Santanu Banerjee: শান্তনুর ‘কেতাবাজি’ পছন্দ ছিল না দলের লোকেরই , বোমা ফাটালেন বলাগড়ের ব্লক তৃণমূল নেতা
ED: ইডি সূত্রে খবর, শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় ২০০৫ সালেও একজন সামান্য ব্যবসায়ী ছিলেন। সেখান থেকে হঠাৎ করেই কয়েক বছরের মধ্যে আর্থিকভাবে ফুলে ফেঁপে ওঠেন তিনি।
হুগলি: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় (Santanu Banerjee)। যিনি হুগলি জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ। শান্তনু গ্রেফতার হতেই উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। এই শান্তনুর জীবনযাত্রা নিয়ে নাকি দলকে বিড়ম্বনা পড়তে হত, এমনও বলছেন বলাগড় ব্লকের নেতারা। শান্তনুর আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের সঙ্গতি ছিল না, তাই কথা শুনতে হতো। শান্তনু না থাকায় দল চাঙ্গা হবে, বলছেন তৃণমূল বলাগড় ব্লক নেতৃত্ব। বলাগড় ব্লকের তৃণমূল সহ সভাপতি তপন দাস দলের যুব নেতা গ্রেফতার প্রসঙ্গে বলেন, শান্তনুর লাইফস্টাইলের জন্য দলকে বিড়ম্বনায় পড়তে হতো। একজন বিদ্যুৎ দফতরের সাধারণ কর্মী হয়েও তাঁর জীবনযাপন ছিল রাজকীয়। গাড়ি, বাড়ি, রেস্তোরাঁ, রিসর্ট, হোমস্টে, জমি জায়গা, ফ্ল্যাট, এত কিছু কীভাবে এই চাকরিতে করা সম্ভব তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বলাগড়ের বিরোধী বিজেপি থেকে সাধারণ মানুষও। বিরোধীরা তো প্রশ্ন তুলবেই, তবে দলের অন্দরেও শান্তনুকে নিয়ে প্রশ্ন ওঠা সত্যিই তাৎপর্যপূর্ণ। তৃণমূল সহ সভাপতি তপন দাস একজন শিক্ষক। তিনি বলেন, “আমি যদি ১ লাখ টাকা বেতন পাই আর ১০ লাখ টাকার গাড়ি চড়ি, আমি যদি মার্সিডিজ চড়ি, লোকে কথা বলবেই।”
এই তপন দাস ২০১৬ সালে হুগলি জেলায় টেটের ইন্টারভিউ বোর্ডে ছিলেন। তখন চাকরির ক্ষেত্রে কোনও দুর্নীতি হয়নি বলেই দাবি করেন তিনি। তবে তারপর কী হয়েছে তা তিনি জানেন না। একইসঙ্গে তপন দাস বলেন, এই মুহুর্তে শান্তনু দলের কোনও পদে নেই। তাই তাঁকে বহিষ্কার বা সাসপেন্ড করা হবে কি না তা নিয়ে ব্লক নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত নেওয়ার এক্তিয়ার আছে কি না সে বিষয়ে আলোচনা হবে।
ইডি সূত্রে খবর, শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় ২০০৫ সালেও একজন সামান্য ব্যবসায়ী ছিলেন। সেখান থেকে হঠাৎ করেই কয়েক বছরের মধ্যে আর্থিকভাবে ফুলে ফেঁপে ওঠেন তিনি। মূলত ২০১৫ সালের পর থেকে শান্তনুর ১০-১৫ কোটি টাকার সম্পত্তি তৈরি হয়েছে বলে জানতে পারেন তদন্তকারীরা। ২-৩টি ধাবা, প্রচুর জমি এবং বেশ কয়েকটি বাড়িরও খোঁজ মিলেছে বলে সূত্রের খবর। যার বেশিরভাগই হুগলি জেলায়। বাড়িগুলি প্রায় অধিকাংশ নদীতীরবর্তী এলাকায়। আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতে এসেছে ইডির। সূত্রের খবর, শান্তনুর নিজের নামে, স্ত্রীর নামে এবং কয়েকজন কর্মচারীর নামেও সম্পত্তির হদিশ পেয়েছেন তদন্তকারীরা। এছাড়াও শান্তনুর ৩-৪টি সংস্থারও হদিশ মিলেছে।
শনিবার শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে আদালত থেকে নিয়ে আসা হয় সল্টলেকের ইডির দফতরে। সেখানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে শান্তনু বলেন, তাপস মণ্ডলকে তিনি চেনেন না। কুন্তল ‘ভাইয়ের মতো’। তবে টাকা তিনি নেননি বলেই এদিন বারবার দাবি করেন সংবাদমাধ্যমের সামনে।