Mamata Banerjee: প্রথম আদিবাসী রাষ্ট্রপতি পেতে পারে ভারত, তাই কি দ্রৌপদীতে সুর ‘নরম’ মমতার?

Mamata on Draupadi: যদিও যশোবন্ত সিনহাকে বিরোধী দলগুলির থেকে বেছে নেওয়া প্রসঙ্গে মমতা বলেন, "আমি নিজে থেকে (প্রার্থী) প্রত্যাহার করতে পারব না। বিরোধীরা সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সবাই না বললে...আমার একা ফিরে আসা সম্ভব নয়।"

Mamata Banerjee: প্রথম আদিবাসী রাষ্ট্রপতি পেতে পারে ভারত, তাই কি দ্রৌপদীতে সুর 'নরম' মমতার?
দ্রৌপদীতে সুর নরম মমতার
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 01, 2022 | 6:59 PM

কলকাতা : ইসকনের রথ উৎসব চলছিল। প্রধান অতিথি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেখানেই রাইসিনার রেস নিয়ে সবাইকে অবাক করে দিয়ে এক মন্তব্য করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য এনডিএ প্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মুকে নিয়ে কিছুটা সুর ‘নরম’ করলেন মমতা। বললেন, “মহিলা প্রার্থী হলে আমি সবসময় রাজি।” এমনকী বিজেপি যদি আগে থেকে জানাত একজন আদিবাসী মহিলাকে প্রার্থী করা হচ্ছে, তাহলে বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হত, এমন বার্তাও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই কথাগুলি যখন মুখ্যমন্ত্রী বলছিলেন, তখন দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এপিজে আবদুল কালামের প্রসঙ্গও টেনে আনেন তিনি। যদিও যশোবন্ত সিনহাকে বিরোধী দলগুলির থেকে বেছে নেওয়া প্রসঙ্গে মমতা বলেন, “আমি নিজে থেকে (প্রার্থী) প্রত্যাহার করতে পারব না। বিরোধীরা সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সবাই না বললে…আমার একা ফিরে আসা সম্ভব নয়।”

মমতার এই মন্তব্যের পরই কড়া ভাষায় সমালোচনা করেছেন কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী। তৃণমূল-বিজেপির আঁতাত উস্কে দিয়ে তিনি বলেছেন, “নরেন্দ্র মোদীর থেকে হয়ত কোনও চাপ এসেছে। হয়ত মোদী দিদিকে বুঝিয়েছেন, এতে আপনার ভাল হবে। না হলে দিদির এই পাল্টিবাজি করার তো কোনও মানে হয় না। সব জেনে শুনে তিনি প্রার্থী দিয়েছিলেন।” বিজেপির তরফে আবার মমতার এই মন্তব্যের পর কিছুটা হালকা সুরই শোনা গিয়েছে। বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলছেন, “বিজেমূল তত্ত্ব আনতেই পারেন কেউ রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মাটির টান বোঝেন। তাই বলেছেন। রাজ্যে আদিবাসী ভোটের কথা তিনি বোঝেন।”

মমতার এই মন্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছেন রাজ্য রাজনীতির পর্যবেক্ষকদের একাংশও। অধ্যাপক তথা বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক উদয়ন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, মুখ্যমন্ত্রীর এই কথা খুব একটা অস্বাভাবিক নয়। তাঁর কথায়, “প্রার্থী হিসেবে দ্রৌপদী মুর্মু অত্যন্ত যোগ্য প্রার্থী। যদি তিনি নির্বাচিত হন, তাহলে প্রথম আদিবাসী হিসেবে তিনি দেশের রাষ্ট্রপতি হবেন। বিষয়টি যথেষ্ট গর্বের। আর শুধু তাই নয়, রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী যিনি হচ্ছেন, তাঁর নির্বাচনের প্রক্রিয়া থাকলেও, সর্বসম্মতিক্রমে প্রার্থী দেওয়াটাই ভাল। তাছাড়া, রাষ্ট্রপতির রাজনৈতিক পরিচয় গুরুত্বপূর্ণ নয়। তিনি দলীয় রাজনীতির ঊর্ধ্বে এবং রাষ্ট্রের সংবিধানের রক্ষাকর্তা। দেশের সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে তাঁকে গণ্য করা হয়। সে ক্ষেত্রে স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তিতে যদি সর্বসম্মতিক্রমে রাষ্ট্রপতি প্রার্থী দেওয়া যায়, তাহলে তা গর্বের বিষয়। দ্রৌপদী মুর্মু অত্যন্ত ভাল প্রার্থী।”

কিন্তু এখানে প্রশ্ন উঠছে, কেন এতদিন পর এসে সুর নরম করলেন মমতা? প্রার্থী ঘোষণা হয়ে গিয়েছে অনেকদিন আগেই। তাহলে এতদিন পর কেন? রাজনৈতিক বিশ্লেষক উদয়ন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, “এখানে খেয়াল রাখতে হবে, প্রার্থী হিসেবে দ্রৌপদী মুর্মুর নাম ঘোষণার আগে যশবন্ত সিংয়ের নাম ঘোষণা হয়েছে। বিরোধীরা আগে প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছিল। সেই জায়গায় বিজেপির সুযোগ ছিল, সর্বসম্মত প্রার্থী হিসেবে যশবন্ত সিনহাকে সমর্থন করার। তবে তা বিজেপি করেনি। তারা নির্বাচনে লড়ার জন্য দ্রৌপদী মুর্মুর নাম ঘোষণা করেছে। এই ক্ষেত্রে যদি তিনি জয়ী হন, তাহলে তিনিই দেশের প্রথম আদিবাসী রাষ্ট্রপতি হতে চলেছেন। এই বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। এটি ভারতের একটি গৌরবোজ্জ্বল মুহূর্ত হয়ে উঠতে পারে। সেইদিক থেকে মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যকে স্বাগত।”