মমতার ‘চ্যালেঞ্জার’ চয়নে বৈঠকে বিজেপি, ক্ষোভ বাড়ছে কমিশনের সিদ্ধান্তে

যে কমিশনের ভূমিকা নিয়ে বিজেপি মাসচারেক আগেও ধন্যধন্য করছিল, সেই কমিশনই আজকের সিদ্ধান্তে তাদের 'চক্ষুশূল' হয়ে উঠেছে।

মমতার 'চ্যালেঞ্জার' চয়নে বৈঠকে বিজেপি, ক্ষোভ বাড়ছে কমিশনের সিদ্ধান্তে
ছবি-Twitter
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 04, 2021 | 9:08 PM

কলকাতা: দেশের মোট ৩২ টি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনের কথা রয়েছে। কিন্তু কমিশন শুধুমাত্র ভবানীপুরে উপনির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। কমিশনের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে রীতিমতো ক্ষোভে ফুঁসছে বঙ্গ বিজেপি। পদ্মশিবির যদিও জানিয়ে দিয়েছে, নিয়ম মেনে তারা ভবানীপুরের উপনির্বাচন এবং সামশেরগঞ্জ ও জঙ্গিপুরে ভোটে লড়বে। সেই মতো প্রার্থী বেছে নিতে বৈঠকেও বসা হচ্ছে। কিন্তু যে কমিশনের ভূমিকা নিয়ে বিজেপি মাসচারেক আগেও ধন্যধন্য করছিল, সেই কমিশনই আজকের সিদ্ধান্তে তাদের ‘চক্ষুশূল’ হয়ে উঠেছে। বঙ্গ বিজেপির ক্ষোভ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, যে কমিশনের বিরুদ্ধে আইনি পথে হাঁটার বিষয়ে চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কেন্দ্রে উপনির্বাচন ঘোষণা হওয়ায় ক্ষোভ যতই বাড়ুক, ভোটে তো লড়তেই হবে। তাই তিন কেন্দ্রে প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করতে আগামী সোম, মঙ্গলবার বৈঠকে বসছেন দিলীপ-শুভেন্দুরা। এমনটাই খবর বিজেপি সূত্রে। সেই বৈঠকে প্রত্যেক কেন্দ্র-পিছু একাধিক নাম নিয়ে আলোচনা করা হবে। তবে প্রার্থী কে হবে সেই নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বই। দিলীপরা শুধুই কেন্দ্র-পিছু ২ থেকে ৩ করে নাম পাঠাবে বলে জানা গিয়েছে। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, ভবানীপুর কেন্দ্রে প্রার্থী হিসেবে রুদ্রনীল ঘোষের নামই এগিয়ে রয়েছে। বিধানসভা ভোটেও তিনিই এই কেন্দ্রের প্রার্থী হয়েছিলেন। বাকি দুই কেন্দ্রে কাদের প্রার্থী করা যায় সেই নিয়ে এখনও ভাবনাচিন্তা চলছে।

যদিও গোটা দিন বিজেপির শীর্ষ নেতারা যে ভাষায় কমিশনের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন, তা একপ্রকার নজিরবিহীন। ভুলে গেলে চলবে না, এই বিজেপি নেতারাই ১০০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী এনে আট দফায় বিধানসভা ভোট করার জন্য নির্বাচন কমিশনের আকণ্ঠ প্রশংসা করেছিলেন। সেই নেতারাই কমিশনের আজকের সিদ্ধান্তে ‘শকড’। কারণ বিজেপি আগাগোড়াই উপনির্বাচনের বিরুদ্ধে ছিল। তাদের আপত্তি উড়িয়ে বাকি আসনগুলিতে উপনির্বাচন না করে শুধুমাত্র ভবানীপুরকে কী ভাবে বেছে নিল কমিশন? ভেবে কুল-কিনারা পাচ্ছেন না বিজেপি নেতারা। এই অবস্থায় শুধুমাত্র একটি আসনে বিধানসভা ভোট ঘোষণার কারণে কমিশনের বিরুদ্ধে আইনগত ভাবে কোনও পদক্ষেপ করা যায় কি না, সেই ভাবনাও ভাবা শুরু করেছে গেরুয়া শিবির।

বলাই বাহুল্য, বঙ্গ বিজেপি চাইলেই নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আইনি পথে হাঁটতে পারবে না। এর জন্য তাদের সবার আগে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অনুমোদন নিতে হবে। নয়তো কোনও ভাবেই কিছু করা সম্ভব নয়। সূত্রের খবর, এই নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করা হতে পারে। সেই দরজাও বিজেপি খোলা রাখতে চাইছে। তবে আগামী ৬ এবং ৭ সেপ্টেম্বর আগে বৈঠকে বসে প্রার্থীদের সম্পর্কে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কমিশনের বিরুদ্ধে আইনি রাস্তায় হাঁটা যায় নাকি, সেই কথা পরে ভাবা হবে।

প্রসঙ্গত, ভবানীপুরে উপনির্বাচন করা নিয়ে কমিশনের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন এ দিন দিলীপ ঘোষ বলেন, “আমরা চিন্তায় আছি। হঠাৎ ভবানীপুরেই কেন? তাহলে বাকি কেন্দ্রে কেন নয়?” রাজ্যের সহ-সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “বিজেপি চায় প্রত্যেক নির্বাচন। সে পৌর নির্বাচন হোক আর বিধানসভা ভোট। কিন্তু নির্বাচন কমিশন যেভাবে বেছেবেছে নির্বাচন ঘোষণা করল, তা তামাশা ছাড়া কিছু নয়।” অন্যদিকে শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য়, “কমিশন অবশ্যই প্রভাবিত হয়েছে আমরা্ জানতে চাইব কেন এটা হয়েছে।”

আরও পড়ুন: ‘যাক কমিশনের অপবাদ ঘুচল!’ উপনির্বাচন ঘোষণা নিয়ে কমিশনের বিরোধিতা করছে না বিজেপি