হাঁটু ভেঙে দেওয়ার হুঁশিয়ারি, পাল্টা নাম না করে উদয়নকে কোচবিহার থেকে বহিষ্কারের হুমকি KLO প্রধানের
KLO: এ দিনের অডিয়ো বার্তায় ফের একবার কেএলও চেয়ারম্যান সার্বভৌমত্বর দাবি ছেড়ে পৃথক কামতাপুর রাজ্যের দাবিকে সামনে আনেন এবং মোদী সরকারের প্রশংসা শোনা যায় তাঁর মুখে।
সিজার মণ্ডল
কিছুদিন আগেই উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ বার্তা দিয়েছিলেন, রক্ত দিয়ে হলেও উত্তরবঙ্গ ভাগ আটকাবেন। এবার নাম না করে উদয়ন গুহকে হুঁশিয়ারি কেএলও প্রধান জীবন সিংহের। নাম না করে দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহকে কোচবিহার থেকে বহিষ্কারের হুমকি দিলেন কেএলও চেয়ারম্যান জীবন সিংহ। মায়ানমারের গোপন আস্তানা থেকে পাঠানো এক অডিয়ো বার্তায় কামতাপুর লিবারেশন অর্গানাইজেশনের (KLO) প্রধান জীবন উদয়ন গুহকে ‘কলকাতার সরকারের দালাল’ বলে সম্বোধন করেন। একইসঙ্গে কামতাপুর থেকে বহিষ্কারের হুমকিও দেন জীবন।
কয়েক দিন আগেই দিনহাটার একটি কর্মিসভায় তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহ বিজেপি নেতৃত্বের একাংশের উত্তরবঙ্গকে নিয়ে আলাদা রাজ্যের দাবি তীব্র বিরোধিতা করে বলেন, “প্রয়োজনে রক্ত দিয়ে বাংলা ভাগ রুখব। বিজেপি নেতাদের মাথায় রাখতে হবে আমাদের রক্ত ঝরলে অন্যের রক্তও ঝরবে।” উদয়ন সেদিন কোচবিহারের বিজেপি সভানেত্রী মালতি রাভার পৃথক উত্তরবঙ্গের দাবিকে সামনে রেখে পদযাত্রাকে নিয়েও কটাক্ষ করেন।
রীতিতো হুমকির সুরে উদয়ন হাঁটু ভেঙে দেওয়ার কথা বলেন। রবিবার জীবনের পাঠানো অডিয়ো বার্তায় সেই উদয়ন গুহর হুমকির কথা উল্লেখ করা হয়। এ দিন জীবন সিংহ উদয়ন গুহর নাম না করলেও, সেই হুমকির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তৃণমূল সরকারকে বহিরাগতর সরকার বলে দাবি করেন। কোচবিহারের বুকে দাঁড়িয়ে যাঁরা পৃথক কামতাপুর রাজ্যের দাবির বিরোধিতা করে হুমকি দিচ্ছে তাঁদের কোচবিহার থেকে বহিষ্কারের ডাকও দেন জীবন সিংহ।
এ দিনের অডিয়ো বার্তায় ফের একবার কেএলও চেয়ারম্যান সার্বভৌমত্বর দাবি ছেড়ে পৃথক কামতাপুর রাজ্যের দাবিকে সামনে আনেন এবং মোদী সরকারের প্রশংসা শোনা যায় তাঁর মুখে। উল্লেখ্য, অসমের বিজেপি সরকার কেএলও চেয়ারম্যানকে ইতিমধ্যেই শান্তি আলোচনায় যোগ দেওয়ার আহ্বান দিয়েছে। ইতিমধ্যেই জীবন সিংহর অনুমোদিত কমিটির সঙ্গে অসম সরকারের প্রাথমিক কথাবার্তাও এগিয়েছে বলেই সূত্রের খবর। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের একাংশের দাবি, আলোচনা যে দিকে গড়াচ্ছে তাতে কেএলও প্রধানের মূলস্রোতে ফিরে আসার সম্ভাবনাও জোরাল হচ্ছে।
তবে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের যে অংশ এই শান্তি আলোচনা প্রক্রিয়াকে তরান্বিত করার চেষ্টা করছেন, তাঁদের একাংশের দাবি, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে কোনওভাবেই আলোচনায় বসতে রাজি নন জীবন। যেহেতু কেএলও পশ্চিমবঙ্গ এবং অসম দুই রাজ্যেই সক্রিয়, তাই শান্তি আলোচনায় বাংলা সরকার না থাকলে তা কতটা সফল হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে গোয়েন্দাদের। তার মধ্যেই কেএলও-র স্বঘোষিত সেনাপতি কৈলাশ কোচ সপরিবারে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে আত্মসমর্পণ করায় বাংলা সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক আরও তিক্ত হয়েছে কেএলও-র, এমনটাই ইঙ্গিত গোয়েন্দাদের। গোয়েন্দাদের ইঙ্গিত কেএলও-র সঙ্গে শান্তি আলোচনা অনেকটাই ধাক্কা খেয়েছে। জীবনের সাম্প্রতিক অডিও বার্তা তারই ইঙ্গিত দিচ্ছে। তবে জীবন যেভাবে ফের বিজেপি নেতৃত্বর পাশে দাঁড়িয়ে উদয়নকে পাল্টা হুমকি দিলেন, তাতে অন্য সমীকরণের ইঙ্গিত রয়েছে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা।