়। সেই রাজ্যের মানুষের আশা আকাঙ্খার প্রতীক ছিল রাজ্যগুলোর গঠন। তাই রাজ্যে রাজ্যে আনন্দের সঙ্গে প্রতিষ্ঠা দিবস পালিত হয়। বাংলায় এরকম কোনও ঘটনা ঘটেনি। : মমতা
  11. ২০০০ সালের ১ নভেম্বর। মধ্য প্রদেশ ভেঙে আদিবাসী অধ্যুষিত ছত্তীসগঢ় রাজ্যের যাত্রা শুরু হয়। ১ তারিখ তাই ছত্তীসগঢ় দিবস। ২০০০ সালের ৯ নভেম্বর পাহাড়ি মানুষের জন্য উত্তর প্রদেশ ভেঙে গঠিত হয় উত্তরাখণ্ড। ওই দিনটি হয় উত্তরাখণ্ড দিবস। ২০০০ সালের ১৫ নভেম্বর তারিখে বিহার ভেঙে আদিবাসী অধ্যুষিত ঝাড়খণ্ড রাজ্যের যাত্রা শুরু হয়। ওই দিনটি ঝাড়খণ্ড দিবস। : মমতা
  12. ১৯৬০ সালে ভাষাভিত্তিক রাজ্য গঠনের নীতি অনুসারে পুরনো বোম্বে রাজ্য থেকে গুজরাটকে বের করে স্বতন্ত্র্য রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া হয়। তখন থেকে ১ মে হয় গুজরাট দিবস। ওই গুজরাট থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে জন্ম নেয় মরাঠিভাষী মহারাষ্ট্র। তাই ১ মে মহারাষ্ট্র দিবসও। : মমতা
  13. স্বাধীনতার পর প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু ১৯৫৬ সালের ১ নভেম্বর অন্ধ্র ও তেলেঙ্গনার মিলন ঘটিয়ে হায়দরাবাদ থেকে নতুন অন্ধ্র প্রদেশ রাজ্যের উদ্বোধন করেন। ১ নভেম্বর অন্ধ্র প্রদেশ দিবস পালিত হয়। একইভাবে কেরল রাজ্য ১৯৫৬ সালের ১ নভেম্বর তারিখে তৈরি হয়। তাই ওইদিনটি কেরল দিবস হয়। এইভাবে ১৯৫৬ সালের ১ নভেম্বর তৈরি হয় কর্ণাটক রাজ্য। এখন ১ নভেম্বর হল কর্ণাটক দিবস। মধ্য প্রদেশও একইভাবে ১ নভেম্বর গঠিত হয়। এখন সেটা মধ্য প্রদেশ দিবস। : মমতা
  14. আবার ব্রিটিশ আমলেই ১৯৩৬ সালের ১ এপ্রিল বিহার রাজ্য থেকে ওড়িশাকে বের করে পৃথক ওড়িশা রাজ্য তৈরি হয়। সেই রাজ্য ঢোকে মাদ্রাজে। মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির কোরাপুট এবং গনজাম রাজ্য। আজ সেই ১ এপ্রিল হল উৎকল দিবস বা ওড়িশা দিবস : মমতা
  15. যেমন ব্রিটিশ আমলে ১৯১২ সালের ২২ মার্চ বাংলা ভেঙে তৎকালীন অবিভক্ত বাংলা বিহার ওড়িশা ডিভিশনকে মিলিয়ে পৃথক বিহার রাজ্য তৈরি হয়। এখন সেই ২২ মার্চ হল বিহার দিবস। ২০১০ সালে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার উদযাপন শুরু করেন। : মমতা
  16. আসলে যাদের সঙ্গে বাংলার মাটির কোনও যোগাযোগ নেই, বাংলার মানুষের কোনও যোগাযোগ নেই, বাংলার মানুষের অন্তরে যে গভীর শিকড় তার সঙ্গে যোগাযোগ নেই। তারা কী করে বাংলার কথা বলবেন বলুন? ভারতবর্ষের অনেক রাজ্যে প্রতিষ্ঠাদিবস আছে। যেগুলো যথাযথ মর্যাদায় পালন করা হয়। কিন্তু সেগুলির পিছনে একটা কারণ আছে। এই রাজ্যগুলোকে আইন করে বা সরকারি নির্দেশ দিয়ে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। : মমতা
  17. ১৯৪৭ সালের ২০ জুন পশ্চিমবঙ্গ প্রতিষ্ঠাও হয়নি। স্বাধীনতা ক্ষমতা হস্তান্তর, দেশভাগ গোটা ১৯৪৭ সাল জুড়ে। বহুস্তরে নানা উত্তপ্ত আলোচনা হচ্ছিল। ১৯৪৭ সালের ২০ জুন অবিভক্ত বাংলার বিধানসভায় কিছু আলোচনা হয়েছিল। কিন্তু সেদিন তো পশ্চিমবঙ্গের জন্ম হয়নি। তারপরও তো মাস দু’য়েক বাংলা অবিভক্ত ছিল। আমরা কেন্দ্রের এই এক তরফা আকস্মিক অনৈতিহাসিক বিভেদকামী সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানাই। : মমতা
  18. ইতিহাস দেখাচ্ছিলেন তো? স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় যারা কোনও পার্টই নেয়নি, যাদের কোনও ভূমিকাই ছিল না, তারা আজকে স্বাধীনতার ইতিহাস নিয়ে কথা বলছেন। এটা লজ্জাজনক, দুঃখজনক। গান্ধীজীর প্রাণ যাঁরা কেড়ে নিয়ে যাঁরা খুশি হয়েছিলেন, যাঁরা নেতাজিকে তোজোর দালাল বলে এসেছিলেন, তারা আজকে ইতিহাস শেখাবেন? আপনাদের মতো ভাল ইতিহাস জানি না। সত্যিই তো জানি না। আপনাদের মতো উগ্রত্ব রাজনীতি আমরা করি না। আমরা টেরোরিজম রাজনীতি করি না। : মমতা
  19. আমাদের বিরোধী দলনেতা বলেছেন, ১ বৈশাখ রাজ্যপালকে সই করতে দেবেন না। রাজ্যপাল সই না করলে আমাদের কিছু যায় আসে না। আমরা এটাকে পালন করব। আমি দেখব কার শক্তি বেশি। জনগণের নাকি রাজ্যপালের শক্তি বেশি? মনোনীত লোকের শক্তি বেশি? আমি এটা বলতে চাইতাম না যদি আপনারা রাজ্যপালের নাম না উল্লেখ করতেন। : মমতা
  20. অনেকে বলছেন নতুন করে প্রতিষ্ঠাদিবসের প্রয়োজন কী? এই টাকা নেই, ৮ হাজার স্কুল বন্ধ। মিথ্যা কথা এগুলো। ৮ হাজার স্কুল কোথা থেকে পেলেন বন্ধ? এখানে সমস্ত রাজনৈতিক স্পিচ দেওয়া হচ্ছে। আসল কথাটা কেউ বললেন না। আমরা যদি বিধানসভা থেকে কিছু না করি, সরকারে থেকে কিছু না করি, তাহলে ভুল দিনটাই থেকে যাবে। আর ভুল দিনটা থেকে গেলে আমাদের আগামী জেনারেশন একটা ভুল দিনের সাক্ষী হয়ে থাকবে। : মমতা
  21. রাজভবনেও রাজ্যপালকে আমরা অনুরোধ করেছিলাম এটা করবেন না। তার কারণ, এটার সঙ্গে বাংলার কোনও সম্পর্ক নেই। কোনও বাংলার মানুষ কোনও বিধ্বংসী দিনকে, ইতিহাসের সঙ্গে যা সাক্ষ্য নয় সেদিনকে গ্রহণ করবে না। একটা রাজনৈতিক দলের মাথাপ্রসূত একটা দিন এলো! সবকিছু যদি আপনারা চাপিয়ে দেন এভাবে, সবকিছু তো আমরা সহ্য করতে পারব না। সবকিছু চাপিয়ে দিলেও মনে রাখবেন…। : মমতা
  22. অনেকে বলেছেন, এত তাড়াহুড়োর প্রয়োজন কী? এতদিন কেন করেননি, ১২ বছর আছেন। তার উত্তরে জানাই, হ্যাঁ বন্ধু এতদিন করা হয়নি কারণ এতদিন ২০ জুন দিবসটাও পালন করা হয়নি। কেউ করেনি। কেউ জানত না। সরকারি নোটিফিকেশনে ছিল না। আজ ৪৭ বছরের পর ৭৫ বছর স্বাধীনতা দিবস আমরা উদযাপন করেছি, কেউ কোনওদিনও শুনিনি ২০ জুন বাংলার প্রতিষ্ঠা দিবস পালন হয়েছে। এই বছরই করেছে। এ বছর ভারত সরকার  এই নোটিফিকেশন দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদ করি। : মমতা
  23. স্যর (অধ্যক্ষ) এর আগে আমি যেমন নবান্নতে বিভিন্ন সাহিত্যিক, শিল্পী, খেলাধূলা জগৎ, সংবাদমাধ্যমকে নিয়ে একটা সভা করেছিলাম। আপনিও তেমন বিধানসভায় একটা কমিটি তৈরি করেছিলেন। তারাও তাদের মতামত দিয়েছিল : মমতা
  24. পশ্চিমবঙ্গ দিবস নিয়ে যে প্রস্তাব এবং রবীন্দ্রসঙ্গীত রাখিবন্ধনের সময় যে গান রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, বাংলার মাটি বাংলার জল। তাকে বাংলার রাষ্ট্রীয় সঙ্গীত হিসাবে করবার জন্য…। জনগণমন আমাদের রাষ্ট্রীয় সঙ্গীত। কিন্তু বাংলার সঙ্গীত, বাংলার একটা নিজস্ব সঙ্গীত থাকা উচিত, অন্যান্য রাজ্যেও আছে। সেটা করবার জন্য যে প্রস্তাব এনেছেন, সেটাকে সম্পূর্ণভাবে সমর্থন করছি। : মমতা
  25. ইতিহাস বদলানো যায় না। রাকেশ রোশন যেমন চাঁদে যাননি, ইন্দিরা গান্ধী চাঁদে যাননি। কাজি নজরুল ইসলাম মহাভারত লেখেননি। রবি ঠাকুর ৪১ সালে মারা গিয়েছেন। ৪৭-এ মারা যাননি। তাই এই ইতিহাসগুলি যেমন বদলানো যায় না। এটাও বদলাতে পারবেন না। ২০ জুন সব রাজভবনে, সব রাজ্যে ইতিমধ্যে পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালন হয়েছে। আমরা প্রধানমন্ত্রীকে লিখব যাতে জাতীয় স্তরে বাঙালি হিন্দুদের রক্ষা করার জন্য এই ২০ জুনকে পশ্চিমবঙ্গ দিবস হিসাবে ভারত সরকার পালন করে। : শুভেন্দু
  26. ২০ জুন পশ্চিমবঙ্গ দিবস প্রমাণিত সত্য। রেজলিউশন নিয়ে এর পরিবর্তন করতে পারবেন না। আমরা জানি এখানে আপনারা কী করবেন। ভোট করবেন। আমরা বিরুদ্ধে ভোট দেবো সেটাও আপনার উপরে। আপনি আবার ভয়েস ভোটও করিয়ে দিতে পারেন। আপনার উপরে। তার পর রাজভবনে যাচ্ছি দল বেধে। যাতে এই রেজলিউশনটায় রাজ্যপাল অনুমোদন না দেন। আজকেই যাব। : শুভেন্দু
  27. এই প্রস্তাবের পরিণতি হবে, বিএসএফের বিরুদ্ধে নেওয়া রেজুলেশনের মতো। এই প্রস্তাবের পরিণতি হবে, ইডি-সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে নেওয়া রেজুলেশনের মতো। সবাই জানে, ১৯৪৭-এর ২০ জুন (নথি তুলে ধরে) পশ্চিমবঙ্গ ভারতবর্ষে থাকার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এই দিনকে আপনি অস্বীকার করতে পারবেন না। এই রেকর্ড আপনি নষ্ট করতে পারবেন না। দিনটা গ্রহণ করতে আপত্তি কোথায়? : শুভেন্দু
  28. শুভেন্দু বলেন, আপনাদের শাসকদল যদি ২ কোটি ৮০ লক্ষের জনাদেশ পেয়ে থাকে। আমরাও ২ কোটি ২৮ লক্ষের জনাদেশ পেয়ে এখানে এসেছি। কারও দয়ার দানে আসিনি। এই প্রস্তাবকে আপনারা পাশ করাবেন। আপনাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে। এর পরিণতি হবে, বঙ্গ নামের মতো। এর পরিণতি হবে বিধান পরিষদের মতো। এই প্রস্তাবের পরিণতি হবে, মুখ্যমন্ত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য করার মতো।
  29. ২০ জুন রাজভবন পালন করেছেন। তাই কি বিরোধিতা করতেই হবে। আমার অনুরোধ সাংবিধানিক প্রধানের মতকে মেনে নিক রাজ্য সরকার।
  30. ১৬ অক্টোবরকে বেছে নেওয়া হোক। কারণ, বঙ্গভঙ্গর মতো ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট আছে। বিধানসভায় ১ ঘণ্টার আলোচনায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হঠকারিতা এবং ১২ বছর সময় লেগে গেল? এই বাংলা দিবস উদযাপন করলে কি চাকরি, ডিএ সব উদ্ধার হবে? : নওশাদ
  31. ১৬ অক্টোবর বাংলার প্রতিষ্ঠা দিবস রাখার প্রস্তাব নওশাদের। এই বাংলা দিবস উদযাপন করলে কি ডিএ মিলবে? বাংলার দিবস হলেই কি দুর্নীতি ঘুচে যাবে বলেন নওশাদ।
  32. শঙ্কর বলেন, শ্যামাপ্রসাদ উপলব্ধি করেছিলেন পূর্ব পাকিস্তানের কী অবস্থা হতে পারে ৫০ বছর পর। তাই তাঁর ঠিক করে যাওয়া দিন ২০ জুনকেই পশ্চিমবঙ্গ দিবস বলে মানি। এই তারিখকে দুঃখজনক ঘটনার স্মৃতি বলা হচ্ছে। ১ লা বৈশাখ কেন হবে?
  33. শুভেন্দুদের উদ্দেশে গেঞ্জি পরে আসা নিয়ে হাউসের রুল পড়ে শোনালেন স্পিকার। এরপর বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বক্তব্য রাখতে ওঠেন। পশ্চিমবঙ্গ দিবস ২০ জুন ছাড়া আর কিছুই হতে পারে না। ক্যালেন্ডারের প্রথম দিনের সঙ্গে রাজ্য প্রতিষ্ঠার কী সম্পর্ক?, প্রশ্ন শঙ্করের।
  34. শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় রেজুলেশন উত্থাপন করেছেন সভায়। বাংলা দিবস নিয়ে প্রস্তাব পড়েন প্রস্তাব পড়েন শোভনদেব। অধিবেশন কক্ষে মুখ্যমন্ত্রীও আছেন।
  35. অধ্যক্ষ শুভেন্দুকে বলেন, আপনি একজন দায়িত্ববান রাজনীতিক। দায়িত্ববান বিধায়ক।
  36. শুভেন্দু ও বিজেপি বিধায়কদের পোশাক নিয়ে বিধানসভার অধ্যক্ষ বিরোধী দলের কাছে আবেদন করেন, এই পোশাক পরিষদীয় ক্ষেত্রে ঠিক নয়। স্পিকার এ কথা বলতেই পাল্টা যুক্তি দেন শুভেন্দু। শুরু হয় হট্টগোল। প্রতিবাদ শুরু করে বিজেপি। অধ্যক্ষ বলেন, শুভেন্দুবাবু আপনার কাছে এটা প্রত্যাশিত নয়। অধ্যক্ষ বলেন, আপনাদের হয়ে যদি গেঞ্জি কথা বলে আলাদা বিষয়। এরপর হইচই থামে।