টিকা সঙ্কট অতীত, এবার সিরিঞ্জের বিপুল ঘাটতি বঙ্গে! চিঠি গেল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকে

দ্রুত সমস্যার সমাধান না হলে টিকাকরণ প্রক্রিয়া ব্যাহত হওয়া একপ্রকার অবশ্যম্ভাবী।

টিকা সঙ্কট অতীত, এবার সিরিঞ্জের বিপুল ঘাটতি বঙ্গে! চিঠি গেল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকে
প্রতীকী ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 16, 2021 | 9:09 PM

কলকাতা: রাজ্যে টিকা সঙ্কট নিয়ে ওয়াকিবহাল বা ভুক্তভুগী নন, এমন মানুষ বর্তমানে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। তবে ভ্যাকসিনের বিপুল আকালের মাঝেই এ বার সিরিঞ্জের ঘাটতি দেখা দিয়েছে রাজ্যে। স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে খবর, রাজ্যে এই মুহূর্তে প্রায় ২০ লক্ষ সিরিঞ্জের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। দ্রুত সমস্যার সমাধান না হলে টিকাকরণ প্রক্রিয়া ব্যাহত হওয়া একপ্রকার অবশ্যম্ভাবী। এই অবস্থায় সিরিঞ্জ চেয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকে রাজ্য সরকার চিঠি দিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। স্বাস্থ্যভবনের পক্ষ থেকে কেন্দ্রকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আপাতকালীন ভিত্তিতে এই ২০ লক্ষ সিরিঞ্জ রাজ্যে না পাঠালে টিকাকরণ প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে।

কিন্তু কেন এই ঘাটতি? এই কারণ হিসেবে মূলত দু’টি ব্যাখ্যা দিয়েছেন স্বাস্থ্য ভবনের আধিকারিকরা। ঘটনা হচ্ছে, কেন্দ্রের তরফে যে পরিমাণ ভ্যাকসিন পাঠানো হয়, তার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে সম-পরিমাণ সিরিঞ্জও আসে রাজ্যে। কেন্দ্র ইতিমধ্যেই রাজ্যে ২ কোটি ৯৮ লক্ষ ডোজ় ভ্যাকসিন পাঠিয়েছে, সেই পরিমাণ সিরিঞ্জও এসেছে। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না, রাজ্য সরকার নিজের টাকায় প্রায় সাড়ে ১৭ লক্ষ ডোজ় কোভিড ভ্যাকসিন কিনেছিল। কিন্তু রাজ্যের তরফে সম-সংখ্যক সিরিঞ্জ কেনা হয়নি। স্বাস্থ্যভবন সূত্রে খবর, এই ১৭ লক্ষ ডোজ়ের বিপরীতে ১০ লক্ষ সিরিঞ্জ কিনেছিল রাজ্য। যা সিরিঞ্জের ঘাটতি দেখা দেওয়ার অন্যতম কারণ।

এ বাদে দ্বিতীয় কারণটি হল, কোভিশিল্ডের ভায়ালে হিসেবের তারতম্য। ইতিমধ্যেই রাজ্যে ২ কোটি ৫৯ লক্ষ কোভিশিল্ডের ডোজ় প্রয়োগ করা হয়েছে। স্বাস্থ্যভবনের দাবি, কেন্দ্রের পক্ষ থেকে কোভিশিল্ডের ভায়াল-পিছু ১০ টি ডোজ় হিসেব করা হয়। সেই মতো ভায়াল-পিছু ১০ টি সিরিঞ্জ পাঠায় কেন্দ্র। কিন্তু বাস্তবে অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, কোভিশিল্ডের একটি ভায়াল থেকে ১১ টি টিকা দেওয়া সম্ভব। যদিও খাতায় কলমে ভায়াল পিছু ১০ জনই টিকা পাচ্ছেন। ফলে ভায়াল পিছু যে একজন অতিরিক্ত ব্যক্তি টিকা পাচ্ছেন, সেই অতিরিক্ত একটি করে সিরিঞ্জ কেন্দ্রের পক্ষ থেকে পাওয়া যায়নি।

টিকা নষ্ট হতে পারে, মূলত এই ভাবনা থেকেই প্রতি ভায়ালে অতিরিক্ত পরিমাণ ভ্যাকসিন ভরে দেওয়া হয়। কিন্তু এ রাজ্যে টিকা নষ্টের পরিমাণ প্রায় নেই বললেই চলে। উল্টে অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় টিকা অনেক বেশি সাশ্রয় করেছে পশ্চিমবঙ্গ। যে কারণে এই দুই সমস্যার জেরে রাজ্যে প্রায় ২০ লক্ষ সিরিঞ্জের আকাল দেখা দিয়েছে।

সমস্যা বাড়িয়েছে এই বিশেষ ধরনের সিরিঞ্জের অপ্রতুলতা। করোনা টিকা দেওয়ার জন্য যে সিরিঞ্জ ব্যবহার করা হয়, তা খোলা বাজারে পাওয়া যায় না। বিশেষভাবে নির্মিত এই সিরিঞ্জ কেবল কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকেই পাঠানো হয় রাজ্যগুলিকে। ফলে টিকা বাঁচাতে গিয়ে এবং স্বতঃপ্রণোদিতভাবে টিকা কিনে আপাতত সিরিঞ্জর ঘাটতির সম্মুখীন হয়েছে রাজ্য সরকার। খুব শীঘ্রই যদি কেন্দ্রের পক্ষ থেকে এই ঘাটতি না মেটানো হয়, তবে নতুন করে টিকাকরণ প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে বলেই আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য ভবনের কর্তারা। আরও পড়ুন: অফিসে হাজিরা থেকে মিউজিয়াম ও বিনোদন পার্ক, আরও একগুচ্ছ ছাড় ঘোষণা নবান্নের